• আজকের পত্রিকা
  • ই-পেপার
  • আর্কাইভ
  • কনভার্টার
  • অ্যাপস
  • ইসরায়েলের হামলা লেবাননের যোদ্ধাদের প্রধান নিহত, এখন কী করবে ইরান 

     অনলাইন ডেস্ক অনলাইন ডেস্ক 
    29th Sep 2024 9:59 am  |  অনলাইন সংস্করণ

    ইসরায়েলের বিমান হামলায় ইরানপন্থি লেবাননের প্রভাবশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর প্রধান নেতা হাসান নাসরুল্লাহ নিহত হয়েছেন। গত শুক্রবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ভাষণে হিজবুল্লাহকে মোকাবিলার ঘোষণা দেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এরপর রাতভর নাসরুল্লাহকে হত্যার উদ্দেশ্যে বৈরুতসহ প্রায় ১৪০টি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। এতে গোষ্ঠীর প্রধানসহ কয়েকজন কমান্ডার নিহত হন। এ ঘটনার পর প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি। গতকাল খবরটি প্রকাশের পর ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে প্রভাব বিস্তারের জন্য তেহরান মূলত যাদের অস্ত্র, অর্থ ও প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে, তার মধ্যে অন্যতম হিজবুল্লাহ। এখন তাদের এক মিত্রবাহিনী প্রধানের মৃত্যুতে ইরানও জবাব দেওয়ার হুংকার দিয়েছে। তবে প্রশ্ন হচ্ছে ইরান কি সত্যি প্রতিশোধ নেবে নাকি সংযম দেখাবে?
    মার্কিন সংবাদমাধ্যমে সিএনএনের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, গত সোমবার থেকে লেবাননে ব্যাপক মাত্রায় শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলার পর এখন পরিস্থিতি পর্যালোচনা করছে ইরান। স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠেছে, এখন কীভাবে জবাব দেবে তেহরান।

    এর আগে বুধবার ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেন, হিজবুল্লাহর নেতাদের মৃত্যু নিঃসন্দেহে বড় ক্ষতি। তবে গোষ্ঠীটি এখনো নিজেদের রক্ষা করার সক্ষমতা রাখে। এরপর শুক্রবারের হামলার পর লেবাননের ইরানি দূতাবাস জানায়, কোনো সন্দেহ নেই যে এটি (হামলা) নিন্দনীয় অপরাধ, এটি খেলার নিয়ম বদলে দেবে এবং অপরাধীরা অবশ্যই শাস্তি পাবে।

    যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিভিত্তিক কুইন্স ইনস্টিটিউটের নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট ত্রিতা পারসি বলেন, এ সংঘাতে না জড়ানোর ইরানি যুক্তি সম্ভবত আর টিকবে না। হিজবুল্লাহ নিজেদের রক্ষা করার সক্ষমতা রাখে, এর প্রধানের মৃত্যুর পর, সেই যুক্তি ভেঙে পড়েছে। এখন যদি ইরান প্রতিক্রিয়া না দেখায়, তাহলে ওই অঞ্চলের অন্য মিত্রদের (হুতি, হামাস) সঙ্গেও ইরানের বিশ্বাসযোগ্যতা ভেঙে পড়ার ঝুঁকি তৈরি হবে।
    এদিকে, ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, যদিও ইরানের সর্বোচ্চ নেতা ও প্রেসিডেন্টের সাম্প্রতিক বক্তব্যে সুস্পষ্ট যে তারা ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাতে জড়াতে নয়, বহির্বিশ্বের সঙ্গে সুসস্পর্ক গড়তে বেশি আগ্রহী। এখন যদি তেহরান হিজবুল্লাহর সঙ্গে ইসরায়েলের সংঘাতে সরাসরি হস্তক্ষেপ না করে, সেক্ষেত্রে এই অঞ্চলের অন্য মিত্র মিলিশিয়াদের কাছে বার্তা যেতে পারে যে সংকটের সময় ইসলামি প্রজাতন্ত্র তাদের নিজেদের স্বার্থ এবং টিকে থাকার দিকে বেশি মনোযোগ দেয়। বিষয়টি নিয়ে তেহরান বেশ দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

