• আজকের পত্রিকা
  • ই-পেপার
  • আর্কাইভ
  • কনভার্টার
  • অ্যাপস
  • শুধু নামেই ‘আধুনিক মেডিকেল সেন্টার’ বাস্তবে নাপা সেন্টার 

     বার্তা কক্ষ 
    01st Mar 2024 9:28 am  |  অনলাইন সংস্করণ

    জবি প্রতিনিধি: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ২০০৫ সাল থেকে দু’জন চিকিৎসক দিয়ে যাত্রা শুরু করলেও ২০২৩ সাল থেকে কর্মরত ছিলো মাত্র তিনজন। সম্প্রতি নিজ ইচ্ছায় একজন চিকিৎসক চলে গেলে ২০২৪ সালে তা দাড়িয়েছে দুইজনে। যাত্রালগ্ন থেকেই মেডিকেল সেন্টারটি অর্থ বরাদ্দের ক্ষেত্রে অবহেলার শিকার। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১৫১ কোটি ৭৩ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি)। প্রস্তাবিত বাজেটে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা খাতে ৭ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। যা মূল বাজেটের শুন্য দশমিক ৪৬ শতাংশ। শিক্ষার্থী প্রতি মাথাপিছু হারে যা মাত্র ৩৫ টাকা।

    দ্রুতই দেশের স্বনামধন্য উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হলেও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শিক্ষার্থীদের জন্য নেই উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা। শিক্ষক শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারী- সবার জন্য রয়েছে মাত্র একটি মেডিকেল সেন্টার। দৈনিক প্রায় ২০০ এর অধিক শিক্ষার্থী এখানে চিকিৎসা নিতে আসেন। কিন্তু লোকবল আর বরাদ্দের অভাবে শিক্ষার্থীদের যথাযথ সেবা দেওয়া সম্ভব হয় না।কেবল প্রাথমিক চিকিৎসাই মেলে।

    কিছু শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, এখানে মাথাব্যথা, জ্বর ও পেট খারাপের ওষুধ ছাড়া কিছুই মেলে না। মানুষের মৌলিক চাহিদা চিকিৎসাসেবার কথা উল্লেখ থাকলেও তা বাস্তবায়নে পরিপূর্ণভাবে ব্যর্থ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আবার জবির মেডিকেল সেন্টারকে কেউ কেউ মজা করে নাপা সেন্টারও বলে থাকেন।

    ২৭ ফেব্রুয়ারি সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের রফিক ভবনের নিচতলায় শারীরচর্চা শিক্ষা কেন্দ্রের বিপরীতে তিনটি কক্ষে চলছে জবি মেডিকেল সেন্টারের কার্যক্রম। চিকিৎসা সরঞ্জাম বলতে আছে রোগীদের জন্য দুটি বিছানা, রক্তচাপ মাপার দুটি ও ওজন মাপার একটি যন্ত্র। যেটি আবার কয়েকদিন পর পর থেকে দেয় ত্রুটি। মেডিকেল সেন্টারে নেই প্যাথলজিক্যাল টেস্টের কোনো যন্ত্রপাতি। সকাল ১০ টায় একজন চিকিৎসককে চিকিৎসা দিতে দেখা গেলেও আরেকজন চিকিৎসক ড. মিতা সরকার তখনও কর্মস্থলে আসেননি।

    উপস্থিত চিকিৎসক ডা. মো. রাকিব হোসেন খানের কাছে মেডিকেল সেন্টারে কত ধরনের ঔষধ এবং চিকিৎসাসেবার জিনিসপত্র আছে সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার কাছে ঔষধের সঠিক সংখ্যা জানা নেই। জানতে হলে প্রশাসনের কাছে যেতে হবে। চিকিৎসাসেবা দেওয়ার মতো কোনো ইন্সট্রুমেন্ট আমাদের নেই।বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে কিনা সেই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা এই বিষয়গুলো কর্তৃপক্ষকে আগেই অবগত করেছি।

    শিক্ষার্থীদের শুধুমাত্র প্যারাসিটামল দেওয়া হয় এবং বাকিসব বাহিরে থেকে কিনে নিতে হয়, এই ঘটনার সত্যতা জানতে চাইলে চিকিৎসক ড. রাকিব হোসেন বলেন, বর্তমানে আমাদের ঔষধের সংখ্যা একটু কম। কর্তৃপক্ষকে আমরা অবগত করেছি। যদি কোনো শিক্ষার্থীর জরুরী চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ে তাহলে আমরা প্রেসক্রিপশন লিখে দেই।

    সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের দুইজন শিক্ষার্থী গিয়েছেন মেডিকেল সেন্টারে সেবা নিতে। একজনের ছিলো মুখের ঘা এর সমস্যা এবং অন্যজনের ছিলো শ্বাসকষ্টের সমস্যা। চিকিৎসক ড. রাকিব হোসেন প্রেসক্রিপশন লিখে দিলে দেখা যায় যার মুখে ঘা এর সমস্যা ছিলো তার একটি মাত্র ব্যাথানাশক ওষুধ পাওয়া গেলেও শ্বাসকষ্ট ভুগা শিক্ষার্থীর কোনো ওষুধ মেডিকেল সেন্টারে ছিলো না। শিক্ষার্থীদের বাহিরে থেকে ওষুধ কিনার পরামর্শ দিয়ে দেন।

    এ বিষয়ে অনেক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, মেডিকেল সেন্টারটিতে বলতে গেলে চিকিৎসাসেবার কিছুই নেই। মেডিকেল সেন্টারে গিয়ে সময়মতো চিকিৎসা পাওয়া যায় না। নির্ধারিত সময় গেলে ডাক্তার পাওয়া যায় না।নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার আগে চিকিৎসক চলে যান। বিভিন্ন ধরনের সমস্যা নিয়ে গেলেও নাপা-প্যারাসিটামল ছাড়া আর কিছুই পাওয়া যায় না সেখানে। ডাক্তারের লিখে দেওয়া অধিকাংশ ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হয়।

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, আমি দাঁতের ব্যাথা নিয়ে মেডিকেল সেন্টারে গেলে আমাকে দেওয়া হয় একটি নাপা ট্যাবলেট। কোনো পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়াই চলছে মেডিকেল সেন্টারের কার্যক্রম। নাপা ট্যাবলেট খাওয়ার পরও আমার দাঁতের ব্যাথা কমেনি।

    মেডিকেল সেন্টারে ঔষধ সংকটের বিষয়টি নিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের উপ-প্রধান চিকিৎসা কমকর্তা ডা: মিতা শবনম বলেন,মেডিকেল সেন্টারে ঔষধের সংকট আছে। তবে আগামী বাজেটে ঔষধের ঘাটতি থাকবে না।সাবেক প্রয়াত উপাচার্য অধ্যাপক ড ইমদাদুল হক অসুস্থ হওয়ার আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিওথেরাপি সেন্টারের উদ্বোধন করেন যার বাজেট মেডিকেল সেন্টার থেকে নেওয়া হয়। কিন্তু পরে তা সমন্বয় করা হয় নি। বর্তমান ট্রেজারার এ বিষয়টিতে পদক্ষেপ নিয়েছেন। তবে আশা করা যাচ্ছে আগামী বাজেটে এ সংকট আর থাকবে না।

    জবি মেডিকেল সেন্টারের বিষয়ে জবি ছাত্রকল্যাণের পরিচালক অধ্যাপক ড. জি এম আলামিন বলেন, আমি নতুন দায়িত্ব গ্রহণ করেছি, ২০২৩-২৪ বাজেটে স্বাস্থ্য সেবার খাতে কত টাকা বরাদ্দ হয়েছে তা সঠিক আমার জানা নেই। আমাদের মেডিকেল সেন্টারে তিনজন চিকিৎসক থাকলেও একজন নিজ ইচ্ছায় চলে যায়। আরেকজন চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়ার জন্য আলোচনা চলছে। মেডিকেল সেন্টারে প্রয়োজনীয় ঔষধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম থাকা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। মেডিকেল সেন্টারে প্রয়োজনীয় ঔষধ না পাওয়ার বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ও উপাচার্যের সাথে আমি কথা বলবো। অপরদিকে প্রায় ২০ হাজার ছাত্রের জন্য মাত্র একটি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে সেটি বাড়ানো যায় কিনা তা নিয়েও কথা বলবো।

    বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. হুমায়ুন কবির চৌধুরী বলেন, মেডিকেল সেন্টারের খাতে টাকা না থাকায় আপাতত এ সংকট আছে। তবু একবারে বন্ধ হয়ে যায়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু কাজ অর্গানোগ্রামে আসার আগেই প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাওয়ায় সেখানে ইউজিসির কোনো বাজেট নেই। তাই মেডিকেল সেন্টারের খাত থেকে টাকা নিয়ে চালানো হয়েছে। তবে আমরা চেষ্টা করছি সেই সেন্টারগুলোকে অর্গানোগ্রামে আনতে। তাহলে আর্থিক সমস্যা সংকট দূর হবে।

    Array
    We use all content from others website just for demo purpose. We suggest to remove all content after building your demo website. And Dont copy our content without our permission.
    আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
    এই বিভাগের আরও খবর
     
    Jugantor Logo
    ফজর ৫:০৫
    জোহর ১১:৪৬
    আসর ৪:০৮
    মাগরিব ৫:১১
    ইশা ৬:২৬
    সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১

    আর্কাইভ