বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার পুলিশ বাহিনীকে ব্যবহার করে, রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে গোটা দেশকে পরাধীন করে রেখেছে। আমরা আজকে নিজ দেশে পরবাসী হয়ে গেছি।
শুক্রবার (১২ এপ্রিল) বিকেলে ঠাকুরগাঁয়ের হরিপুর উপজেলায় পুলিশ হেফাজতে মারা যাওয়া হরিপুর উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব একরামের কবর জিয়ারত ও তার পরিবারের সঙ্গে দেখা করে এক শোকসভায় তিনি এসব বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আপনাদের ছেলে যুবদল নেতা আকরামকে এই ভয়াবহ দানবীয় সরকার, দখলদারি সরকারের পুলিশ বাহিনী অন্যায়ভাবে নির্যাতন করে হত্যা করেছে পুলিশ কাস্টডিতে। আমাদের ছেলেমেয়েরা অধিকারের জন্য লড়াই করছে, সংগ্রাম করছে। ভোটের অধিকার, ভাতের অধিকার, বেঁচে থাকার অধিকার আদায়ের জন্য তারা লড়ছে। এই সরকার ফ্যাসিবাদী সরকার। জবরদখল করে বসে একটা নির্বাচন দেখিয়ে প্রতারণা করে তারা বারবার ক্ষমতা দখল করে নিচ্ছে। আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রাম করছি।
তিনি আরও বলেন, আকরামকে মিথ্যা কথা বলে পুলিশ বাহিনী ধরে নিয়ে গেছে। আকরামের মৃত্যু পুলিশ বাহিনীর অত্যাচার নির্যাতন যে চরমে উঠেছে তারই একটি প্রমাণ। এই অত্যাচার নির্যাতন করে তারা দেশ শাসন করছে। জনগণের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে, ভোটের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। পুলিশ কাস্টডিতে যখন একজন অসহায় নিরীহ মানুষকে হত্যা করা হয় তখন সেই রাষ্ট্রের কী অবস্থা দাঁড়ায়। মানুষ ভাবছে এখানে কোনো আইনের শাসন নেই। এখানে যারা রক্ষক তারাই হয়ে গেছে নির্যাতনকারী, তারাই ভক্ষক।
মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার কোনো দিনই জনগণের ভোটে নির্বাচিত হতে পারেনি। সব সময় ভয় দেখিয়ে, প্রতারণা করে, মানুষকে ভুল বুঝিয়ে জোর করে ক্ষমতা দখল করেছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের আন্দোলন চলাকালে প্রায় ৩০ জন নেতাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আমাদের ৬০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা দেওয়া হয়েছে। ৭০০-৮০০ নেতাকর্মীকে গুম করে দেওয়া হয়েছে। অক্টোবরে আন্দোলনের পরে ২৭ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমি নিজেও সাড়ে তিন মাস কারাগারে ছিলাম। এর মধ্যে অসংখ্য নেতাকর্মী জেলে ছিল। এই সরকার যারা মানুষের ভোটে নির্বাচিত হয়নি তারা আজকে সারাদেশকে নির্যাতনের কারখানায় পরিণত করেছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে ঈদুল ফিতর সাধারণ মানুষের জন্য আনন্দের বার্তা নিয়ে আসেনি। ঈদের আনন্দ সব মিলিয়ে গেছে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে। সরকার সুপরিকল্পিতভাবে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। মানুষের খাওয়ার উপায় নেই, বাজারে জিনিসপত্রের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে।
এর আগে হরিপুর উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব প্রয়াত আকরাম হোসেনের কবর জিয়ারতের পর বিএনপি মহাসচিবসহ দলের কয়েকজন নেতা-কর্মী বাসায় গিয়ে তার সহধর্মিণী ফাতেমা খাতুনসহ পরিবারের সদস্যদের খোঁজখবর নিয়ে শোকসন্তপ্ত পরিবারকে সান্ত্বনা দেন।
এ সময় জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি নুর করিম, জেলা যুবদলের সভাপতি চৌধুরী মোহা. মহেবুল্লাহ আবু নুর, হরিপুর উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. জামাল উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
Array