• আজকের পত্রিকা
  • ই-পেপার
  • আর্কাইভ
  • কনভার্টার
  • অ্যাপস
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল লাইব্রেরিতে ছাত্রীদের মারামারি 

     বার্তা কক্ষ 
    04th Mar 2024 7:33 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

    ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক হলের ক্যান্টিনে কথাকাটাকাটির জের ধরে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে (সেন্ট্রাল লাইব্রেরি) এসে এক নারী শিক্ষার্থীর ওপর হামলা করে মারধর করেছে আরেক নারী শিক্ষার্থী। সোমবার (০৪ মার্চ) দুপুর পৌনে ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের তিনতলার এক্সটেনশনে এ ঘটনাটি ঘটে।

    জানা গেছে, অভিযুক্ত এই নারীর নাম হাসনাহেনা তমা। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিভাগের ২০১১-১২ সেশনের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি কবি সুফিয়া কামাল হলের সাবেক আবাসিক শিক্ষার্থী। বর্তমানে তিনি বিভিন্ন চাকরির প্রস্তুতির জন্য পড়াশোনা করছেন।

    অন্যদিকে, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী। তিনি রোকেয়া হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।

    ঘটনার পর পরই হামলাকারী ওই নারী শিক্ষার্থীসহ দুজনকেই সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে নিয়ে যান। সেখানে নেওয়ার পর অভিযুক্তের স্বামীকে ডেকে আনলে তিনি তার স্ত্রীর কর্মকাণ্ডের জন্য আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করেন এবং আর কোনোদিন তার স্ত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার এবং আবাসিক হল ব্যবহার করবেন না মর্মে লিখিত দেন। একইসঙ্গে, অভিযুক্ত ওই নারীও নিজের ভুল স্বীকার করেন।

    এসময় প্রক্টর অফিসের সামনে অবস্থানরত কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের মারামারির ঘটনার কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থী বলেন, আজ সেন্ট্রাল লাইব্রেরিতে একটি নজিরবিহীন ঘটনা ঘটেছে। আমরা লাইব্রেরিতে পড়াশোনা করছিলাম, এমন সময় তিনতলায় আইবি বিভাগের ২০১১-১২ সেশনের হাসনাহেনা তমা নামে পরিচয় দানকারী এক মেয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের এক আপুকে হঠাৎ করেই মারধর করা শুরু করে। এর আগে তারা কী যেন বলছিল। আপুটি পড়াশোনা করা অবস্থায় প্রথমেই তাকে একটি থাপ্পড় দেয়, তারপর উনি দাঁড়িয়ে গেলে তার চুলে ধরে টেবিলে তার মাথাকে আঘাত করতে থাকে। এসময় তার অনেকগুলো চুল ছিঁড়ে ফেলেছে এবং টেবিলে এমনভাবে আঘাত করেছে, তার চশমার গ্লাসে দাগ পড়ে গেছে। সঙ্গে সঙ্গে আমরা এগিয়ে গিয়ে অনেক চেষ্টা করেও তাকে ফেরাতে পারছিলাম না, সে এতটাই এগ্রেসিভ ছিল।

    তারা বলেন, ঘটনার সূত্রপাত সকালে রোকেয়া হলের ক্যান্টিন থেকে। আমরা শুনেছি, ওখানে না কি সে (অভিযুক্ত) অনেক কিছু খেয়ে মাত্র ২০ টাকা বিল দিচ্ছিল, তখন যে আপুটার ওপর সে হামলা করেছে সেই আপুটা না কি বলেছিল, আপনি এত কিছু খেয়ে মাত্র বিশ টাকা বিল দিচ্ছেন কেন? সেটা নিয়ে তাদের মধ্যে একটু কথাকাটাকাটি হয়তো হয়েছিল। সেই জেরেই মূলত লাইব্রেরিতে তার তার এই কাণ্ড। লাইব্রেরিতে আসার পর তাকে খুঁজে খুঁজে বের করে বাইরে নিয়ে যাওয়ার কথা বললে বাইরে না যাওয়ায় লাইব্রেরির ভেতরেই তার ওপর হামলা চালায় সে।

