নোবিপ্রবি প্রতিনিধি
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি) ক্যাম্পাসে পরিবহন সংকট যেন প্রতিদিনের বাস্তবতায় পরিণত হয়েছে। পরিবহন সেবা নিয়ে শিক্ষার্থীদের অসন্তোষ দিন দিন বাড়ছে। নানা অনিয়ম, অচল বাস, বাসের স্বল্পতা এবং বাসে শিক্ষার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় শিক্ষার্থীরা প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন সেবায় দীর্ঘদিন ধরে নানা অভিযোগ থাকলেও, দৃশ্যমান কোনো উন্নয়ন চোখে পড়ছে না বলে দাবি করেন শিক্ষার্থীরা। অধিকাংশ সময় বাসে অতিরিক্ত ভিড় থাকে। অনেক শিক্ষার্থী বাসে ওঠতে না পেরে বিকল্প যানবাহনের ওপর নির্ভর করতে বাধ্য হন।
নির্ধারিত স্টপেজে দাঁড়িয়ে থাকলেও বাস থামে না। বাস থামানোর জন্য হাত নেড়ে থামানোর চেষ্টা করলেও ড্রাইভার ও হেলপার অনেক সময় না দেখার ভান করেন ও বাস চালিয়ে নিয়ে যান। এমনকি বাসে ফাঁকা জায়গা থাকা সত্ত্বেও অনেক সময় শিক্ষার্থীদের তোলা হয় না।
পরিবহন সংকটে শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থী ওসমান বলেন,’প্রায় প্রতিদিন বাস নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়। আমরা নির্দিষ্ট জায়গায় দাঁড়িয়ে বাস থামানোর জন্য হাত নাড়ি, কিন্তু বাস থামে না। ড্রাইভার ও হেলপার দেখে না দেখার ভান করে চলে যায়। বাস ফাঁকা থাকলেও থামে না—এটা খুবই অপমানজনক এবং হতাশাজনক। অনেক শিক্ষার্থী বাধ্য হয়ে রিকশা বা অটো নিয়ে ক্যাম্পাসে আসতে হয়, এতে সময় ও খরচ বেড়ে যায়। অনেক সময় ক্লাস মিস হয়ে যায়। এমনকি বাসে উঠলেও বসার জায়গা না পেয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এছাড়া অনেক বাস নিয়মিত চলে না, হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়। এতে আমাদের সময় নষ্ট হচ্ছে।’
ইএসএসডিএম বিভাগের শিক্ষার্থী সাকিল জানান,
‘বাস থামানো ও লোকাল যাত্রী তোলা বড় সমস্যা। অধিকাংশ সময় বাস নির্দিষ্ট পয়েন্টে থামে না। বাসের স্বল্পতার কারণে আমরা নিয়মিত জায়গা পাই না, দাঁড়িয়ে যেতে হয়। এতে রাগ ও হতাশা দুটোই হয়। ড্রাইভার ও হেলপার অনেক সময় আমাদের সঙ্গে উচ্চস্বরে কথা বলেন, যা অপমানজনক। আমরা তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করি না, তাই এসব নিয়ে বিরক্ত।’
পরিবহন পুলের উপদেষ্টা সহযোগী অধ্যাপক কাউসার হোসেন বলেন,
“১৯ মে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন দেখে জানতে পারি যে, শিক্ষার্থীরা বাস থামানোর জন্য হাত নাড়লেও বাস থামে না। বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গেই বিআরটিসি পুলের ম্যানেজার ও সংশ্লিষ্ট ড্রাইভারদের সঙ্গে কথা বলেছি। শিক্ষার্থীদের অনুরোধ, এ ধরনের ঘটনা ঘটলে আমাদের জানাতে হবে, আমরা ব্যবস্থা নেব।
তিনি আরও জানান,’শিক্ষার্থীরা যেখান থেকে বাসে উঠতে চাইবে, সেখান থেকেই বাস থামিয়ে তাদের তুলতে হবে। বাসে লোকাল যাত্রী তোলার প্রমাণ পাওয়া গেলে ওই দিনের ভাড়া বাতিল করা হবে। ড্রাইভার ও হেলপারদের খারাপ আচরণের বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। বাস না থামলে শিক্ষার্থীরা গাড়ির নাম, নম্বর ও ড্রাইভারের তথ্য আমাদের জানালে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নেব।
অচল বাসের বিষয়ে জানান,’ইতিমধ্যে ৫-৭টি বাস মেরামত করে সচল করা হয়েছে, আরও দুইটি বাস মেরামতের কাজ চলছে। অবশিষ্ট বাসগুলোও পর্যায়ক্রমে ঠিক করা হবে। যান্ত্রিক ত্রুটি যেকোনো সময় হতে পারে, তবে আমরা দ্রুত ঠিক করার চেষ্টা করি।
Array