• আজকের পত্রিকা
  • ই-পেপার
  • আর্কাইভ
  • কনভার্টার
  • অ্যাপস
  • নওগাঁয় দিবর দিঘির ‘রহস্যময়’ স্তম্ভ 

     বার্তা কক্ষ 
    24th Sep 2023 2:52 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

    নওগাঁ প্রতিনিধি: চারপাশে সবুজের সমাহার। মাঝখানে সুবিশাল জলাশয়। সেই জলাশয়ের ঠিক মাঝখানে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে ‘রহস্যঘেরা’ এক স্তম্ভ। নওগাঁ জেলার পত্নীতলা উপজেলায় এই জলাশয় ‘দিবর দিঘি’ নামে পরিচিত। দিবর ইউনিয়নের দিবর গ্রামের এই দিঘি ও স্তম্ভ ঘিরে অনেক লোককথার প্রচলন আছে। এই স্তম্ভের নির্মাণকাল বা নির্মাতা সম্পর্কে নির্দিষ্ট কিছুই জানা যায়নি। এ নিয়ে প্রত্নতাত্ত্বিক ও ইতিহাসবিদদের রয়েছে নানা মত।

    ইতিহাসবিদদের মতে, দিঘিটি কৈবর্ত সামস্ত রাজাদের আমলে নির্মাণ করা হয়ে থাকতে পারে। দিঘির মাঝখানে গ্রানাইট পাথরের অখণ্ড স্তম্ভের গঠনশৈলী ও নকশা বিশ্লেষণ করে প্রত্নতত্ত্ববিদেরা মত দিয়েছেন, স্তম্ভটি খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় শতকে নির্মিত হতে পারে। দিঘি আগে খনন করা হয়েছে, নাকি সেখানে পাথরের স্তম্ভটি আগে স্থাপন করা হয়েছে—সেটি নিয়েও প্রত্নতাত্ত্বিক ইতিহাসবিদদের মধ্যে নানা মত আছে।

    গবেষণালব্ধ তথ্য-উপাত্তের আলোকে নওগাঁ সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ শামসুল আলম রচিত ইতিহাস ও ঐতিহ্যে নওগাঁ গ্রন্থে দিবর দিঘির বিশদ বর্ণনা তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সংস্কৃত ধীবর (কৈবর্ত) শব্দ থেকে দিবর শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে। এ ছাড়া দিবর শব্দের উৎপত্তি নিয়ে প্রত্নতত্ত্ববিদ স্যার আলেকজান্ডার কানিংহামের মত উল্লেখ করে “দিবর’ নামটি পাল রাজা দেবপালের অপভ্রংশ বলে তিনি মনে করেন।

    প্রায় ২০ একরের (৬০ বিঘা) বর্গাকার দিঘির ঠিক মাঝখানে অবস্থিত স্তম্ভটি মাথা উঁচু করে যেন বিজয়ের স্মারক হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। এ স্তম্ভটি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য সম্পর্কে ইতিহাসবিদদের নানা মত রয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, কৈবর্ত বিদ্রোহের সময় পাল রাজবংশের রাজা দ্বিতীয় মহিপালকে পরাজিত ও হত্যার সাফল্যকে স্মরণীয় করে রাখতে কৈবর্ত সামন্ত রাজা দিব্যক এই জয়স্তম্ভসহ দিঘিটি নির্মাণ করেন। আবার কেউ কেউ বলছেন দিব্যকের রাজত্বকালে পাল যুবরাজ রামপাল বরেন্দ্র উদ্ধারের চেষ্টা করে দিব্যকের কাছে পরাজিত হন। দিব্যক সেই সাফল্যের স্মৃতি রক্ষায় এই স্তম্ভ নির্মাণ করেন। প্রত্নতাত্ত্বিকদের মতে কৈবর্ত রাজা ভীম চাচা দিব্যকের স্মৃতি রক্ষায় এই স্তম্ভ নির্মাণ করেন।

