পবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আরাফাত ইসলাম খান সাগর ও তার অনুসারী কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে চাঁদাবাজি, মারধর এবং প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় এবং উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
জানা যায়, গতকাল(মঙ্গলবার) রাত নয় (৯:০০) টার দিকে পবিপ্রবি ক্যাম্পাসে নির্মাণাধীন শেখ রাসেল হলের সামনে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী এনামুল হক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মের্সাস আমির ইন্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন এর প্রজেক্ট ম্যানেজার ও তার সহযোগীরা। অপরদিকে অভিযুক্তরা হলেন পবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আরাফাত ইসলাম খান সাগর ও তার অনুসারী সাবেক সহ-সভাপতি গোলাম রব্বানী সুহৃদ , ১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ইমরান এবং বহিরাগত বসির খান সহ অজ্ঞাতনামা আরো পাঁচ-ছয়জন। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে তারা শেখ হাসিনা ও শেখ রাসেল হলের কাজের জন্য চাঁদা দাবি করেছেন।
থানায় এবং উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়,” মঙ্গলবার আনুমানিক রাত ৯:০০ টায় আরাফাত ইসলাম খান সাগর এর নেতৃত্বে গোলাম রব্বানী সুহৃদ সহ অজ্ঞাতনামা ৯/১০ জন ব্যক্তি আমাদের কন্সট্রাকশনের কাজের জন্য আনা রড একটি ভ্যান গাড়ীতে উঠাইয়া নিয়া যাওয়ার সময় আমি বাঁধা দিলে গোলাম রব্বানী সুহৃদ জানায় এটি তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস, এখানে কন্সট্রাকশনের কাজ করতে হলে টাকা দিতে হবে, সভাপতি আরাফাত ইসলাম খান সাগর রড নিয়ে যেতে বলেছে তোর এতো কিছু জানার দরকার নেই। টাকা না দিলে রড নিয়ে যাবে। আমি ঘটনার বিষয় মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আমার ঠিকাদার মোঃ আমির হোসেনকে জানাইতে চাইলে আসামী গোলাম রব্বানী সুহৃদ আমার মোবাইল নিয়া যায়। এসময় ইমরান হোসাইন কাছে থাকা লোহার রড দিয়া তারা আমাদেরকে পিটাইয়া ফুলা জখম করে এবং প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এছাড়াও বিভিন্ন সময় আরাফাত ইসলাম খান সাগর শেখ হাসিনা ও শেখ রাসেল হলে কাজের জন্য চাঁদা দাবি করে এবং হুমকি-ধামকি দিয়েছেন যার প্রমাণস্বরূপ আমার কাছে চাঁদা চাওয়ার অডিও এবং ভিডিও রেকর্ড রয়েছে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে সাগরের অনুসারী সুহৃদ বলেন,” “এই বিষয়ে অভিযুক্ত গোলাম রাব্বানী সুহৃদ বলেন, এই অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাড়ির অবৈধ নেইম প্লেট, বেপরোয়াভাবে ড্রাইভ, মেয়েদেরকে উক্তত সহ নানা অনিয়মের বিষয়ে কথা বলতে গেলে ম্যানেজার এনামুল আমাদের মাররে উদ্ধত হন। আত্নরক্ষার জন্য হলে ফোন দিলে তারা পালিয়ে যায়।”
পবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান তারেক বলেন,”আমি বাড়ি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরার পথে ঘটনাটি শুনতে পাই। এরপর ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের থেকে শুনি কিছু শিক্ষার্থী তাদের সাথে ঝামেলায় লিপ্ত হয়েছে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে পবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আরাফাত ইসলাম খান সাগর বলেন, “আমি যেখানে ক্যাম্পাসে নেই এমন অবস্থাতে একটি ঘটনাতে কিভাবে আমাকে দোষারোপ করতে পারে? নির্বাচনের আগে এ ধরনের অভিযোগ ছাত্রলীগকে বিতর্কিত করে জামায়াত-বিএনপির নীল-নকশা বাস্তবায়নের শামীল। ”
দুমকী থানার অফিসার ইনচার্জ তারেক মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান বলেন, “আমরা অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ”
পবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড.স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত লিখিত অভিযোগ পাবার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটিতে এবিষয় উত্থাপন করা হবে। ঘটনার সুষ্ঠু বিচার হবে বলে জানান তিনি।”
Array