• আজকের পত্রিকা
  • ই-পেপার
  • আর্কাইভ
  • কনভার্টার
  • অ্যাপস
  • দখল, দূষণ ও নাব্য সংকট বিলীনের পথে মারিখালী! 

     বার্তা কক্ষ 
    26th Dec 2022 7:29 am  |  অনলাইন সংস্করণ

    জানা যায়, এক সময়ের খরস্রোতা এ নদ উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নের কাইকারটেক হাটখ্যাত বাজারের পাশ দিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে শুরু হয়ে শম্ভুপুরা ও পিরোজপুর ইউনিয়নের ওপর দিয়ে সোনারগাঁ পৌরসভার উদ্ধবগঞ্জ হয়ে বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের লঞ্চঘাট এলাকায় মেঘনা নদীতে মিশেছে। যার ফলে চারটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার মানুষ পুরোপুরি নির্ভরশীল। এই নদের বুক চিরেই বয়ে গিয়েছিল পৌরসভার বিস্তৃত এলাকাজুড়ে প্রাচীন আমলের ঐতিহ্যবাহী পঙ্ক্ষীরাজ খাল। ফলে উপজেলার চারটি ইউনিয়ন ও পৌরসভার বিভিন্ন মহল্লার বৃষ্টির পানি নিষ্কাশিত হয় এ নদে। কিন্তু আজ এ নদটি অস্তিত্ব সোনারগাঁয়ের মানচিত্রে নামেমাত্র রয়েছে, বেশিরভাগ অংশই প্রায় দখল ও দূষণে নিশ্চিহ্ন।

    উপজেলার এ নদ দিয়ে একসময় ব্যাপক যান চলাচল ছিল। নদী পথে বিভিন্ন স্থান থেকে মালপত্র আমদানি-রপ্তানি করা হতো। কয়েক বছর আগে বর্ষাকালে যান চলাচল দেখা গেলেও, এখন দেখা যাচ্ছে উল্টো চিত্র। বর্তমানে মারিখালী (মেনিখালী) নদের বুকে কচুরিপানার স্তূপ। নেই আগের সেই বিশাল জলারাশি। স্রোতস্বিনী এ নদের সেই জৌলুস আর নেই। নেই তার তর্জন-গর্জন। বিভিন্ন স্থানে দখল-দূষণ আর নাব্য সংকটে বিলীনের পথে ঐতিহ্যবাহী এ নদ।

    অনুসন্ধানী তথ্যসূত্র থেকে জানা যায়, ৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও গড়ে ৪২ মিটার প্রস্থের সর্পালাকার এ নদটির বিভিন্ন স্থান মেঘনার বৈদ্যেরবাজার থেকে শুরু হওয়ায় এতে পলি জমায় এটি নাব্য হারিয়েছে। নদটির ওপর দিয়ে যাতায়াতের সুব্যবস্থা করার জন্য বিভিন্ন স্থানে সওজ এবং এলজিইডি কর্তৃক ছয়টি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু নদটিতে নির্মিত পাঁচটি সেতুই পর্যাপ্ত উচ্চতায় নির্মাণ না করায় বর্ষাকালে নদটিতে পানি বৃদ্ধি পেলে মালবাহী ও যাত্রীবাহী লঞ্চ-স্টিমার যেতে পারে না। এদিকে এ নদে একসময় বিভিন্ন প্রজাতির মিঠা পানির মাছের বসবাস ছিল। নদের পানি ব্যবহার হতো কৃষি কাজে। বর্তমানে কলকারখানার বিষাক্ত রাসায়নিক বর্জ্যে নষ্ট হচ্ছে এ নদের পানি। প্রতিনিয়ত বাড়ছে দূষণ। মারিখালীর স্বচ্ছ পানি এখন আলকাতরার মতো কালো রং ধারণ করেছে। কলকারখানার রাসায়নিক বর্জ্য ও বাজারের পরিত্যক্ত আবর্জনা ময়লা প্রতিনিয়ত মিশছে এ নদে। যার কারণে চরম বিপর্যয়ের আছে উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের জিয়ানগর, ভবনাথপুর, বিরেশেরগাঁও, রতনপুর, ভাটিবন্দর, মরিচাকান্দী, জৈনপুর, হাবিবপুর, পিরোজপুর, কাদিরনগর, দুধঘাটা, মঙ্গলেরগাঁও, শম্ভুপুরা ইউনিয়নের কাজিরগাঁও, দুর্গাপ্রসাদ, চৌধুরীগাঁও, ময়নাকান্দী, টেকপাড়া, মুগারচর ও মোগরাপাড়া ইউনিয়নের কাবিলগঞ্জ, আলাবদী, নালআলাবদী, ভিন্নিপাড়া, ঋষিপাড়া, কাবিলগঞ্জ, দমদমা, খুলিয়াপাড়াসহ কমপক্ষে ৩০টি গ্রামের অর্ধলক্ষাধিক বাসিন্দা। প্রতিনিয়ত পানিবাহিত নানা রোগে তারা আক্রান্ত হচ্ছে। উপজেলার বৈদ্যেরবাজারের মাছঘাট এলাকায় স্থানীয়দের ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি, জনপদের সড়ক অবৈধ দখলের পাশাপাশি, মারিখালী নদীর প্রবেশমুখটিও বালু ফেলে প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে একটি প্রতিষ্ঠান। কাঠ ব্যবসায়ীরা গাছের গুঁড়ি ফেলে নদী দখল করে রেখেছেন। একই সঙ্গে নদের তীর ঘেঁষে স্থানীয় প্রভাবশালীরা বহুতল ভবন এবং ব্যবসায়ীদের অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করে নদীটিকে প্রায় দখল করে নিয়েছে।

