জেলা প্রতিনিধি, শরীয়তপুর: শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলার দারুল-আমান ইউনিয়নে টিসিবির চাল ওজনে কম দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন উপকারভোগীরা। পাঁচ কেজি চাল কেনার পর ওজন করে সেখানে চার থেকে সাড়ে চার কেজি পাওয়া যাচ্ছে।
এ নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে টিসিবি ডিলারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন স্বজনরা। অতিদরিদ্র মানুষের ঘাম ঝরানো টাকায় কেনা চাল ওজনে কম দেওয়ায় তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয় স্থানীয়দের মধ্যে। পণ্য ক্রয় করতে আসা ব্যক্তিরা জানান, ৫২৫ টাকা মূল্যে ৫ কেজি চাল, ২ কেজি ডাল, ১ কেজি ছোলা ও ২ লিটার সয়াবিন তেল দেওয়ার কথা। কিন্তু সকাল ৯ টা থেকে দারুল আমান বিক্রয় কেন্দ্রে ৫ কেজি চালের পরিবর্তে কাউকে ৪ কেজি আবার কাউকে সাড়ে ৩ কেজি চাল দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ( ৭ মার্চ ) সকাল ৯ টা থেকে উপজেলার দারুল-আমান ইউনিয়ন পরিষদে ওই ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিলারের মাধ্যমে টিসিবির চাল ও অন্যান্য পণ্য বিক্রি শুরু হয়।
এসময় ওজনে কম দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় কিছু মানুষ প্রতিবাদ জানান। এবং ইউনিয়ন পরিষদের ভেতরে অবস্থান নেওয়া ডিলারের লোকজনের সঙ্গে তাদের বাগবিতণ্ডা হয়।
ভুক্তভোগী নাদ্রা গ্রামের মনোয়ার হোসেন বেপারি বলেন, আমরা গরিব মানুষ, এই জন্য টিসিবি থেকে কম মূল্যে চাল কিনেছি। ৫ কেজি চালের দাম পরিশোধ করি। তবে চাল ওজনে কম দেওয়া হয়েছে সন্দেহ হলে ইউনিয়ন পরিষদের সামনের একটি দোকানে ডিজিটাল স্কেলে ওজন করি। তখন দেখি ৮০০ গ্রাম কম।
একই অভিযোগ উত্তর ডামুড্যা এলাকার কামাল ও স্বপন খানের তিনি বলেন, তিনি বলেন, একসঙ্গে আমরা দুজন দুটি প্যাকেজ কিনি। সন্দেহ হলে তাদের পূনরায় মাপতে বলি। তখন মেপে দেখি ১০ কেজি চালে ২ কেজি কম। বিষয়টি ডিলারকে বললেও তিনি কানে নেননি উল্টো আমাদের গালমন্দ করে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন দারুল- আমান ইউনিয়নের টিসিবি ডিলার ফ্রেন্ডশিফ এন্টারপ্রাইজ এর স্বত্বাধিকারী আব্দুর রশিদ মাদবর বলেন, আমার এখানে শ্রমিকরা হয়তো গোডাউনে থাকা অবস্থায় চাল সরিয়েছে। তাই হয়তো কম দিয়ে পূরণ করার চেষ্টা করছে। আপনার নিউজ করার দরকার নাই। আমি আপনাকে মিষ্টি খাওয়ার টাকা দিচ্ছি।
অতিদরিদ্র সাধারণ মানুষ রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে লম্বা লাইন দিয়ে টিসিবির পণ্য কেনেন। এরকম মানুষের সঙ্গে ডিলারের ওজন প্রতারণা করায় তীব্র প্রতিবাদ করেন ইউনিয়ন পরিষদের আশপাশের মানুষজন। এবং পাশাপাশি জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়ে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান স্থানীয়রা।
এদিকে ট্যাগ অফিসারের দাইত্বে থাকা ডামুড্যা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো: ওবায়দুর রহমান সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। বিষয়টি জানতে তার মুঠোফোনে ফোন দিলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে ফোনটি কেটে দেন। পরবর্তী একাধিক বার ফোন দিলেও তিনি ফোন টি রিসিভ করেন নি।
এবিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মমিনুল হক মিন্টু সিকদার বলেন, চাল কম দেওয়ার অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছি। টিসিবি ডিলার নিয়ন্ত্রণ করার দায়িত্ব ইউনিয়ন পরিষদের না। পরিষদ ভবন শুধুমাত্র পণ্য বিক্রিতে ব্যবহারের জন্য দেওয়া হয়েছে। তবে ওজন কম দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ব্যাবস্থা নিবে।
ডামুড্যা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোবাশ্বের আলম বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। ওজন প্রতারণার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমি বিষয়টি দেখে আপনাকে জানাচ্ছি।
- আশিকুর রহমান/ এফ জে