• আজকের পত্রিকা
  • ই-পেপার
  • আর্কাইভ
  • কনভার্টার
  • অ্যাপস
  • ইসলামী ব্যাংকের ৬৬ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে দুবাই পালালেন তিনি 

     ajkalerbarta 
    07th May 2023 7:29 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

    ঋণের টাকা পরিশোধ না করে দুবাই পাড়ি দেওয়া ব্যক্তি মঞ্জুরুল আলম রতনের বাড়ি গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার উজিলাব গ্রামে। তিনি একই গ্রামের খোরশেদ আলীর ছেলে। রতন তার দিহান নিটওয়্যার লিমিটেড ও মেসার্স রতন এন্টারপ্রাইজ নামের দুইটি প্রতিষ্ঠানের নামে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের মাওনা চৌরাস্তা শাখা থেকে ৬৬ কোটি টাকা ঋণ নেন। দুই মাস আগে মা, বাবা, ভাই, স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে তিনি দুবাই পাড়ি জমিয়েছেন। রতনের ঋণের টাকা পরিশোধে ইতোমধ্যে ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জামিনদার ও মর্টগেজ দাতা ১৫ জনের কাছে নোটিশ দিয়েছে।

    গাজীপুরে কারখানা তৈরির কথা বলে ইসলামী ব্যাংক থেকে ৬৬ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে মঞ্জুরুল আলম রতন নামের এক ব্যক্তি সপরিবারে দুবাই পাড়ি জমিয়েছেন। দুবাই যাওয়ার আগে তিনি ব্যাংকে বন্ধক থাকা কয়েক কোটি টাকার মেশিনপত্র রাতের আঁধারে বিক্রি করে গেছেন। পরে প্রতারণাসহ বিভিন্ন অভিযোগে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করে।

    জানা যায়, অভিযুক্ত রতন এক সময় জমির ব্যবসা করতেন। শিল্পকারখানার জমি কিনে দেওয়ার সৌজন্যে বিভিন্ন কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান তিনি। সঙ্গে মাওনা চৌরাস্তার বিভিন্ন ব্যাংকের শাখা প্রধানের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করেন রতন। নিজের তেমন জমিজমা না থাকায় উজিলাব গ্রামের স্থানীয় আজাহার মৃধার জমি ভাড়া নিয়ে কারখানার জন্য শেড তৈরি করেন। কারখানার নাম দেন দিহান নিটওয়্যার। পরে ওই কারখানায় পর্যায়ক্রমে ৬৬ কোটি টাকার বিনিয়োগ করে ইসলামী ব্যাংক। সে বিনোয়োগের টাকায় কেনা ১০৮টি সার্কুলার নিটিং মেশিন সম্প্রতি রাতের আঁধারে বিক্রি করে দুবাই পাড়ি জমান তিনি। এসব মেশিন ব্যাংকে মর্টগেজ হিসেবে ছিল। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঋণের পুরো প্রক্রিয়াটি ইসলামী ব্যাংকের বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার যোগসাজসেই সম্পন্ন হয়েছে।

    শুধু ব্যাংকের টাকায় কেনা মেশিন বিক্রি নয়, রতন ব্যাংকের মর্টগেজেও জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন রতনের ঋণের জামিনদার ও মর্টগেজ দাতারা। তারা জানিয়েছেনে, জমি ভাড়া নিয়ে সেই জমি নিজের বলে দেখিয়ে ব্যাংক থেকে ঋণ তুলেছেন রতন। সবশেষ গত ৫ মার্চ আত্মীয় স্বজনদের না জানিয়ে ব্যাংকে কোনো ধরনের তথ্য না দিয়েই দেশ ছাড়েন তিনি।

    ইসলামী ব্যাংক মাওনা শাখায় যোগাযোগ করে জানা যায়, মেসার্স রতন এন্টারপ্রাইজ ও দিহান নিটওয়্যার নামের দুটি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ইসলামী ব্যাংক মাওনা শাখা হতে বিনোয়োগ দেওয়া শুরু হয় ২০১৫ সাল থেকে। পরে প্রতিবছর তা বৃদ্ধি করে সবশেষ তার কাছে ব্যাংকের পাওনা দাঁড়ায় ৬৬ কোটি টাকায়।

    খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রতন এন্টারপ্রাইজ শুধু কাগজ কলমেই রয়েছে। বাস্তবে এর কোনো অস্তিত্ব নেই। আর দিহান নিটওয়্যারটি স্থানীয় এক ব্যক্তির ভাড়া করা জমির উপর তৈরি শেডে। রতনের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানে অধিক পরিমাণে ঋণ সুবিধা দিয়েছে ব্যাংকের ব্যবস্থাপকগণ। গত মার্চের প্রথম সপ্তাহে ব্যাংকে বন্ধক রাখা কোটি টাকার মেশিনপত্র রাতের আঁধারে বিক্রি করে সে টাকা নিয়েই দুবাই পাড়ি জমান তিনি। যাওয়ার সময় তার মা, এক ভাই, স্ত্রী ও দুই মেয়েকে তিনি সঙ্গে নিয়ে গেছেন। রতনের দেশ ছাড়ার পর ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ রতনের বোন জামাই সিরাজুল হক, চাচা শরিফুল হক, ফুফু মেহেরুন নেসা, বোন মাহবুবা আক্তার কুসুম, মাহবুবা আক্তার খুকি, সুমি, সিমু, স্থানীয় চান মিয়া, দোলেনা ও আলম মিয়াকে টাকা পরিশোধে নোটিশ প্রদান করে।

