নিজস্ব প্রতিবেদককক্সবাজার
কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) আবদুর রহমান বদিকে আজ বুধবার বিকেলে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। সন্ধ্যায় প্রিজন ভ্যানে বদিকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। গতকাল মঙ্গলবার রাতে চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ এলাকা থেকে বদিকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
আজ বেলা তিনটার দিকে কড়া নিরাপত্তায় বদিকে কক্সবাজার আদালত প্রাঙ্গণে নিয়ে আসে র্যাব। তার আগে থেকে আদালত প্রাঙ্গণে ভিড় করেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার কয়েক শ মানুষ। তাঁরা স্লোগানে বদির ফাঁসি দাবি করেন এবং মাদকমুক্ত টেকনাফ গড়ার প্রত্যাশার কথা জানান।
বদিকে বহন করা গাড়ি আদালত প্রাঙ্গণে পৌঁছালে ক্ষুব্ধ লোকজনের কেউ কেউ ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে তেড়ে গিয়ে বদিকে ঘুষি মারার চেষ্টা করলে সেনাবাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। এরপর বদিকে আদালতের কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়।
বদিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে ১৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করে টেকনাফ থানা-পুলিশ। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হামীমুন তানজীম রিমান্ড আবেদনের শুনানি পরবর্তী সময় হবে জানিয়ে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আদালতের আইনজীবী আবু সিদ্দিক ওসমানী বলেন, সাবেক সংসদ সদস্য বদিকে আদালতে তোলার পর টেকনাফের একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।
আবদুর রহমান বদি টেকনাফ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটলে আত্মগোপনে চলে যান তিনি।
আবদুর রহমান বদি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ৯ম ও ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বদির পরিবর্তে তাঁর স্ত্রী শাহীন আক্তারকে মনোনয়ন দেয় আওয়ামী লীগ। তিনি দুই দফায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকায় মাদক চোরাচালানের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে আবদুর রহমান বদির নাম রয়েছে। তালিকায় ‘মাদকের গডফাদার’ হিসেবে বদির ৪ ভাইসহ পরিবারের অন্তত ২৬ জনের নাম রয়েছে।
এদিকে টেকনাফে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর, লুটপাট ও হামলার অভিযোগে আবদুর রহমান বদিকে প্রধান আসামি করে ১৪ আগস্ট টেকনাফ মডেল থানায় ৩৩ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়। এ মামলায় টেকনাফের সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাফর আহমেদকেও আসামি করা হয়েছে। কক্সবাজার জেলা বিএনপির অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
Array