• আজকের পত্রিকা
  • ই-পেপার
  • আর্কাইভ
  • কনভার্টার
  • অ্যাপস
  • যোগাযোগ সংকটে পিছিয়ে পড়ছে ঐতিহ্যবাহী ভাসমান বাজার 

     বার্তা কক্ষ 
    10th Sep 2023 12:12 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

    পিরোজপুর প্রতিনিধি: সূর্যের আলো ফুটতেই শুরু হয় ভাসমান বাজার। আবার সূর্যের তাপ বাড়ার আগেই শেষ হয়ে যায় এই হাঁট। পণ্য বিক্রি করতে ও কিনতে নৌকায় ভিড় জমান ক্রেতা-বিক্রেতারা।

    পণ্য বিক্রি হলে খালি নৌকা নিয়ে বাড়ি ফেরে বিক্রেতারা। আর ক্রেতারা নৌকা ভরে পণ্য কিনে নিয়ে যান।

    বলছিলাম পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার কলারদোয়ানিয়া ইউনিয়নে বেলুয়া নদীর উপর অবস্থিত অর্ধশত বছরের বেশি সময়ের ঐতিহ্যবাহী এক ভাসমান বাজারের কথা। যেখানের সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের দাবি সড়কপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হলে তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য আরও প্রসারিত হবে। এদিকে সংশ্লিষ্ট জেলা ব্যবসায়ী সমিতি বলছে, সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার দ্রুত উন্নয়ন করা গেলে বাড়বে সবজি রপ্তানি।

    সরেজমিনে দেখা যায়, বেলুয়া নদী পিরোজপুর জেলার দুইটি ও গোপালগঞ্জের একটি উপজেলাকে বিভক্ত করেছে। এই নদীর পশ্চিম পাড়ে নাজিরপুর উপজেলার কলার দোয়ানিয়া ইউনিয়ন, পূর্ব পাড়ে নেছারাবাদ উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়ন আর উত্তরে গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া উপজেলা এবং উত্তর পূর্বে রয়েছে নাজিরপুরের কাশ্মীর। এই কাশ্মীরকে ঘিরেই ঐতিহ্যবাহী বাজারটি বসে শত বছরের বেশি সময় ধরে। কাক ডাকা ভোরে এই বাজার ভাসতে ভাসতে শুরু হয় বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আবার শেষও হয়ে যায়। নদীপথে পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার বৈঠাকাটা বাজার সংলগ্ন বেলুয়া নদীতে সপ্তাহের শনিবার ও মঙ্গলবার বসে এই ভাসমান হাট।

    সকাল ৭টার মধ্যেই এই ভাসমান হাট সরগরম হয়ে ওঠে। বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যবসায়ীরা ট্রলার ও বড় নৌকা নিয়ে কৃষকদের কাছ থেকে কৃষিপণ্য কেনেণ। যেখানে বেগুন, মরিচ, আলু, মিষ্টি কুমড়া, লাউ, করল্লা, কচু ও নানা জাতের ঋতুকালীন শাকসবজি ও চারা নিয়ে কৃষকেরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে দরদাম করেন। হাঁটের এক পাশে রয়েছে ধান, চাল, মুড়ি ও নারকেলের হাট। এই অঞ্চলে উৎপাদিত কৃষিপণ্য নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি করা হয়।

    পিরোজপুর, নাজিরপুর, নেছারাবাদ, চিতলমারী, মোড়েলগঞ্জ, বাগেরহাটসহ বিভিন্ন স্থানের কৃষকরা তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য এ বাজারে নিয়ে এসে পাইকারি বিক্রি করেন। নদীর মধ্যে প্রতিটি সবজি ভরা নৌকা যেন মনে হয় একটি দোকান ঘর। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার লোকজন দৃষ্টিনন্দন এ ভাসমান বাজার দেখতে আসেন।

    ব্যবসায়ী ইউসুফ শেখ বলেন, ভোরেই এ বাজারে কেনা-বেচা শুরু হয়। আমরা বিভিন্ন এলাকা থেকে বিভিন্ন পণ্য ক্রয় করে এখানে এনে বিক্রি করি। বর্তমানে ১৪০০ টাকা মণে কুমড়া বিক্রি করছি। অনেক ক্রেতা রয়েছে যারা দরদাম করছে, দামে পছন্দ হলে দিয়ে দেব।