    সোনারগাঁ পৌরসভার সাহাপুর কাঠপট্টি এলাকায় শহিদুল ইসলাম শহিদ মারিখালী নদে সিমেন্টের খুঁটি দিয়ে দখল করে রেখেছেন। স্থানীয় প্রশাসন এ বিষয়ে একটি নোটিশ করেই তাদের দায়িত্ব শেষ করে দিচ্ছে। উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার কোনো উদ্যোগ নেই বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

    অভিযুক্ত শহিদুল ইসলাম শহিদ খুঁটি দিয়ে নদের দখলের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমার নিজস্ব জায়গায় খুঁটি দিয়েছি। নদীর জায়গা নদীর মধ্যে রয়েছে।

    পিরোজপুর ইউনিয়নের পিরোজপুর গ্রামের কৃষক আবদুর রশিদ বলেন, মারিখালী নদের পানি দিয়ে ফসল ফলাতাম; কিন্তু নদের পানি কলকারখানার বর্জ্যে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এবং প্রভাবশালীদের দখলে চলে যাওয়ায় সে ব্যবস্থা এখন আর নেই।

    পৌরসভার বাসিন্দা আনিসুর রহমান বলেন, এ নদীটি কৃষি, শিল্প ও এলাকার পানি নিষ্কাশনসহ নানা কাজে ব্যবহৃত হয়। দখল, দূষণের কারণে নাব্য হারানো এ নদে ফের দখলমুক্ত করে খনন না করলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে নদটি বিলীন হয়ে যাবে। এ ছাড়া নদের দুই তীরে বাড়িঘরসহ বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। এসব অবৈধ স্থাপনা নির্মাণে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের হাত রয়েছে। দ্রুত যদি এ নদটি পুনরুদ্ধার না করা হয়, তাহলে আমাদের মতো লক্ষাধিক সাধারণ মানুষের জীবনে বিপর্যয় নেমে আসবে।

    নারায়ণগঞ্জ বিআইডব্লিউটিএর উপপরিচালক মোহাম্মদ মোবারক হোসেন জানান, স্থানীয় সাংসদের ডিও লেটারের পরিপ্রেক্ষিতে কিছুদিন আগে সার্ভে করে নিয়ে গেছেন। ড্রেজিং বিভাগের অনুমতি পেলেই মারিখালী নদ খননের মাধ্যমে ফের দখলমুক্ত করে নাব্য ফিরে আনা হবে।

    সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেজওয়ান-উল-ইসলাম জানান, শিগগির মারিখালী নদ দখলকারীদের একটি তালিকা তৈরি করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

    নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁ) আসনের সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা বলেন, মারিখালী নদের নাব্য ফিরিয়ে আনার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে ডিও লেটার দেওয়া হয়েছে। আশা রাখি শিগগিরই খনন কাজ শুরু হবে।

    Array
    We use all content from others website just for demo purpose. We suggest to remove all content after building your demo website. And Dont copy our content without our permission.
    আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
    এই বিভাগের আরও খবর
     
    Jugantor Logo
    ফজর ৫:০৫
    জোহর ১১:৪৬
    আসর ৪:০৮
    মাগরিব ৫:১১
    ইশা ৬:২৬
    সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১

    আর্কাইভ

    December 2022
    M T W T F S S
     1234
    567891011
    12131415161718
    19202122232425
    262728293031