বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক: বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) ক্লাস বর্জন করে দফায় দফায় আন্দোলন, অবস্থান কর্মসূচী ও সড়ক অবরোধে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক পাঠদান কর্মসূচী। এতে করে পিছিয়ে যাচ্ছে বাকৃবির তিন অনুষদের শিক্ষার্থীরা। মৎস্য ও প্রণিসম্পদ মন্ত্রাণালয়ের প্রস্তাবিত নতুন প্রজ্ঞাপন নিয়ে অভিযোগ করে আন্দোলনে নেমেছে পশুপালন, ভেটেরিনারি ও মাৎস্য বিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
সম্প্রতি (৩০ মে) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত এক গেজেটে প্রজ্ঞাপন আকারে ক্যাডার বহির্ভূত গেজেটের কর্মকর্তা ও নন ক্যাডার কর্মচারী নিয়োগ বিধিমালায় সকল পদে ডক্টর অফ ভেটেরিনারি মেডিসিন (ডিভিএম) ডিগ্রীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয় নি।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কয়েকটি পদের চাকরিতে নিয়োগ বিধিমালা থেকে ডক্টর অব ভেটেরিনারি মেডিসিন (ডিভিএম) ডিগ্রি বাদ দেওয়ার প্রতিবাদে পরীক্ষা ও ক্লাস বর্জন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষক ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা। গত সোমবার (৫ই জুন) থেকে এক দেশ এক ডিগ্রি চালু করার জন্য টানা ৬দিনের মত বিক্ষোভ আন্দোলন করছেন তারা। আজ নিয়োগের বিধি সংশোধনের দাবিতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব ড. নাহিদ রশীদের ছবি পোড়ালেন ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থী।
অন্যদিকে একই প্রজ্ঞাপনে পশুপালন অনুষদের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা নন-ক্যাডার পদসমূহে শুধুমাত্র পশুপালন ডিগ্রিধারীদের অন্তর্ভুক্তি এবং কম্বাইন্ড ডিগ্রিধারীদের নিয়োগ বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করছে ৪দিন ধরে। আজ (৬জুন) থেকে দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
এদিকে মৎস্য ও প্রণিসম্পদ মন্ত্রাণালয়ের প্রস্তাবিত নতুন প্রজ্ঞাপনে ফিশারিজ গ্রাজুয়েটদের সুযোগের দাবিতে মানববন্ধন করেছে বাকৃবির মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১২ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন মিলনায়তন মুক্তমঞ্চের সামনে ওই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। শিক্ষার্থীদের দাবি, প্রস্তাবিত নতুন প্রজ্ঞাপনে ৬ষ্ঠ অধ্যায়ের ২০নং অনুচ্ছেদে নীতিমালা বাতিল করার দাবি জানায়। প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ রয়েছে বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিলের রেজিস্টার্ড ভেটেরিনারিয়ান বা ভেটেরিনারি কর্মকর্তা মৎস্যের রোগ নিরাময়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। খামার মালিক সেই অনুযায়ী মৎস্য আহরণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত সংরক্ষণ করবে।
এরূপ পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা চড়ম সেশন জটে পড়ার আশংঙ্খায় ভুগছে। করোনা মহামারীর প্রাদুর্ভাব কাটিয়ে উঠে বাংলাদেশের সরকারী ও বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সেশন জট নিবারণে নিয়েছে নানা পদক্ষেপ। যেখানে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনলাইনে তাত্ত্বিক বিষয়ে পরীক্ষা ও স্বশরীরের ব্যবহারিক পরীক্ষা নিয়ে খুব দ্রুত সেমিস্টার শেষ করে দিয়েছে। অনেক সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় সেশন জট নিবারণের পদক্ষেপ নিলেও বাকৃবি প্রশাসন নেয় নি তেমন কোন উল্লেখযোগ্য ব্যবস্থা। ফলে ছয় মাসের সেমিস্টার পাঁচ মাসে করার রুটিন থাকলেও ছয় মাসেই শেষ করা হয়েছে অনেক অনুষদের সেমিস্টার।
Array