কামরুজ্জামান শিমুল বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি: ঘূর্ণিঝড় “মোখা” যতই এগিয়ে আসছে ততই আতংক উৎকণ্ঠা বাড়ছে সুন্দরবন উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে। মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৭৮৫ কিলোমিটার দূরে দক্ষিণে অবস্থান করছে ঘূর্ণিঝড় “মোখা”। এ অবস্থায় মোংলায় আবহাওয়া অফিস থেকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
দূর্যোগের কারণে মোংলা বন্দরের বাইরে হিরণ পয়েন্টে অবস্থান করছে ভিয়েতনামের পতাকাবাহী “ওশানস লাইন” ও মার্শাল আইল্যান্ডের পতাকাবাহী “ইকো গ্যালাক্সী” নামীয় দুটি জাহাজ। জাহাজ দুটি যমুনা ও পেট্রোম্যাক্স এলপিজির জেটিতে আসার কথা রয়েছে। আবহাওয়ার পরিস্থিতি খারাপ হলে ওই জাহাজ দুটিকে চট্টগ্রাম বন্দরে চলে যাওয়ার জন্য বলা হবে বলে জানিয়েছেন বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাষ্টার ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ শাহিন মজিদ।
আজ শনিবার (১৩ই মে) দুপুরে পন্য খালাস করে মার্কেন্টাইল-৪৪, জাহান ব্রাদার্স, ইন্দিগো ওমেগা এবং ক্যায়সা ওয়ান নামীয় ৪টি বিদেশি জাহাজ মোংলা বন্দর ত্যাগ করার কথা রয়েছে। এই মূহুর্তে বন্দরে ১১টি বাণিজ্যিক জাহাজ অবস্থান করছে। জাহাজের পাশে অবস্থান করা পণ্য নিতে আসা ছোট লাইটার, বার্জ ও কোস্টারগুলোকে নিরপাদ স্থানে সরে যেতে বলা হয়েছে।
নিরাপদ আশ্রয়ে নোঙর করেছে নৌ বাহিনী ও কোস্টগার্ডের চারটি যুদ্ধজাহাজ। বন্দরের ৭ ও ৮ নম্বর জেটিতে শুক্রবার রাতে জাহাজগুলো নোঙর করে। জাহাজগুলো হলো– নৌ বাহিনীর ‘’বিএনএস বঙ্গবন্ধু’’ ও ‘’বিএনএস স্বাধীনতা’’ এবং কোস্টগার্ডের ‘’তাজউদ্দিন’’ ও ‘সৈয়দ নজরুল’’। দুর্যোগ কেটে গেলে পুনরায় গন্তব্যে ফিরে যাবে এই জাহাজ। এ ছাড়া আরও কয়েকটি যুদ্ধজাহাজ মোংলার নৌঘাঁটি এবং কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের (মোংলা সদর দফতর) ঘাঁটিতে নিরাপদে নোঙর করেছে।
করমজল বন্যপ্রাণী ও প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্তকর্তা আজাদ কবির জানান, ঘূর্ণিঝড় মোখা’র প্রভাবে সুন্দরবনে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে দেড় থেকে ২ ফুট পানি বেড়েছে। এছাড়া করমজলে বন্যপ্রানীদের নিরাপদে সরিয়ে নেয়ার কাজ চলছে।
ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ চলাকালীন ও পরবর্তী সময়ে যেকোন পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তত রয়েছে কোস্টগার্ড। উপকূলবাসীদের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সতর্কাবার্তার প্রচার করছে তারা। পরিস্থিতি মোকাবেলায় কোস্ট গার্ডের সকল জাহাজ, বোট, স্টেশন, আউটপোষ্ট এবং ডিজাস্টার রিসপন্স এন্ড রেস্কিও টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ঝুকিপূর্ণ এলাকার লোকজনকে সাইক্লোন শেল্টারে নেওয়ার পাশাপাশি কোস্ট গার্ড স্টেশনে আশ্রয় প্রদান করা হচ্ছে।
উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, ঘূর্ণিঝড় “মোখা” মোকাবেলায় ১০৩টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এরমধ্যে ছয়টি ইউনিয়নে ৮৪ টি এবং পৌরসভায় ১৯টি। অপরদিকে সিপিপির ৬৬টি ইউনিটের প্রায় ১ হাজার ৪০০ স্বেচ্ছাসেবকসহ দুর্গতদের জন্য পর্যাপ্ত খাবার মজুদ করে রাখা হয়েছে। সাগরে মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলার গুলোকে দ্রুত নিরাপদে চলে আসার জন্য আবাহাওয়া অফিস থেকে বলা হয়েছে।
Array