    নিয়মিত কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে পড়াশোনা করা আজকের ঘটনার আরেক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, তার এই ধরনের কর্মকাণ্ডের জন্য সাইন্স লাইব্রেরইতে সে অবাঞ্চিত, সেখানে সে যেতে পারে না। কয়েক দিন আগে আমাদের সেন্ট্রাল লাইব্রেরিতেই ওয়াশরুমের সিরিয়াল নিয়ে অন্যান্য মেয়েদের সঙ্গে ঝামেলা করেছে। নামাজের রুমে ময়লা করা নিয়েও ঝামেলায় জড়িয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় এরকম ঝামেলা করলে মেয়েরা যখন রিপ্লাই দেয়, তাদের ওপর তখন সে এগ্রেসিভ হয়ে যায়। লাইব্রেরিতে যারা পড়াশোনা করেন তারা সবাই জানে এর কাহিনি, সবাই বিরক্ত। তার স্বামী না কি বিসিএস ক্যাডার এবং ম্যাজিস্ট্রেট, এগুলো পরিচয় দিয়ে সে বরাবরই অনেক মেয়েদের সঙ্গে এমন এগ্রেসিভ আচরণ করে।

    ঘটনার ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থী বলেন, লাইব্রেরিতে আমার ওপর যে হাত তুলেছে তার নাম হাসনাহেনা তমা। সুফিয়া কামাল হলে না কি তার অ্যাটাচ ছিল। তার সেশন ছিল ২০১১-১২। সে আমাদের রোকেয়া হলে প্রতিদিন নিয়ম অমান্য করে ঢুকে এবং ক্যান্টিনে খায়। আমাদের মেয়েদের হলগুলোর নিয়ম হলো, বর্তমান স্টুডেন্ট হলেও এক হলের কেউ আরেক হলে ঢুকতে পারে না। কিন্তু, সে নিয়মের তোয়াক্কা না করেই রেগুলার হলে ঢুকে। আজ সকালে আমি ক্যান্টিনে খেতে গেছি, সেও গেছে। যখন আমি দেখলাম, সে ক্যান্টিনে ডিম, পরোটা, ডাল এবং সবজি খাওয়াতে ৪০ টাকার বেশি বিল আসলেও সে মাত্র ২০ টাকা বিল দিচ্ছে, তখন আমি তাকে বলেছি, আপু আপনি এতকিছু খেয়েও যে ২০ টাকা বিল দিচ্ছেন? এটা আমি আসলে কখনোই বলতাম না, কিন্তু আমি জানি, সে হলের বাইরের, অবৈধভাবে ঢুকে এবং লাইন ব্রেক করে এসে ক্যান্টিনের খাবার নেয়। বিল ২০ টাকা দেওয়া প্রসঙ্গে আমি কথা বলায় সে ক্ষিপ্ত হয়ে হয়ে যায়। তখন সে বলে আমি ডিম বাসা থেকে নিয়ে এসেছি। এরপর আমি আর কথা না বাড়িয়ে চলে যাই ক্যান্টিন থেকে।

