- ভাঙ্গা(ফরিদপুর)প্রতিনিধি
প্রথম বিয়ের তথ্য গোঁপন করে সালমান মুন্সী নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে প্রতারণা করে দ্বিতীয় বিয়ে করার অভিযোগ তুলেছেন সায়মা খাতুন নামের এক ভুক্তভোগী নারী। ঘটনাটি ঘটেছে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার তুজারপুর ইউনিয়নের বামনকান্দা গ্রামে। অভিযুক্ত যুবক সালমান মুন্সী ওই গ্রামের বাসিন্দা লুৎফর রহমান মুন্সীর ছেলে ও সায়মা খাতুনের স্বামী।
সোমবার (২২ এপ্রিল) ভুক্তভোগী ওই নারী সায়মা খাতুন তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে মৌখিকভাবে ও একটি ভিডিও বক্তব্যে গণমাধ্যমকে এ অভিযোগ জানান।
সায়মার অভিযোগ, সালমানের সঙ্গে সু-সম্পর্ক থাকাকালীন সময়ে প্রায় রাতেই তাঁর অজান্তে তাকে ঘুমের ওষুধ খাওয়াতেন। সেই সুযোগে তাঁর ঘর থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, ব্যাংকের চেক, নগদ অর্থ ও স্বর্নালংকার হাতিয়ে নিয়েছে সালমান। তাঁর সরল বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে তাঁর সঙ্গে প্রতারণা করেছেন অভিযুক্ত সালমান মুন্সী। তাকে স্ত্রী হিসেবে অস্বীকৃতি, তাঁর গর্ভের সন্তান নষ্ট ও সামাজিকভাবে হেয় করার অভিযোগ করেন সায়মা খাতুন।
এতে সামাজিক, মানসিক ও অর্থনৈতিক ভাবে মারাত্বক ক্ষতি গ্রস্ত হয়েছেন তিনি। তবে, সালমান মুন্সীর বাবা লুৎফর মুন্সীর ভাস্য- তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে সায়মার অভিযোগ সম্পূর্ণ বানোয়াট ও মিথ্যা। তিনি বলেন- সালমানের সঙ্গে কখনোই সায়মার বিবাহ হয় নি এবং সামাজিকভাবেই ছেলেকে বিবাহ দিয়েছেন তারা ।
মামলা সুত্রে জানাযায়, কয়েক বছর আগে এক প্রবাসীর সঙ্গে সায়মার প্রথম বিয়ে হয়। সে সংসারে সায়মার দুই সন্তান রয়েছে। ওই প্রবাসী স্বামী সায়মা ও সন্তানের দীর্ঘদিন যাবত কোন খোঁজ-খবর না নেওয়ায়, গত ২০২২ সালে প্রথম স্বামীর সঙ্গে সায়মার বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। এরপর সায়মা তাঁর বাবার বাড়ি উপজেলার কাউলীবেড়া গ্রামে বসবাস করতে থাকেন। পরে সায়মার দূরসম্পর্কের আত্মীয় পাশর্^বর্তী তুজারপুর ইউনিয়নের বামনকান্দা গ্রামের বাসিন্দা সালমান মুন্সীর সঙ্গে ঘনিষ্ট সম্পর্কে গড়ে উঠে। সেই সম্পর্কের জের ধরে সালমান ও সায়মা গোঁপনে বিবাহ হয়। পরবর্তীতে তারা স্বামী-স্ত্রীর মতো বসবাস করতে থাকেন।
এক পর্যায়ে সায়মা সন্তানসম্ভাবনা হয়ে পড়লে, তাঁর শশুরবাড়িতে আনুষ্ঠানিকভাবে নেওয়ার জন্য সালমানকে তাগিদ দেন। কিন্তু এতে সম্মতি না দিয়ে বরং সায়মাকে বিভিন্ন অযুহাত দেখিয়ে কালক্ষেপন করেন সালমান। এক পর্যায়ে, বিভিন্ন অযুহাত ও ভয়ভীতি দেখিয়ে সায়মার গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্য তাকে বাধ্য করা হয়।
তাকে গত ২০২১ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারী রাজধানীর একটি হাসপাতালে অপারেশনের মাধ্যমে সায়মার গর্ভের ১০ সপ্তাহের সন্তান নষ্ট করা হয়। পরে অপারেশনের দুই দিন পর সায়মাকে হাসপাতালে রেখেই সটকে পড়ে সালমান এবং সায়মার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় সালমান। পরবর্তীতে সায়মা ২০২৩ সালের জুলাই মাসে সালমানের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে সালমানের স্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি দাবি করেন। ওই দিন তাকে স্ত্রীর মর্যাদা না দিয়ে বরং অপমান করে বাড়ি থেকে তাকে তাড়িয়ে দেয় সালমান। পরবর্তীতে এ ঘটনায় একটি ন্যায় বিচারের দাবিতে বিজ্ঞ আদালতের দ্বারস্থ হন সায়মা। এ ঘটনায় একটি ন্যায় বিচারের দাবি করেন ভুক্তভোগী সায়মা।
এ বিষয়ে সালমান মুন্সীর সঙ্গে বক্তব্য জানতে তাঁর মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায় নি। তবে, সালমানের মা রাশিদা বেগম বলেন, তাঁর ছেলে ও বৌ বাড়িতে নেই। তাঁরা বেড়াতে গিয়েছেন। সালমানের বাবা লুৎফর মুন্সী জানায়, তাঁর ছেলের সঙ্গে সায়মার কোন বিবাহ হয় নি বরং সায়মা তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে মিথ্যা ষড়যন্ত্র করছেন। এতে তাঁর পরিবারের সদস্যরা বিষন্নতায় ভুগছেন। তিনি বরিশালের উজিরপুর গ্রামে একটি ভালো পরিবারের মেয়ের সঙ্গে সামাজিকভাবে ছেলের বিয়ে দিয়েছেন। সেই বিয়ে উপলক্ষে খুব শীঘ্রই বৌ-ভাতের অনুষ্ঠান করবেন।
Array