মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি: মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে জরাজীর্ণ টিনসেড ঘরে চলছে স্বাস্থ্যসেবা। প্রায় শতবর্ষ পুরোনো এই টিনসেড ভবনটির দুই কক্ষবিশিষ্ট ঘরের চালে মরিচার কারণে বড় বড় ছিদ্র দেখা দিয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই ছিদ্র দিয়ে পানি পরে ওষুধপত্রসহ আসবাবপত্র ভিজে যায়। দরজা জানালার অবস্থাও জরাজীর্ণ। যেকোনো সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। ঝুঁকি নিয়েই কাজ করছেন এখানকার কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
এদিকে সেবা নিতে আসা রোগীরাও থাকেন আতঙ্কে। ফলে অনেক সেবা প্রার্থীরা ভয়ে নিজ ইউনিয়নে উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে সেবা না নিয়ে অন্যত্র যেতে বাধ্য হন। এমনই চিত্র দেখা যায় উপজেলার হোসেন্দী ইউনিয়নের হোসেন্দী বাজারে স্থাপিত উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির।
কর্তৃপক্ষের সূত্রে জানা যায়, ব্রিটিশ আমল থেকেই এই টিনসেড ঘরে চিকিৎসা কার্যক্রম চলছে। সব বয়সের নারী পুরুষকে জ্বর-সর্দি, কাশির চিকিৎসা দেওয়া হয়। এছাড়া শিশু, গর্ভবতী নারী, কিশোর-কিশোরীরদের জন্য রয়েছে বিশেষ সেবা। প্রতিদিন ৮০-১০০ জন রোগী চিকিৎসাসেবা নেন এখান থেকে।
শতবর্ষী আব্দুল মতিন বলেন, এটি এমন একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র যেটির গত ৮৮ বছরেও টিনের চালগুলো পরিবর্তন হয়নি। এটি কখনো নতুন ভবন হবে না মনে হয়।
স্থানীয় স্টিল আলমারি ব্যবসায়ী সুমন খান জানান, এ স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি এ অঞ্চলের সাধারণ মানুষের চিকিৎসা সেবার একমাত্র আশ্রয়স্থল। অসহায় মহিলা ও গরিব লোকজন এ স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে সেবা নিয়ে থাকে।
হোসেন্দী ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কর্মরত উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ডা. মো. শহিদুল ইসলাম জানান, আমাদের অফিসে জনবলের সংকট রয়েছে। অফিস সহকারী এবং আমি ব্যতীত আর কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী নেই। অনেক কষ্টসাধ্যে প্রতিদিন গড়ে ৮০-১০০ জন রোগীদের চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে। এই ইউনিয়নে নদীপথে নৌকাযোগে দূরবর্তী গ্রাম থেকে চিকিৎসাসেবা নিতে আসেন সাধারণ মানুষ।
তিনি আরও বলেন, শুনেছি এই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি ব্রিটিশ আমলে নির্মাণ করা হয়। এখন পর্যন্ত টেনসেড ঘর ছাড়া নতুন ভবন নির্মাণ হয়নি। অল্প বৃষ্টি হলেই টিন চুয়ে মেঝেতে পানি পড়ে। দরজা-জানালাগুলোও নড়বড়ে। টিনে মরিচা ধরেছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এসব টিনসেড ঘরে বসেই স্থানীয় বাসিন্দাদের চিকিৎসা দিচ্ছি।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মুবাশ্বির বিনতে আলম আজকালের বার্তাকে জানান, হোসেন্দী উপ স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রটি ঝুঁকিপূর্ণ টিনসেড ঘরটির বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে।
Array