আবু সৈয়দ, বেরোবি প্রতিনিধি: ব্যবসায় লোকসান ও বাকি খাওয়ায়ে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) ক্যাম্পাসে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একমাত্র নাস্তার স্থান ক্যাফেটেরিয়া
সম্প্রতি বেরোবি ট্রেজারার বরাবর চিঠি দিয়ে আগামী ১০ জুলাই থেকে ক্যাফেটেরিয়া চুক্তি বাতিল ও বন্ধের জন্য আবেদন করেছেন ক্যাফেটেরিয়া লিজ গ্রহীতা এসএস ক্যাটারিং কতৃপক্ষ।
চিঠিতে উল্লেখ করেন, আমরা সুনামের সহিত দীর্ঘদিন ধরে ক্যাফেটেরিয়া পরিচালনা করে আসছি। বর্তমানে ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে আগামী ১০ জুলাই থেকে ক্যাফেটেরিয়া পরিচালনা করা সম্ভব না। উক্ত তারিখ থেকে চুক্তি বাতিলের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করছি।
এরআগে গত ২৭ শে মার্চ ক্যাফেটেরিয়া লিজ গ্রহীতা এসএস ক্যাটারিং এর ব্যবস্থাপক সেলিম মন্ডল বেরোবি রেজিস্ট্রার বরাবর একটি চিঠি দেন। চিঠিতে তিনি বিদ্যুৎবিল ও ভাড়া মওকুফের আবেদন করে বলেন, কোভিড-১৯ এর সময় ক্যাফেটেরিয়া দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় মজুদ ভোগ্যপন্য নষ্ট হয়ে গেছে। এতে আমরা অনেক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। এছাড়া প্রাক্তন উপাচার্য (ড.নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ) ও চারজন শিক্ষকের কাছে ৭৫ হাজার টাকা পাওনা রয়েছে। এছাড়া দ্রব্যমূল্যের উধ্বগতি ও সাপ্তাহিক তিন দিন ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় বিক্রি অনেক কমে গেছে। ভর্তুকির আবেদন করেও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। এ অবস্থায় ক্যাফেটেরিয়া পরিচালনা কর কঠিন হয়ে পরেছে। তাই ভাড়া ও বিদ্যুৎবিল মওকুফ করার অনুরোধ করছি।
খোজ নিয়ে জানা যায়, সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড.নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ ছাড়াও তার ঘনিষ্ঠ কিছু শিক্ষক, কর্মকর্তা ও শাখা ছাত্রলীগের সাবেক নেতৃবৃন্দের কাছ থেকে প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা পাওনা রয়েছে ক্যাফেটেরিয়া ব্যবস্থাপকের কাছে।
এ বিষয়ে জানতে ক্যাফেটেরিয়া সহ-ব্যবস্থাপক মুকুল মিয়া বলেন, বর্তমানে ক্যাম্পাস তিন দিন বন্ধ থাকায় বেচা কেনা একদম কমে গেছে। আর যে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি তাতে প্রতিদিনই লস হচ্ছে। গত মে মাসের ০৮ তারিখ থেকে জুন মাসের ০৯ তারিখ পর্যন্ত প্রায় ২০ হাজার টাকার মতো লস হইছে। এভাবে আর চালানো যাচ্ছে না।
আর পাওনার বিষয়ে বলেন, পাওনাগুলো ছিলো করোনা পর্যন্ত। পাওনাদারের বেশিরভাগই ক্যাম্পাসে নেই। তাদের কয়েকজনের সাথে পরে যোগাযোগ করে সাড়া মেলেনি। এখন আর কেউ আগের মতো বাকি রাখেনা বা ঝামেলা করে না। এখন নতুন করে ব্যবসা শুরু করতে চাচ্ছিলাম। লসের মুখে পরে আর ব্যবসা করা সম্ভব হচ্ছে না।
ক্যাফেটেরিয়া লিজ গ্রহীতা ও ব্যবস্থাপক সেলিম মন্ডল বলেন, এখন দ্রব্যমূল্যের দাম বেশি, বিক্রি কম, ভর্তুকিও নেই , প্রতিদিন কেনা-বেচা শেষে দেখা যায় ক্ষতি হচ্ছে, তাছাড়া আগের পাওনা তো আছেই। সব মিলে আমাদের আর পোষাচ্ছে না। তাই ক্যাফেটেরিয়া ছেড়ে দিচ্ছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ক্যাফেটেরিয়া পরিচালক সহযোগি অধ্যাপক ওমর ফারুক বলেন, ক্যাফেটেরিয়ার বিদ্যুৎবিল ও ভাড়া দীর্ঘদিন থেকে বাকি ছিলো। লিজ গ্রহীতাদের কাছে এটি চেয়েছিলাম। পরে দেখি তারা ক্যাফেটেরিয়া চুক্তি বাতিলের জন্য আবেদন করেছে।
Array