    এ জন্য এটি দিব্যক জয়স্তম্ভ হিসেবেও পরিচিতি পায়। আট কোণ বিশিষ্ট গ্রানাইট পাথরের স্তম্ভটির উচ্চতা প্রায় ৩১ ফুট ৮ ইঞ্চি। এর ব্যাস ১০ ফুট ৪ ইঞ্চি। স্তম্ভটির গায়ে কোনো লিপি নেই। স্তম্ভের উপরিভাগ খাঁজকাটা অলংকরণ দ্বারা সুশোভিত।

    প্রত্নতত্ত্ববিদ আলেকজান্ডার কানিংহাম ১৮৭৯ সালে স্তম্ভটি পরিদর্শন করেন। অবশ্য তাঁর বর্ণনা মতে, স্তম্ভটিতে নয়টি কোণ আছে। এক কোণ থেকে আর এক কোণের দূরত্ব প্রায় ৩০ সেন্টিমিটার। স্তম্ভের ওপরের অংশে আছে পরপর তিনটি বলয়াকারের স্ফীত রেখার অলংকরণ। সবচেয়ে ওপরের অংশে আছে আমলকের অলংকরণ আর শীর্ষদেশে মুকুটজাতীয় অলংকরণ।

    শামসুল আলম বলেন, দিঘিটির সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো, এর মাঝাখানে স্থাপিত গ্রানাইট পাথরের স্তম্ভ। যে উদ্দেশ্যে এই স্তম্ভ নির্মাণ করা হোক না কেন, এটি আজও অম্লান।

    স্থানটি দেখতে দেশ-বিদেশের বহু পর্যটক আসেন। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পাওয়া গেলে এটি আরও আকর্ষণীয় ও মনোরম হয়ে উঠবে। কবি ও গবেষক আতাউল হক সিদ্দিকী বলেন, দিবর দিঘির দিব্যক জয়স্তম্ভ বাঙালির শৌর্যবীর্যের প্রতীক। ঐতিহাসিক গুরুত্ব ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বিবেচনায় দিঘিটিকে আরও পরিকল্পিতভাবে সংরক্ষণ করা উচিত।

    সরকারি মালিকানার ঐতিহাসিক এই দিঘির দেখভাল করে নওগাঁ জেলা প্রশাসন। দিঘিটি ঘিরে পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে বেশ কিছু উন্নয়নকাজ হয়েছে। দিঘির পশ্চিম ও পূর্ব অংশে পাড় থেকে দূরে সামাজিক বনায়ন করা হয়েছে। দিঘির পশ্চিম ও পূর্ব পাড়ে রয়েছে শানবাঁধানো ঘাট। পাড়ে ইট বিছিয়ে হাঁটার পথ করা হয়েছে। দিঘির স্বচ্ছ জলরাশির সৌন্দর্য উপভোগ এবং কাছ থেকে স্তম্ভটি দেখার সুযোগ করে দিতে আছে ইঞ্জিনচালিত নৌকার ব্যবস্থা।

    বর্তমানে জেলা প্রশাসন থেকে ইজারা নিয়ে স্থানীয় লোকজন দিঘিতে মাছ চাষ করছেন। , মাছের খাবারে দিঘির পানি নষ্ট হচ্ছে। দিঘিটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিবেচনা এবং পর্যটক আকর্ষণে মাছ চাষ বন্ধ রাখা উচিত বলে মনে করেন অনেকে। আর দিঘির পাড়ে আরও বেশি , গাছ লাগিয়ে সবুজ বেষ্টনী গড়ে তোলারও পরামর্শ এসেছে।

    Array
    We use all content from others website just for demo purpose. We suggest to remove all content after building your demo website. And Dont copy our content without our permission.
    আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
    এই বিভাগের আরও খবর
     
    Jugantor Logo
    ফজর ৫:০৫
    জোহর ১১:৪৬
    আসর ৪:০৮
    মাগরিব ৫:১১
    ইশা ৬:২৬
    সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১

    আর্কাইভ

    September 2023
    M T W T F S S
     123
    45678910
    11121314151617
    18192021222324
    252627282930