রাহাত হোসেন, হাবিপ্রবি প্রতিনিধি: হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরাম কর্তৃক শোকাবহ আগস্ট উপলক্ষ্যে “আগস্ট, বঙ্গবন্ধু ও আজকের বাংলাদেশ” শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুর ২.৩০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়াম-২ তে উক্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনায় সভা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হাবিপ্রবির মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম. কামরুজ্জামান, মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস-চ্যান্সেলর, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) এর বর্তমান চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আ.আ.ম.স. আরেফিন সিদ্দিক। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরাম এর সভাপতি প্রফেসর ড. বলরাম রায়। সঞ্চালনা করেন প্রফেসর ড. মো. সাদেকুর রহমান। সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
আলোচনা সভার শুরুতেই শোকাবহ আগস্ট উপলক্ষ্যে দাড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। পরবর্তীতে প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরাম এর নেতৃবৃন্দ, দিনাজপুর জেলা বঙ্গবন্ধু পরিষদ এবং বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদের নেতৃবৃন্দ আলোচনা সভায় বক্তব্য প্রদান করেন।
আলোচনা সভায় মুখ্য আলোচক বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস-চ্যান্সেলর, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) এর বর্তমান চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আ.আ.ম.স. আরেফিন সিদ্দিক বলেন, এ দেশ স্বাধীন দেশ, স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে বিশ্ব দরবারে আমরা মাথা উঁচু করে বসবাস করছি। বঙ্গবন্ধু যদি স্বাধীন দেশ দিয়ে না যেতেন তাহলে আজ এখানে দাঁড়িয়ে আমরা কথা বলতে পারতাম না। তিনি বলেন, জাতির পিতার দেয়া ৭ মার্চ এর ভাষণই মূলত ছিল স্বাধীনতার ঘোষণা। আজকের পাকিস্তান দিকে তাকিয়ে দেখেন তাদের কি অবস্থা , বঙ্গবন্ধু যদি ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন না করতেন তাহলে আমাদের অবস্থাও আজ পাকিস্তানের মতো হতো । তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আমাদের বিরুদ্ধে থাকলেও তাদের দেশের জনগন ও মিডিয়া আমাদের পক্ষে ছিল। ভারত, তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নসহ অনেক দেশ আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জোরালো ভাবে ছিল। সোভিয়েত ইউনিয়ন তাদের ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করে সব সময় আমাদের পাশে ছিল। এসব ইতিহাস আমাদের মনে রাখতে হবে। বঙ্গবন্ধুর ঋণ আমরা কোনদিন শোধ করতে পারবো না। বঙ্গবন্ধু ছিলেন বিশ্ব নেতা ও বিশ্ববন্ধু। ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে স্বাধীন বাংলাদেশে আমরা দাঁড়িয়ে আছি। এটি ভুলে গেলে চলবে না।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে হাবিপ্রবির মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম. কামরুজ্জামান বলেন, আগস্ট মাস শোকের মাস। বক্তব্যের শুরুতেই আমি গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিবসহ ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ সালে ঘাতকদের হাতে নিহত জাতির পিতার পরিবারের অন্যান্য সকল শহীদকে। তিনি বলেন, আজকের আলোচনা সভার সম্মানিত মুখ্য আলোচক মহোদয় আমাদের মাঝে দিক নির্দেশনাম ‚ গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রেখেছেন। এ জন্য তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। তিনি আরও বলেন, ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে আমার কাছে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিন। পশ্চিম পাকিস্তান শাসকগোষ্ঠী যখন আমাদের বাংলা ভাষায় কথা বলার অধিকার হরণ করতে চেয়েছিল, সেই সময় তৎকালীন ছাত্রনেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ অবস্থান ধর্মঘটের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। সেই অবস্থান ধর্মঘটের নেতৃত্ব দেয়ার মধ্য দিয়ে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ গড়ার ভিত্তি রচনা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর ৫৫ বছরের জীবনে সুদীর্ঘ ২৩ বছর লড়াই সংগ্রাম করেছেন, ৪৬৮২ দিন তাকে কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে থাকতে হয়েছে। এই ত্যাগের লক্ষ্য ছিল একটি, যেন সাড়ে ৭ কোটি মানুষ স্বাধীন দেশে সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারে। পরিশেষে তিনি এ ধরণের আলোচনা সভা আয়োজনের জন্য সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
Array