ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেছেন, বাংলাদেশের প্রত্যেকটি নাগরিকের অধিকার আদায়ের জন্য ৫ আগস্ট জীবনবাজি রেখে হাজারো মায়ের বুক খালি করে আমরা দেশকে ফ্যাসিবাদমুক্ত করেছি। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা দ্বিতীয়বারের মতো দেশ স্বাধীন করেছি। এ দেশ আমার। এ দেশ আপনার।
ঢাবি, বুয়েট আমাদের কিন্তু পড়ার অধিকার সবার। দলমত ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে দেশ সবার। মুসলিমদের পাশাপাশি সকল ধর্মের মানুষ এখানে নিরাপদ থাকবে এটাই স্বাভাবিক। সংখ্যালঘুদের নিয়ে যারা রাজনীতি করে তারাই হিন্দুদের মন্দিরে আক্রমণ চালায়।
৫ আগস্ট যে বৈষম্য ও জুলুমের বিরুদ্ধে বিজয় এনেছি পরবর্তী সময় এসে আমরা দেখলাম সেই আগের মতোই দখলদারি, চাঁদাবাজি, ধ্বংসযজ্ঞ শুরু করেছে একটি গোষ্ঠী। এসব বন্ধ করতে হবে। সবাই মিলে একটি কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। একটি কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া ভাগ্যাহত জনতার ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হবে না। স্বাধীনতা অর্থবহ হবে না।
রাষ্ট্র সংষ্কার করে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সময়ের দাবি। কিন্তু ঘুরেফিরে দুর্নীতিবাজদের ক্ষমতায় আনলে জনগণের দুঃখ-দুর্দশার অন্ত থাকবে না।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নিউ মার্কেট মিরপুর রোড চন্দ্রিমা সুপার মার্কেটের সামনে নিউ মার্কেট থানা শাখা আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শায়খে চরমোনাই এসব কথা বলেন।
বোরকা ও হিজাব নিয়ে শিল্পকলার নতুন ডিজির আপত্তিকর বক্তব্য ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশে সহ্য করা যায় না উল্লেখ করে মুফতী ফয়জুল করীম বলেন, সৈয়দ জামিল আহমেদ কে অপসারণ করতে হবে। ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবে সংঘটিত গণহত্যার বিচার, দুর্নীতিবাজদের অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত ও তাদেরকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণার করা, সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন এবং ভারতের পানি আগ্রাসনের প্রতিবাদে আয়োজিত গণসমাবেশে তিনি আরও বলেন, রকিব, হুদা ও আউয়াল কমিশনকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। অবৈধ নির্বাচন বাতিল করতে হবে। অবৈধ নির্বাচনের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে আইনের আওতায় আনতে হবে।
মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই বলেন, সমাজ ও রাষ্ট্রে ওলামায়ে কেরামের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা ছাড়া ইনসাফপূর্ণ সমাজ গঠন সম্ভব হবে না। ইসলামপন্থিগণ এক হলে ইসলামই হবে দেশের একমাত্র নিয়ামক শক্তি। জালিমদের হাত থেকে আলেমদের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা সময়ে অনিবার্য দাবি।
মুফতী ফয়জুল করীম বলেন, মুহাম্মদ (সা.) রাষ্ট্র নায়ক ছিলেন। যার ভিতর ইনসাফ নেই, যে দুর্নীতিবাজ, চোর-ডাকাত, লুটেরা, ধর্ষক, জালিম সেই ব্যক্তি কীভাবে ইনসাফভিত্তিক সমাজ উপহার দেবে? কাজেই জালিম ও চোর-ডাকাতদের হাত থেকে ইসলামীপন্থিদের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশে ইসলামী অনুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
গণসমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সহকারী মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম বলেন, স্বাধীনতার ৫২ বছরে যারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ছিলো তাদেরকে এদেশের মানুষ ভালো করে চেনে ও জানে। এসব দুর্নীতিবাজ ও লুটেরাদের এদেশের মানুষ আর সেকেন্ডবার ক্ষমতায় দেখতে চায় না।
সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম, সহ-সভাপতি আলহাজ আব্দুল আউয়াল মজুমদার, সেক্রেটারি ডা. মুহাম্মদ শহিদুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা কে এম শরীয়াতুল্লাহ, মুফতি আব্দুল আহাদ। সংগঠনের নিউ মার্কেট থানা সভাপতি আলহাজ মো. আবুল কাশেমের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি মাওলানা মুহাম্মদ কামাল হোসাইনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে সহযোগী সংগঠনের নেতারা বক্তব্য রাখেন।
Array