    উজিলাব গ্রামের নাজমুল হুদার স্ত্রী দোলেনা খাতুন অভিযুক্ত রতনের প্রতিবেশী। তিনি বলেন, তার সঙ্গে রতনের সখ্যতা ছিল। হঠাৎ করেই একদিন রতন তার বাড়িতে গিয়ে স্বাক্ষীর কথা বলে একটি কাগজে সই নেন। আর এখন ব্যাংক তার বাড়িতে নোটিশ দিয়েছে। কোনোদিন ব্যাংকে না গিয়ে, ব্যাংকের কারও সঙ্গে দেখা না করলেও এখন টাকা পরিশোধ করার জন্য বলা হচ্ছে। আমরা এত টাকা কোথায় পাবো।

    রতনের চাচাতো ভাই সাদেক মিয়া বলেন, একজন লোককে এতগুলো টাকা দিয়ে দেওয়া হলো। এত টাকা নিয়ে সে কি করলো তার খোঁজও নেওয়া হলো না। রাতের অন্ধকারে আবার ব্যাংক বন্ধকের মেশিনগুলো সরিয়ে নিয়ে দুবাই পাড়ি জমালো। পুরো প্রক্রিয়ার সঙ্গে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের একটি যোগসাজস থাকতে পারে। আর এখন ফাঁসিয়ে দেওয়া হলো এলাকার নিরীহ মানুষগুলোকে।

    স্থানীয় আজাহার মৃধা বলেন, আমার জমি কয়েক বছরের জন্য ভাড়া নিয়ে রতন শেড নির্মাণ করেন। পরে ব্যাংক থেকে মেশিন দেওয়া হয়। হঠাৎ করেই সে মেশিনগুলো বিক্রি করে দেয়। তার কাছে কয়েক মাসের ভাড়াও বাকি রয়েছে। আবার সম্প্রতি ব্যাংক এসে মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে। এক দুই মাস দেখবো, যদি কোনো সমাধান না হয় তখন ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসবো।

    রতনের বোন জামাই সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের কাউকে কিছু না বলেই তিনি হঠাৎ করে সবাইকে নিয়ে দেশ ছেড়েছেন। পরে ফোনে বলেছেন দুবাই রয়েছেন। সেখানে একটি ব্যবসাও খুলেছেন তিনি। এখন সব চাপ আমাদের ওপরে আসছে।

    ইসলামী ব্যাংক মাওনা শাখার ব্যবস্থাপক মো. রিয়াজুল ইসলাম বলেন, তরুণ উদ্যোক্তা হিসেবে কারখানা চালানোর জন্য মেশিনগুলো ব্যাংকের টাকায় এনে দেওয়া হয়েছিল। সেগুলো বিক্রি করে দিয়ে দেশ ছাড়ায় আমরা তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছি। তবে তাকে কীভাবে এত টাকা ঋণ সুবিধা দেওয়া হয়েছে, কী কী অনিয়ম হয়েছে, পুরো প্রক্রিয়াটির তদন্ত হচ্ছে। তদন্ত শেষ হলে তখন বলা যাবে কারা কীভাবে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত।

    এ বিষয়ে শ্রীপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম নাসিম বলেন, বিষয়টি নিয়ে থানায় এসেছিল মামলা করতে। একটি অভিযোগ জমা দিয়েছিল, তবে নিশ্চিত না। পরে শুনেছি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আদালতের শরণাপন্ন হয়েছে।

    এ বিষয়ে তৎকালীন ব্যবস্থাপক মহিউদ্দিন বর্তমানে ময়মনসিংহ আঞ্চলিক কার্যালয়ে কর্মরত রয়েছেন। তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, মূলত আগের ব্যবস্থাপকের সময় তাকে ঋণ সুবিধা দেওয়া হয়। আমার সময়ে তা বৃদ্ধি করে ২৫ কোটি টাকা পর্যন্ত বাড়ানো হয়, আরও বৃদ্ধির জন্য সুপারিশ করা হয়েছিল। পরে হয়তো বাড়ানো হয়েছে। একজন তরুণ উদ্যোক্তা হিসেবে তাকে আমরা সহযোগিতা করেছিলাম। তবে ব্যাংক এখান থেকে কোনো অনিয়ম সুবিধা নিয়েছে বলে আমার জানা নেই।

    Array
    We use all content from others website just for demo purpose. We suggest to remove all content after building your demo website. And Dont copy our content without our permission.
    আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
    এই বিভাগের আরও খবর
     
    Jugantor Logo
    ফজর ৫:০৫
    জোহর ১১:৪৬
    আসর ৪:০৮
    মাগরিব ৫:১১
    ইশা ৬:২৬
    সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১

    আর্কাইভ