শরীয়তপুর প্রতিনিধি: শরীয়তপুরে মেয়েকে অপহরণের অভিযোগ এনে কোর্টে মামলা করেছেন ফাহিমা আক্তার নামে এক মা। এদিকে, বর ফরহাদ দেওয়ান এর দাবি অপহরন নয়, ভালোবেসে বিয়ে করেছেন তার মেয়ে জেরিন ইসলামকে।
এদিকে, মামলার ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বর ফরহাদ দেওয়ানের পরিবারের সদস্যরা।
শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার পুরান দিনারা গ্রামের বাসিন্দা আ:কাদের দেওয়ানের ছেলে ফরহাদ দেওয়ান (২০)। গত তিনমাস আগে ভোজেশ্বর ইউনিয়নের আচুড়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম সিকদারের মেয়ে জেরিন ইসলামকে নিয়ে পালিয়ে বিয়ে করেছেন।
এ ঘটনায় গত (৭ নভেম্বর ২০২৩ ) নাড়ি ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যল শরীয়তপুর আদালত মেয়েটির মা ফাহিমা আক্তার বাদী হয়ে মেয়েকে অপহরণের অভিযোগ এনে মামলা করেছে। মামলায় ফরহাদ দেওয়া,বাবা আ:কাদির দেওয়ান,মা – ফরিদা পারভীনকেও আসামি করা হয়েছে। তারপর থেকে পুলিশের ভয়ে শুধু ফরহাদ দেওয়ান নয় পালিয়ে বেড়াচ্ছেন পরিবারের সব সদস্য।
ফরহাদ দেওয়ানের বাবা কাদের দেওয়ান বলেন, আমি একজন প্রবাসী আমি গত বিশ বছর ধরে প্রবাসে থাকি। ঘটনার দিন রাতে ছেলে ফরহাদ ফোনে কল দিয়ে বললো, আব্বা তোমাদের না জানিয়ে আমি একটা কাজ করে ফেলেছি। আমাকে মাফ করে দিও। আমি বললাম কি করেছিস? ছেলে উত্তর দিলো আমি বিয়ে করে ফেলেছি। জিজ্ঞেস করলাম তুই এখন কোথায়? আমি এক জায়গায় আছি। তুমি চিন্তা করো না। এই বলে কলটা কেটে দিল। আবার কল দিলে ফোন বন্ধ পাই।
কাদের দেওয়ান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘কোন বাবা- মা চায়না তাদের সন্তান পালিয়ে বিয়ে করুক। কিন্তু তারপরও বর্তমান সময়ে প্রায়ই শোনা যায় এমন ঘটনা। কোন বাবা-মা কি ছেলেকে মেয়ে অপহরণের জন্য সহযোগিতা করে? সবকিছু জানার পরও মেয়ের পরিবার আমাদের ওপর মামলা করেছে। পুলিশ আমার বাড়িতে এসে আমাদের খোঁজে। এই বয়সে আমাদের পালিয়ে থাকতে হচ্ছে। সন্তান জন্ম দিয়ে মনে হয় পাপ করেছিলাম। এজন্য এমন শাস্তি ভোগ করছি।’
কান্না জড়ানো কণ্ঠে কাদের দেওয়া বলেন, ‘কখনো আত্মীয় স্বজনদের বাসায় বেড়াতে গিয়ে একদিনের বেশি থাকিনি। এখন অন্যের বাড়িতে পালিয়ে থাকে আমার স্ত্রী। বয়স হয়েছে আমার স্ত্রী’র। শরীরটাও ভালো না। এভাবে পালিয়ে থাকতে কষ্ট হয়।’ আমি তো বাংলাদেশ নেই আমার নামে কেন মামলা হলো। আমি এর সুষ্ঠ তদন্ত চাই।
কাদের দেওয়ানের ছেলে ফরহাদ দেওয়ান মুঠোফোনে বলেন, ‘আমি জেরিনকে অপহরণ করিনি। আমরা ভালোবেসে বিয়ে করেছি।’ আমাদের তিনবছর ধরে সম্পর্ক । আমরা দুজন দু’জনকে ভালোবাসি।
বিষয়টি নিয়ে মামলার বাদী ফাহিমার মেয়ে জেরিন নিজের ফেইসবুক টাইমলাইনে একটি ভিডিও পোস্ট করেছে। ভিডিওতে দেখা গেছে জেরিন বলেছেন, ‘আমি নিজের ইচ্ছায় পালিয়ে বিয়ে করে সংসার করছি। ভিডিওতে সে তার পরিবারকে অনুরোধ করেছে যাতে তার শ্বশুরের পরিবারের কাউকে হয়রানি না করা হয়।’
এ বিষয়ে কথা বলতে মামলার বাদী ফাহিমার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি অসুস্থ মামলার বিষয় এখন কথা বলতে চাই না।আপনি পরে ফোন দেন। পরবর্তীতে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
ভেদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মিন্টু মন্ডল জানান, জেরিন নামে এক কলেজ ছাত্রী অপহরণের অভিযোগে কোর্টে মামলা হয়েছে। মেয়েটিকে উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত আছে। ভিকটিম উদ্ধারের পর তদন্ত করে বোঝা যাবে কি ঘটনা।
Array