বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত গেজেটের সংশোধনের দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে টানা ৯ দিন ধরে আন্দোলন করছে পশু পালন অনুষদের শিক্ষার্থীরা। আজ দাবি আদায়ের জন্য প্রশাসনিক ভবনের গেট তালাবদ্ধ করে উপাচার্যকে (রুটিন দায়িত্বপ্রাপ্ত) অবরুদ্ধ করে শিক্ষার্থীরা।

রবিবার (১৮জুন) পশু পালন অনুষদের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল ও প্রশাসনিক ভবনের গেট ১২টা থেকে ৫টা পর্যন্ত তালাবদ্ধ করে রাখে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

পশুপালন ছাত্র সমিতির সহ-সভাপতি রেজউয়ান উল আমিন বলেন , নন ক্যাডার বা ক্যাডার বহিঃভূত পদে এনিমেল হাজবেন্ড্রির বিপরীতে কোন ডিগ্রি রাখা যাবে না। বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে প্রাণিসম্পদের উন্নয়নকল্পে মলিকুলার তথা জেনোমিক্স পর্যায়ে শিক্ষা ও গবেষণা চলছে, সেখানে জগাখিচুড়িভিত্তিক বি.এস.সি. ভেট. সাইন্স এন্ড এ.এইচ. (অনার্স) তথাকথিত কম্বাইন্ড কোর্স কারিকুলামের গ্রাজুয়েটবৃন্দ বর্তমান প্রচলিত যুগোপযোগী ডিগ্রি বি.এস.সি. এনিমেল হাজবেন্ড্রি (অনার্স) এর সমকক্ষ হওয়ার কোন যুক্তিসংগত ও বৈধ কারণ নেই। রেজিস্টার্ড ভেটেরিনারি ডাক্তারাই শুধু প্রাণি চিকিৎসায় অনুমতিপ্রাপ্ত ।

ছাত্র সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রান্ত সরকার বলেন, পশুপালন অনুষদে প্রায় ৭৬ শতাংশ এনিম্যাল প্রোডাকশন নিয়ে পড়ানো হয় অন্যদিকে তথাকথিত কম্বাইন্ড কোর্সগুলো ১২-৩০ শতাংশ অ্যানিমাল প্রোডাকশন পড়ানো হয়। বাকৃবির ভেটেরিনারি অনুষদে ২০ শতাংশের কম এনিম্যাল প্রোডাকশন নিয়ে পড়ানো হয়। তাই প্রাণিজ উৎপাদন সেক্টরে পশুপালন গ্রাজুয়েটদের অগ্রাধিকার দিতে হবে।

এ সময় ৬টা দাবি উপস্থাপন করে তারা বলেন, নন-ক্যাডার পদসমূহে পশুপালন (বিএসসি এ এইচ) ডিগ্রির পদসমূহে তথাকথিত কম্বাইন্ড ডিগ্রির অন্তর্ভুক্তি বাতিল করতে হবে, চিকিৎসা নির্ভর ক্ষণস্থায়ী উৎপাদন সেক্টর থেকে বের হয়ে টেকসই উৎপাদন নির্ভর প্রাণিসম্পদ সেক্টর গড়তে উপজেলা পর্যায়ে লাইভস্টক এক্সটেনশন অফিসার পদ তৈরি করতে হবে, প্রাণিসম্পদের টেকসই উন্নয়নের লক্ষে পশুপালন সেবা ও পশু চিকিৎসা সেবার দুইটি শাখায় বিভক্ত করতে হবে, সঠিক জায়গায় সঠিক ব্যক্তিকে নিশ্চিত করতে এনিমেল হাজবেন্ড্রি কাউন্সিল গঠন করতে হবে,মিনিস্ট্রি অফ এগ্রিকালচার এর আন্ডারে ১৬ টি উন্নয়ন মূলক বোর্ড রয়েছে সেখানে বর্তমান বাংলাদেশের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় সেক্টর লাইভস্টোক সেক্টরের জন্য কোন উন্নয়ন মূলক বোর্ড নাই। সেক্ষেত্রে ডেয়রি উন্নয়ন বোর্ড, পোল্ট্রি উন্নয়ন বোর্ড, ছাগল ও ভেড়া উন্নয়ন বোর্ড, মিট সাইন্স উন্নয়ন বোর্ড ও গবেষণা ইনস্টিটিউট তৈরি করতে হবে, ভালো জাতের প্রাণির পাশাপাশি সবচেয়ে বেশি যা প্রয়োজন তা হলো সুষম খাদ্য। তাই জেলা পর্যায়ে পশুপুষ্টি বিশেষজ্ঞ পদ তৈরি করে পশুপালন গ্রাজুয়েট নিয়োগ দিতে হবে।

উল্লেখ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনে প্রাণির উৎপাদন বিষয়ক কয়েকটি নন-ক্যাডার পদে পশুপালন গ্রাজুয়েটদের পাশাপাশি ভেটেরিনারি সাইন্স ও এনিমেল হাজবেন্ড্রি তথা কম্বাইন্ড ডিগ্রিধারীদের একই পদে নিয়োগ সংশোধনের দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে টানা ৬ দিন ধরে আন্দোলন করছে পশু পালন অনুষদের শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ মিছিলটি পশু পালন অনুষদ থেকে বের হয়ে প্রশাসনিক ভবন ঘুরে কেয়ার মার্কেটে এসে শেষ হয়।