জবি প্রতিনিধি
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জুতা পায়ে ওঠাকে কেন্দ্র করে রসায়ন ও মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে রসায়ন বিভাগের দুই শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, বুধবার (২৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টার দিকে শহীদ মিনারে জুতা পায়ে ওঠার বিষয়ে রসায়ন বিভাগের দুই শিক্ষার্থী আপত্তি জানালে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। পরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং মার্কেটিং বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী হামলা চালায়।
হামলায় রসায়ন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তামান্না তাবাসসুম ও আকাশ আলী আহত হন। আহত আকাশ আলীকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
ভুক্তভোগী আকাশ জানান, “আমরা বিভাগের একটি অনুষ্ঠানের জন্য স্টেজের কাজ করছিলাম। তখন দেখি একজন নারী শিক্ষার্থী ও এক পুরুষ শিক্ষার্থী জুতা পায়ে শহীদ মিনারে উঠেছেন। আমি তাদের সতর্ক করলে বিষয়টি নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। পরে এক পর্যায়ে তারা তাদের বন্ধুদের ডাকেন এবং আমার ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়।”
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, এ হামলায় নেতৃত্ব দেন ছাত্রদল কর্মী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী অনিক কুমার দাশ। এছাড়া রাতুল (১৭তম ব্যাচ), আরিফ (১৮তম ব্যাচ), আসিফ (১৮তম ব্যাচ), আয়ান (১৮তম ব্যাচ)সহ অন্তত ১৫ জন এতে অংশ নেন। অনিক কেন্দ্রীয় ছাত্রদল সহসভাপতি কাজী জিয়া উদ্দিন বাসেতের অনুসারী বলে জানা গেছে।
অভিযুক্ত ছাত্রদল কর্মী অনিক বলেন, “আমার বন্ধু মাহী ফোন দিয়ে জানালে আমি সেখানে যাই। তখন দেখি তার সঙ্গে একজনের কথা কাটাকাটি চলছে। আমি অসুস্থ থাকায় পেছনে ছিলাম, বাকিরা গিয়ে তাকে মারধর করে।”
শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, “এটি বিভাগের শিক্ষার্থীদের একটি বিষয় বলে জেনেছি। তবে ছাত্রদলের কেউ জড়িত কিনা, তা খতিয়ে দেখব।”
রসায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে এম লুৎফর রহমান বলেন, “আমার বিভাগের একজন শিক্ষার্থীকে আমার বিভাগের শিক্ষকের সামনেই মারধর করা হয়েছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। প্রত্যেক শিক্ষার্থী আমার সন্তানের মতো, তাদের এমন পরিস্থিতিতে দেখা সত্যিই কষ্টদায়ক। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দ্রুত বিচার চাই।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, “শহীদ মিনার চত্বরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
Array