নয়ন মিয়া, অন্য আর আট-দশজন শিশুর মতোই স্বাভাবিক ছিলেন। হাঁটা-চলা, খেলাধুলায় অংশগ্রহণ, এমনকি সাইকেল চালিয়ে স্কুলেও যেতেন নয়ন। কিন্তু ২০১৫ সালে হঠাৎ করেই তার হাতে-পায়ের শক্তি কমে যায়। হাত-পা চিকন হয়ে যায় এবং হাঁটা-চলার শক্তি হারিয়ে ফেলে নয়ন।
রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার নাজিরদহ একতা বাজার এলাকার বাসিন্দা লোকমান হোসেনের ছেলে নয়ন মিয়া। তিনি একতা উচ্চ বিদ্যালয়ের মানবিক বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন।
নয়ন মিয়া জানান, তিনি জন্মের পর থেকে সুস্থ ছিলেন। পরে হঠাৎ করে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় এবং শক্তি হারিয়ে ফেলেন। কিন্তু লেখাপড়ার মনোবল হারিয়ে যায়নি। চালিয়ে যাচ্ছেন তার পড়ালেখা।
নাজিরদহ একতা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রমজান আলী বলেন, নয়ন বন্ধুদের সহযোগিতায় নিয়মিত স্কুল আসত। শিক্ষকরা আন্তরিকতার সঙ্গে তাকে পাঠদানসহ খোঁজ খবর রাখতো। সে হারাগাছ দরদী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে।
এক ব্যক্তির দেওয়া একটি হুইল চেয়ার করে যাতায়াত করেন স্কুলে। বন্ধুরাই সেই চেয়ারে বসিয়ে তাকে প্রতিদিন স্কুল নিয়ে যায় এবং ক্লাস শেষে বাড়িতে রেখে যায়। হুইল চেয়ারে খাওয়া-দাওয়া, হুইল চেয়ারে পড়ালেখা, এভাবেই চলছে নয়নের জীবন। সব প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন নয়ন।
দরদী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব মাহফুজার রহমান বলেন, সে হুইল চেয়ারে বসে বিশেষ ব্যবস্থায় পরীক্ষা দিচ্ছে। কক্ষ পরিদর্শক সব সময় পাশে থেকে তার খোঁজ খবর নিচ্ছেন।
Array