    এই শিক্ষার্থী তাকে মারধরের ঘটনা বর্ণনায় বলেন, হলের ওই ঘটনার পর লাইব্রেরিতে আসছি, এটা সে খেয়াল করেছে। লাইব্রেরির তিনতলায় এসে আমি পড়াশোনা করছি, এমন সময় সে এসে বলে, তোর সঙ্গে আমার কথা আছে, তুই বের হ। তার এই কথাটা একটু আক্রমণাত্মক মনে হলো। যার কারণে আমি বলেছি, না আপনার সঙ্গে আমার তো কোনো কথা নাই। আপনি যান, আমি পড়াশোনা করছি। তখন সে বলে উঠল যে, কখন বের হবি? আমি তখন বললাম, ঠিক নাই। এসময় সে বলে উঠলো, যদি এখন না বের হস, তাহলে তোকে আমি থাপড়াব এবং সঙ্গে সঙ্গেই সে আমার গালে সজোরে একটা থাপ্পড় মারে। এরপর যখন আমি দাঁড়ালাম, তখন সে আমার চুলে ধরে আমার মুখ টেবিলের মধ্যে বারবার লাগিয়ে আঘাত করতে থাকে। এ সময় আমার নাক, কপাল এবং মুখে প্রচণ্ড ব্যথা পাই। চশমায় দাগ পড়ে যায়। হাত কেটে যায়। সে আমার অনেকগুলো চুলও ছেড়ে ছিঁড়ে ফেলেছে।

    বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের আরেক নারী শিক্ষার্থী বলেন, সেন্ট্রাল লাইব্রেরিতে মেয়েদের যে কমনরুম আছে সেখানে নামাজের জায়গায় উনি সবসময় নোংরা করে রাখেন, টয়লেটের যে সাবান আছে সেই সাবান দিয়ে খাবারের বক্স ধৌত করেন এবং এই ধরনের কিছু বিষয় নিয়ে আমি তাকে বুঝিয়ে বলার পরে সে আমার ওপর রেগে ছিল। একদিন নামাজের জায়গায় তার বক্সগুলো রাখা ছিল, তখন সেগুলো আমি একটু সাইড করে রাখার কারণে, আমি যে জায়গায় আমার জায়নামাজটা রাখি সেখানে সে একটা চিরকুট রেখে আসে। যেখানে লেখা ছিল- ‘তুমি কোন মহারানি? তুমি কেন আমার বক্স সরিয়ে রাখছ? তোমাকে যদি পাই তাহলে উপর থেকে ফেলে দেব।’ এর কিছুদিন পর তাকে বলেছিলাম, আপু আপনি আমাকে এই কথাটা কেন লিখেছেন? এবং আমার জায়নামাজটা ফেলে রাখার কারণ জিজ্ঞেস করলে সে আমার ওপর চড়াও হয়ে বলতেছিল, তুই নিচে আয়, বাইরে আয়, তোরে সিঁড়ি থেকে নিচে ফেলে দেব, এই সেই। মানে আমাকে সে লাইব্রেরির ভেতরেই মারবে এরকম একটা পরিস্থিতি করেছিল।

    অভিযুক্তের স্বামী প্রক্টর বলেন, আমার স্ত্রীর চাকরির বয়স শেষ হয়ে যাচ্ছে, কোনো চাকরি হচ্ছে না দীর্ঘদিন। যার কারণে, ও একটু মানসিকভাবে বিপর্যস্ত আছে। যার কারণে হয়তো এই কাজটি হয়ে গেছে। এজন্য তার পক্ষ থেকে আমি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। সামনে এদিকে তার না আসার ব্যাপারে, আমি আমার সাধ্যানুযায়ী চেষ্টা করব।

    ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মাকসুদুর রহমান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের মতো একটা সেনসেটিভ জায়গায় এই ধরনের ঘটনা খুবই দুঃখজনক। ঘটনার পরপরই দুজনকেই আমাদের অফিসে নিয়ে আসা হয় এবং পরেই আমরা হাসনাহেনা তমার স্বামীকে ডেকে আনি। ঘটনা জানার পর তমা তার নিজের ও অন্যান্য শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি বা হলগুলোতে আর আসবেন না এই মর্মে তার স্বামী একটি লিখিত দেন এবং দুঃখপ্রকাশ করেন।

    Array
    We use all content from others website just for demo purpose. We suggest to remove all content after building your demo website. And Dont copy our content without our permission.
    আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
    Jugantor Logo
    ফজর ৫:০৫
    জোহর ১১:৪৬
    আসর ৪:০৮
    মাগরিব ৫:১১
    ইশা ৬:২৬
    সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১

    আর্কাইভ