    তবে আলজাজিরার এক বিশ্লেষণে ইস্তাম্বুল জাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর ইসলাম অ্যান্ড গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্সের পরিচালক সামি আল-আরিয়ান বলেন, এতে (নাসরুল্লাহ নিহত) আঞ্চলিক উত্তেজনা বাড়ার শঙ্কা অনেক বেশি এবং এটি সব পর্যায়ে ঘটতে পারে। নিঃসন্দেহে এ আঞ্চলিক যুদ্ধের অংশ হবে ইরান। আমি সন্দেহ করছি একটা সূচনা হবে। আমার ধারণা, লেবানন, ইয়েমেন, ইরাকসহ অন্যান্য স্থান থেকে প্রতিশোধমূলক হামলা হবে। এখন ইসরায়েল কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাবে, তার ওপর নির্ভর করছে একটি আঞ্চলিক যুদ্ধ কোন দিকে যেতে পারে।
    এর আগে শনিবার এক বিবৃতিতে হিজবুল্লাহ জানায়, ‘হিজবুল্লাহর সেক্রেটারি জেনারেল হাসান নাসরুল্লাহ সংগঠনটির মহান ও অমর শহীদ কমরেডদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন; যাদের তিনি ৩০ বছর ধরে নেতৃত্ব দিয়েছেন।’ এর আগে এক এক্স বার্তায় ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে নাসরুল্লাহ নিহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছিল। এতে বলা হয়, ‘নাসরুল্লাহ আর বিশ্বে সন্ত্রাসবাদ পরিচালনা করতে পারবেন না।’

    খামেনির বার্তা: খামেনি বলেছেন, ‘আঞ্চলিক সব প্রতিরোধী শক্তি’ হিজবুল্লাহর পাশে রয়েছে। লেবাননের শিয়া ইসলামপন্থি রাজনৈতিক দল ও সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহর প্রধান নাসরুল্লাহ ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন এমন খবর জানার পর তিনি এমন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। বিবৃতিতে তিনি বলেন, হিজবুল্লাহর উল্লেখযোগ্য কোনো ক্ষতি করার জন্য ইসরায়েল খুবই নগণ্য। এ অঞ্চলের ভাগ্য নির্ধারণ করবে প্রতিরোধী শক্তিগুলো। এ শক্তির শীর্ষে রয়েছে বিজয়ী হিজবুল্লাহ। নিজেদের সবকিছু নিয়ে লেবানন ও হিজবুল্লাহর পাশে গর্বের সঙ্গে দাঁড়ানো সব মুসলিমের জন্য বাধ্যতামূলক।

    হিজবুল্লাহর প্রতিশোধের হুঁশিয়ারি: এক টেলিগ্রাম বার্তায় সশস্ত্র গোষ্ঠীটি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে এবং গাজা ও ফিলিস্তিনিদের সমর্থন, লেবাননের জনগণের সুরক্ষায় লড়াই অব্যাহত রাখতে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এদিকে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র বলেন, আমাদের যুদ্ধ লেবাননের মানুষের বিরুদ্ধে নয়, হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে।

    বিশ্ব প্রতিক্রিয়া: নাসরুল্লাহকে হত্যা-পরবর্তী সময়কে মধ্যপ্রাচ্যের বিপজ্জনক মুহূর্ত হিসেবে দেখা হচ্ছে। এর প্রতিক্রিয়ায় এ অঞ্চলে বড় ধরনের যুদ্ধের শঙ্কা বেড়ে গেছে। ফ্রান্স সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে। ইসরায়েলিরা একে তাদের বিরাট বিজয় হিসেবে দেখছেন। আর হামাস, হুতিসহ অন্য মিলিশিয়ারা অপূরণীয় ক্ষতি হিসেবে নিয়েছে। হিজবুল্লাহর সঙ্গে সংহতি জানিয়েছে গাজার স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। এখন কূটনীতিকরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন। তবে ইসরায়েল বর্তমানে হিজবুল্লাহকে নিশ্চিহ্ন করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তারা আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে গোষ্ঠীটির অন্য কমান্ডারদের হত্যার মিশনে নেমেছে।

    এদিকে, ইরান ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন লেবানন ও ইসরায়েলের আকাশপথ ব্যবহার না করার জন্য এয়ারলাইন্সগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছে। আর নাসরুল্লাহ হত্যার ঘটনায় ইসরায়েল সব সীমা অতিক্রম করেছে বলে মন্তব্য করেছে ইরাক। দেশটির প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এ ঘটনায় তিন দিনের শোক ঘোষণা করেছে।