    সবজি বিক্রেতা কবির হোসেন বলেন, আমাদের এই বৈঠাকাটা বাজার ভোরে শুরু হয় ৮টা-৯টার মধ্যেই শেষ হয়ে যায়। এখানে দূর-দূরান্ত থেকে বহু ব্যবসায়ীরা আসেন। তবে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় আমাদের অসুবিধায় পড়তে হয়। দক্ষিণ অঞ্চল ও উত্তর অঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকায় এই বাজার থেকে পণ্য নিয়ে বিক্রেতারা চলে যান। যোগাযোগ ব্যবস্থায় সমস্যায় থাকার কারণে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের বর্তমানে দুরবস্থা। সড়ক ব্যবস্থা যদি একটু ভালো হতো তাহলে আরও দূর-দূরান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা আসতো। বর্তমানে নৌকাই আমাদের একমাত্র ভরসা।

    পাইকারি ব্যবসায়ী রাসেল হাওলাদার বলেন, এই বাজারে ভাসতে ভাসতেই কেনা-বেচা হয়। বহু বছর আগেই এই বাজারের জন্ম হয়েছে। বিভিন্ন সময়োপযোগী শাকসবজিসহ কৃষিপণ্য আমরা এখানে কেনা-বেচা করি। বিভিন্ন অঞ্চল থেকে নৌকা এবং ট্রলার নিয়ে বিক্রেতা ও ক্রেতারা আসেন ক্রয় বিক্রয় করতে। এ বাজার থেকে তারা কিনে ঢাকা বরিশাল পটুয়াখালীসহ অন্যান্য এলাকার বাজারে পাইকারি এবং খুচরা বিক্রি করে।

    ইজারাদার বিল্লাল শরীফ বলেন, এই ভাসমান বাজারে বহু মানুষ পণ্য বিক্রি করতে নিয়ে আসে, আবার অনেকে কিনে নিয়ে যায়। ঢাকা খুলনা বরিশালসহ বিভিন্ন জায়গায় এখানকার পণ্য পাইকারি ও খুচরা বিক্রি হয়। এখানে বিভিন্ন পদের নিত্য প্রয়োজনীয় সবজি ও চারা বিক্রি হয়।

    বরিশাল থেকে আসা পর্যটক শাহিন আহমেদ জয় বলেন, ভোরে চারটায় রওনা দিয়েছি। তিন থেকে চার ঘণ্টা লাগে এখানে আসতে। আমরা এসে অল্প কিছু পেয়েছি। আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছি বৈঠাকাটা বাজার আছে, যেটা ভাসমান। এজন্যই দেখতে আসা, খুবই ভালো লাগছে। বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে ঘুরতে এসেছি। চাইলে এখানে ঘুরতে আসতে পারেন সবাই।

    জেলা ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাওলা নকীব বলেন, পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলায় ভাসমান সবজির হাঁটটি বেলুয়া নদীতে দুদিন বসে। এখানে খামারি ও ব্যবসায়ীরা প্রচুর সবজি নিয়ে আসেন। যেগুলো এখান থেকে ঢাকা, বরিশাল, খুলনা গোপালগঞ্জসহ দেশের বিভিন্নস্থানে বিক্রি হয়। তবে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা খুব উন্নত না হওয়ায় নৌপথেই যোগাযোগটা বেশি। এ কারণে সবজি ব্যবসায়ীরা আবার সমস্যায় পড়ে। এছাড়া সবজি যারা নিয়ে আসে তারা বিক্রি করতে না পেরে অনেক সময় ফেরত নিয়ে যান। সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থাটা যদি উন্নত হলে তাহলে এখানে অনেক ব্যবসায়ীর সমাগম হবে। ট্রাকে ভরে বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ বাড়বে। এই সবজি বেশি বিক্রি হলে চাষিরাও তাদের উৎপাদন বাড়াবে। স্থানীয় সরকার বিভাগের দৃষ্টি আকর্ষণ করব, যাতে এই সড়কটি দ্রুত পরিদর্শন করে বর্তমান সময় উপযোগী ও প্রশস্ত করেন। তাহলে পণ্য সরবরাহ করা যাবে বিভিন্ন এলাকায় দ্রুত সময়ে।

    Array
    We use all content from others website just for demo purpose. We suggest to remove all content after building your demo website. And Dont copy our content without our permission.
    আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
    এই বিভাগের আরও খবর
     
    Jugantor Logo
    ফজর ৫:০৫
    জোহর ১১:৪৬
    আসর ৪:০৮
    মাগরিব ৫:১১
    ইশা ৬:২৬
    সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১

    আর্কাইভ

    September 2023
    M T W T F S S
     123
    45678910
    11121314151617
    18192021222324
    252627282930