বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় রেমালে পরিণত হয়েছে। যা আজ দিবাগত মধ্যরাত থেকে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ উপকূলের সমুদ্র তীরবর্তী এবং আশপাশের অঞ্চলে আঘাত হানতে শুরু করতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে যেকোনো ধরনের দুর্যোগ পরিস্থিতি তৈরি হলে টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্কিং ব্যবস্থা সচল রাখতে বিশেষ মনিটরিং সেল গঠন করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। এর মাধ্যমে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে পারে এমন এলাকায় সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। নেওয়া হয়েছে বাড়তি ব্যবস্থা।
রোববার (২৬ মে) দুপুরে বিটিআরসির কমিশনার প্রকৌশলী শেখ রিয়াজ আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালকে কেন্দ্র করে আমাদের বিশেষ বৈঠক সম্পন্ন হয়েছে। সেখানে আলোচনার পর আমরা বিশেষ মনিটরিং সেল গঠন করেছি। উপকূলবর্তী অঞ্চলে মোবাইলের নেটওয়ার্কসহ আনুষঙ্গিক বিষয়াদি ঠিক রাখার জন্য যথার্থ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত আমাদের সব সিগন্যাল ও নেটওয়ার্কিং ব্যবস্থাপনা ঠিক আছে। সার্বক্ষণিক আমাদের যোগাযোগ হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই।
অপরদিকে দুর্যোগ মোকাবিলা এবং দুর্গত মানুষের পাশে থাকার জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়সহ সব মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।
রোববার (২৬ মে) সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আন্তঃমন্ত্রণালয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সমন্বয় কমিটির সভা শেষে তিনি এ কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ৮ লাখের বেশি মানুষ ইতোমধ্যে আশ্রয় কেন্দ্রে এসেছেন। বাকিদের আসার জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে। উপকূলীয় অঞ্চলে আপাতত স্কুল খোলা থাকবে তবে ক্লাস বন্ধ।
এছাড়া ঘূর্ণিঝড়ের সবশেষ আপডেট সম্পর্কে আবহাওয়া অফিসের বিশেষ বিজ্ঞপ্তি-১২ তে বলা হয়েছে, প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নেওয়া রেমালের প্রভাবে দেশের ১৬ জেলায় ৮-১২ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস তৈরি হতে পারে। এছাড়া ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দেশের প্রতিটি বিভাগেই বৃষ্টি হতে পারে বলেও জানানো হয়েছে।
এছাড়া ক্ষতি এড়াতে পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ০৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার নদী বন্দরকে ৪ নম্বর নৌ-মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
Array