জেলা প্রতিনিধি, শরীয়তপুর; শরীয়তপুরের নড়িয়ায় একটি স্কুলের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ করেছে দুর্বৃত্তরা। এতে স্কুল ও এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসতে ভয় পাচ্ছে বলে জানিয়েছেন অভিভাবকরা। এঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের নামে মামলা দায়ের করেছেন।
ঘটনাটি গত শনিবার (২৬ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে শরীয়তপুরের নড়িয়া বিহারীলাল উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে ঘটেছে। ওইদিন স্কুল বন্ধ থাকলেও তুলনামূলক দুর্বল শিক্ষার্থীসহ অন্যান্যরা অতিরিক্ত ক্লাসের জন্য বিদ্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন।
স্কুল কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষার্থীদের সূত্রে জানা গেছে, কিছু শিক্ষার্থী অতিরিক্ত ক্লাস করার জন্য গত শনিবার স্কুলে উপস্থিত ছিল। এসময় দুর্বৃত্তরা স্কুলের সামনে বোমা বিস্ফোরণ করেছে। এতে ওই শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা ভীত হয়ে পড়েছে। এঘটনা স্কুলের অন্যান্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে জানাজানি শিক্ষার্থীরা ভীত হয়ে পড়েছে। এতে শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসতে ভয় পাচ্ছে।
ককটেল বিস্ফোরণের প্রতক্ষ্যদর্শী আশা মনি বলেন, অতিরিক্ত ক্লাস শেষ করে আমি ও আমার দুই বান্ধবী স্কুলের গেটে গেলে হঠাৎ করে দেখি একজন লোক গালাগাল করতেছেন। আমরা ভেবেছিলাম অটোরিকশার সাথে কোনো সমস্যা হয়েছে। কিন্তু পরক্ষণেই কয়েকটি বোমা বিস্ফোরণ হওয়ার শব্দ পেয়ে আমরা ভয়ে পালিয়ে নদীর পাড়ের ব্রিজের কাছে চলে যাই। এরপর স্কুলের আশে পাশেসহ সব জায়গায় অনেক লোকজন জড়ো হলে আমার একটু সাহস করে আবার স্কুলে এসে দ্রুত স্কুলের পাশে থাকা আমার নানু বাড়িতে চলে যাই। আমার ওই দুই বান্ধবী বোমার শব্দে ভয় পেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তারা আজ দুই দিন হলো স্কুলে আসেনি।
হাসান নামে অন্য একজন শিক্ষার্থীরা জানান, আমরা নিরাপদে স্কুলে আসতে চাই। যারা স্কুলের সামনে বোমা মেরে পরিবেশ নষ্ট করেছে তাদের চিহ্নিত করে শাস্তির দাবি জানাই।
আব্দুস সালাম হাওলাদার নামে একজন অভিভাবক বলেন, আমার ছেলে আগামি বছর পরীক্ষা দিবে। গত শনিবার নাকি স্কুলের সামনে বোমা বিস্ফোরণ হয়েছে। ওই ঘটনায় আমার ছেলে নির্জন ভীত হয়ে পড়েছে। ও কিছুতেই স্কুলে আসতে সাহস করতেছিল না। পরে বাধ্য হয়ে আমি নিজে ছেলেকে নিয়ে স্কুলে এসে গেটের ভেতর পাঠিয়ে দিয়ে বাহিরে দাঁড়িয়ে আছি, যেন ছেলে ভয় না পায়। যারা বোমা বিস্ফোরণ করে পড়াশোনার পরিস্থিতি অস্বাভাবিক করে তুলেছে, তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই।
নড়িয়া বিহারীলাল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মিন্টু চন্দ্র রায় বলেন, অফিশিয়াল কাজের জন্য ওইদিন আমি স্কুলের অফিসে অবস্থান করতেছিলাম। দুপুরের দিকে হঠাৎ করে স্কুলের বাহিরের অংশে বিকট শব্দে বোমা বিস্ফোরণের আওয়াজ পাই। এসময় বিদ্যালয়ে কিছু শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিল। বোমার শব্দে বাচ্চারা ভীত হয়ে পড়েছিল। স্কুলের সিসিটিভি নষ্ট থাকায় কে বা কারা এঘটনা ঘটিয়েছে তা আমি জানি না। আশা করছি, পুলিশ তদন্ত করে দোষীদের চিহ্নিত করবে।
এবিষয়ে নড়িয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান বলেন, গত শনিবার স্কুলের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় নড়িয়া থানা পুলিশের উপপরিদর্শক আবুল কালাম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। ককটেল বিস্ফোরণ করে দুর্বৃত্তরা দ্রুত চলে যাওয়ার কারণে মামলায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে শিগগিরই আইনের আওতায় নিয়ে আসবে।
Array