ইসরায়েলে বৃষ্টির মতো রকেট ছুড়েছে লেবাননের প্রতিরোধ যোদ্ধা হিজবুল্লাহ। একদিনে তারা ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে অন্তত ১৭৫টি রকেট নিক্ষেপ করেছে।
সোমবার (০৭ অক্টোবর) ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমের বরাতে আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম চ্যানেল ১২ জানিয়েছে, সবশেষ নাহারিয়া, হাইফা, অ্যাক্রি, কেরায়ত এবং হাইফার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সোমবার সন্ধ্যায় ৪০টি রকেটের একবটি ব্যারেজ নিক্ষেপ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এর মধ্যে একটি রকেট অ্যাক্রির কাছাকাছি এলাকায় স্টিল উৎপাদন কেন্দ্রের কাছাকাছি পড়েছে। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে হামলার কথা বলা হলেও কতগুলো আটকানো হয়েছে বা কোথায় কোথায় তা পড়েছে সে বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য দেয়নি।
সোমবার সকালে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাস জানিয়েছে, যুদ্ধের প্রথম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে তারা তেলআবিবে বেশ কয়েকটি রকেট হামলা চালিয়েছে।
ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, খান ইউনিস থেকে অন্তত পাঁচটি প্রজেক্টাইল নিক্ষেপ করা হয়েছে।
এদিকে বিবিসির এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, সর্বাত্মক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে মধ্যপ্রাচ্য। গত এক বছরে বিশ্বে অনেক বিপদের মুহূর্ত এসেছে। তবে এবারেরটি সব চেয়ে ভয়াবহ। গত সাত দিনের মধ্যে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর নেতা হাসান নাসরুল্লাহ নিহত হয়েছেন। লেবাননে স্থল হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। ইরান প্রায় ২০০ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করেছে ইসরায়েলে। তেহরানে পাল্টা হামলা চালানোর ঘোষণা দিয়েছে তেলআবিব।
যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা ও আঞ্চলিক শক্তিগুলো উত্তেজনা কমানোর জন্য চাপ দিচ্ছে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ দ্রুত সংঘাত বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে।
শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোট জি-৭–এর পক্ষ থেকে সব পক্ষকে ধৈর্য ধরতে বলা হয়েছে; কিন্তু এখন পর্যন্ত সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ। আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে মধ্যপ্রাচ্য সর্বাত্মক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে চলে এসেছে। গত এক সপ্তাহে ঘটে যাওয়া এসব ঘটনার কারণে মূলত এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যায় লেবাননের বৈরুতে গত ২৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ইসরায়েল বোমা হামলা চালায়। সেখানে ব্যাপক বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। অনেক আবাসিক ভবন ধসে পড়ে। মাটিতে বড় গর্ত সৃষ্টি হয়। আকাশ ধুলাবালি ও ধোঁয়ায় ভরে ওঠে। পুরো লেবানন থেকে ওই দৃশ্য দেখা যায়। এ হামলা হয় মাটির নিচে থাকা হিজবুল্লাহর বাংকার লক্ষ্য করে। এ হামলায় নিহত হন হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরুল্লাহ। ইসরায়েলের এক সপ্তাহ ধরে চালানো হামলায় ৫০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হওয়ার পর নাসরুল্লাহর মৃত্যুর খবর আসে।
তারও এক সপ্তাহ আগে এই সশস্ত্র গোষ্ঠীটিকে লক্ষ্য করে পর পর অসংখ্য ওয়াকি-টকি এবং পেজার বিস্ফোরণ ঘটনো হয়। এতে কমপক্ষে ৩২ জন নিহত এবং তিন হাজার জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছিল।
Array