    নাসরুল্লাহর পরিচয়: নাসরুল্লাহর জন্ম ১৯৬০ সালে। বেড়ে উঠেছেন বৈরুতের পূর্বাঞ্চলীয় উপকণ্ঠের বুর্জ হামুদ এলাকায়। বাবা আবদুল করিম ছিলেন একজন সাধারণ সবজি বিক্রেতা। তার ৯ সন্তানের মধ্যে নাসরুল্লাহ ছিলেন সবার বড়।

    ১৯৭৫ সালে লেবানন গৃহযুদ্ধের মুখে পড়লে নাসরুল্লাহ শিয়া মুভমেন্ট ‘আমালে’ যোগ দেন। পরে ১৯৮২ সালে আরও কয়েকজনের সঙ্গে দলটি থেকে বেরিয়ে যান তিনি। ১৯৮৫ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের প্রতিষ্ঠার কথা জানায় হিজবুল্লাহ। তাতে যোগ দেন নাসরুল্লাহ।
    সংগঠনটি যুক্তরাষ্ট্র ও তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নকে ইসলামের শত্রু হিসেবে বিবেচনা করে আসছে। আর ইসরায়েলকে প্রকাশ্য ধ্বংসের ডাক দিয়ে আসছে তারা।
    ১৯৯২ সালে হিজবুল্লাহর প্রধান হন নাসরুল্লাহ। এর আগে ইসরায়েলের এক হেলিকপ্টার হামলায় নিহত হন তার পূর্বসূরি আব্বাস আল–মুসাবি। হিজবুল্লাহপ্রধানের দায়িত্ব নেওয়ার পর মুসাবি হত্যার প্রতিশোধ নেওয়া ছিল হাসান নাসরুল্লাহর প্রথম কাজ। নাসরুল্লাহ তখন লেবাননের দক্ষিণে ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গেও তার যোদ্ধাদের লড়াইয়ে নেতৃত্ব দেন। একপর্যায়ে ২০০০ সালে সেখান থেকে পিছু হটে দেশে ফিরে যান ইসরায়েলি সেনারা।
    নাসরুল্লাহর নেতৃত্বে হিজবুল্লাহ ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের যোদ্ধাদের পাশাপাশি ইরাক ও ইয়েমেনের মিলিশিয়াদের প্রশিক্ষণগত সহায়তা দিয়েছে। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবহারের লক্ষ্যে ইরানের কাছ থেকে সংগ্রহ করা ক্ষেপণাস্ত্র ও রকেটের এক সমৃদ্ধ ভান্ডার রয়েছে হিজবুল্লাহর।
    দখলকৃত লেবাননি ভূখণ্ড থেকে ইসরায়েলি সেনাদের তাড়াতে প্রথমে একটি মিলিশিয়া দল হিসেবে গড়ে উঠেছিল হিজবুল্লাহ। পরে এ দলকেই লেবাননের সেনাবাহিনীর চেয়ে শক্তিশালী এক বাহিনীতে রূপ দেন নাসরুল্লাহ।

    সর্বশেষ হিজবুল্লাহ-ইসরায়েল উত্তেজনা বেড়ে যায় গত বছরের ৮ অক্টোবর থেকে। ওই দিন ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামাসের রকেট হামলার জের ধরে গাজায় নজিরবিহীন তাণ্ডব শুরু করে দেশটি। ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রদর্শনের অংশ হিসেবে মাঝেমধ্যেই ইসরায়েলের অভ্যন্তর ও দখলকৃত গোলান মালভূমি এলাকায় রকেট হামলা চালাচ্ছে হিজবুল্লাহ।

    Array
    We use all content from others website just for demo purpose. We suggest to remove all content after building your demo website. And Dont copy our content without our permission.
    আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
    এই বিভাগের আরও খবর
     
    Jugantor Logo
    ফজর ৫:০৫
    জোহর ১১:৪৬
    আসর ৪:০৮
    মাগরিব ৫:১১
    ইশা ৬:২৬
    সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১

    আর্কাইভ

    September 2024
    M T W T F S S
     1
    2345678
    9101112131415
    16171819202122
    23242526272829
    30