বরিশাল-২ (উজিরপুর-বানারীপাড়া) আসনের সংসদ সদস্য মো. শাহ আলমের নির্দেশে বরিশালের উজিরপুর উপজেলার দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত হওয়ার বরিশাল জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষককে দুই ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে ক্ষুব্ধ প্রার্থীরা।
পরীক্ষার্থী সুকান্ত চন্দ্র দাস বলেন, তিনি রামেরকাঠি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অফিস সহায়ক পদের একজন প্রার্থী। তিনি গলাচিপা থেকে পরীক্ষা দিতে এসেছেন। কিন্তু এসে শুনেছেন পরীক্ষা হবে না।
বিনয় হালদার নামে আরেক পরীক্ষার্থী জানিয়েছেন, পরীক্ষা দিতে একাধিকবার এসেছি। আজকে আসার পর ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসিয়ে রেখেছে। প্রধান শিক্ষক বলেছেন আজকে তোমরা যাও, সামনের তোমাদের জানিয়ে দেয়া হবে। তখন আমরা জানতে পারছি, তার কারণে পরীক্ষা হয়নি।
জানা গেছে, উজিরপুর উপজেলার আটিপাড়া স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে ও রামেরকাঠী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পাঁচটি পদের জন্য গেল ১৮ মার্চ নিয়োগ পরীক্ষার দিন ধার্য করা হয়। কিন্তু ওই সময় এমপি শাহআলমের নির্দেশে তা স্থগিত হয়ে যায়। পরবর্তীতে ১ মে সোমবার পুনরায় বরিশাল জিলা স্কুলে নিয়োগ পরীক্ষার দিন ধার্য করা হয়। এ জন্য প্রার্থীরাও সবাই সকালে চলে আসে। কিন্তু মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের (ডিজি) প্রতিনিধি ও বরিশাল জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. নুরুল ইসলামকে বরিশাল-২ আসনের সংসদ মো. শাহে আলম মুঠোফোনে তাকে ছাড়া নিয়োগ স্থগিত করার নির্দেশ দেন। পরে নিয়োগ বোর্ডের মো. লুৎফর রহমান ও সুখেন্দু শেখর বৈদ্যকে জানান অনিবার্য কারণে নিয়োগ পরীক্ষা হচ্ছে না। এ ঘটনা জানার পরে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিতে আসা প্রার্থীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তারা বিক্ষোভ করে শিক্ষককে তার কক্ষে অবরুদ্ধ করেন। পরে দুই ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর দ্রুত সময়ের মধ্যে পরীক্ষা নেয়ার আশ্বাস দেয়ায় পরীক্ষার্থীরা শান্ত হয়ে ফিরে যান।
রামেরকাঠি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জীবন কৃষ্ণ সিকদার জানান, দেড় মাস আগে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এর আগে নিয়োগ পরীক্ষায় বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতির সঙ্গে এমপির বাকবিতণ্ডা হয়। তাই সেই পরীক্ষা হয়নি। সোমবার জিলা স্কুলে পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। সকাল সাড়ে ৯ টায় তারা এসে পৌঁছান। এসে শুনতে পেয়েছেন ডিজির প্রতিনিধি জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম এমপির নির্দেশে পরীক্ষা নেয়নি। এখানে আমাদের কি করার আছে?
ডিজির প্রতিনিধি ও জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম জানান, এমপি ফোন করে বলেছেন সমস্যা আছে পরীক্ষা নেয়া যাবে না। তাই পরীক্ষা নেয়া হয়নি।
সোমবার বেলা ১১টার দিকে বরিশাল জিলা স্কুলে এই ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে দ্রুত সময়ের মধ্যে আবার পরীক্ষা নেয়ার আশ্বাস দিলে দুই ঘণ্টা পর তিনি মুক্ত হন।
এদিকে এমপি শাহেআলম এ বিষয়ে সাংবাদিকদের জানান, নিয়োগ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। এজন্য মানববন্ধনও হয়েছে। যার কারণে নিয়োগ পরীক্ষা আপাতত বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।
Array