সমুদ্রপথে ইতালিতে আসা আশ্রয়প্রার্থীদের আলবেনিয়ায় রেখে আবেদন যাচাই-বাছাইয়ের লক্ষ্যে দুই দেশের মধ্যে হওয়া চুক্তির অনুমোদন দিয়েছে আলবেনিয়ার সাংবিধানিক আদালত।
গত বছর সই হওয়া এ চুক্তির তীব্র সমালোচনা করছে আলবেনিয়া ও ইতালির বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। বেশ কিছু মানবাধিকার সংগঠনও এ চুক্তির বিরোধিতা করছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আলবেনিয়ার সাংবিধানিক আদালতে গড়ায় চুক্তির বিষয়টি।
বিবৃতিতে আদালত জানায়, এ চুক্তির ফলে আলবেনিয়ার ভৌগোলিক অখণ্ডতা হুমকির মুখে পড়ছে, বিষয়টি এমন নয়।
চুক্তি অনুযায়ী, অনিয়মিত পথে সমুদ্র পাড়ি দিয়ে ইতালিতে আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের আলবেনিয়ায় পাঠানো হবে। প্রাথমিকভাবে তাদের আশ্রয় প্রক্রিয়া চালিয়ে নিতে দুটি কেন্দ্র খোলার বিষয়ে চুক্তি করে আলবেনিয়া-ইতালি। চুক্তি অনুযায়ী আশ্রয়ের আবেদন যাচাই-বাছাইয়ের সময়ে আশ্রয়প্রার্থীরা আলবেনিয়াতে অবস্থান করবেন।
আলবানিয়ার শেংজিন বন্দরের কাছে কেন্দ্র দুটি স্থাপন করা হবে, যেখানে আশ্রয়প্রার্থীদের আবেদন নিবন্ধিত হবে। ইতালি সরকারের তত্ত্বাবধানে কেন্দ্র দুটি পরিচালিত হবে। তাছাড়া আবদন যাচাই-বাছাইয়ের সময়ে তাদের জায়গা দিতে বসতি স্থাপন করা হবে।
পাঁচ বছর মেয়াদি এ চুক্তি বাস্তবায়নে ৬৫০ মিলিয়ন ইউরো খরচ হবে।
তার আগে ইতালির সংসদের নিম্নকক্ষে পাস হয় চুক্তিটি। যদিও ইতালির সংসদে বিরোধী সদস্যরা এ চুক্তির জন্য প্রধানমন্ত্রী জর্জা মেলোনির সমালোচনা করেন। তাদের দাবি, চুক্তিটিকে ‘নির্বাচনী প্রপাগান্ডা’ হিসেবে ব্যবহার করছে সরকার। তারা বলছে, সরকারের এ প্রকল্প অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ইতালিতে আগমন কমাবে, এমন সম্ভাবনা কম। তাছাড়া এটি একটি ব্যয়বহুল প্রকল্প বলেও মত দেন তারা।
অবশ্য চুক্তিটি পাসের জন্য এখন দেশটির আইনসভার উচ্চকক্ষ বা সিনেটে পাঠানো হবে। ধারণা করা হচ্ছে চুক্তিটির অনুমোদন দেবে সিনেট।
এদিকে আলবেনিয়ার ডানপন্থি রাজনৈতিক দলগুলোও সরকারের এ চুক্তির সমালোচনা করছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী এডি রামার সমালোচনা করে ডানপন্থি দলের পক্ষ থেকে বলা হয়, এ চুক্তিতে স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে এবং এটি দায়িত্বহীন এক চুক্তি, যা দেশের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি।
সমালোচনা করছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থাও। বেসরকারি সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল রেসকিও কমিটি বলছে, এমন চুক্তি অমানবিক।
বিভিন্ন মহলের সমালোচনার মুখে আলবেনিয়া সরকার জানায়, এ চুক্তি ইউরোপের দেশটির সঙ্গে হওয়া একটি চুক্তির সঙ্গে সমন্বয় রেখে এবং আলবেনিয়ার সংবিধানের সঙ্গে সংগতি রেখেই করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাওলান্ত বালা বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, আমরা আলবেনিয়ার একখণ্ড ভূমিও বিক্রি করছি না।
তিনি বলেন, আমরা ইতালিকে একটু জায়গা দিচ্ছি, যেমনটা আমরা বিদেশি দূতাবাস স্থাপনের ক্ষেত্রে দিয়ে থাকি।
সূত্র : ইনফোমাইগ্রেন্টস
Array