গাজীপুরের মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুনের বিশ্বাস তার ছেলে মনোনয়নপত্র ফিরে পাবেন। কেননা যে ঋণের কথা বলে তার মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে তা পরিশোধ করা হয়ে গেছে। তার ছেলে যাতে নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন সেই ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানান তিনি।
রোববার (৩০ এপ্রিল) মোবাইল ফোনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আজকালের বার্তাকে তিনি এসব কথা জানান।
এ সময় তিনি বলেন, ছেলে যদি কোনো প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়ে নির্বাচন করতে না পারেন তবে সময় বলে দেবে আমি নির্বাচন করব কিনা। আগে আমার ছেলের প্রক্রিয়াটা শেষ করতে হবে।
জাহাঙ্গীরের সঙ্গে তার মা জায়েদা খাতুনও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে মনোনয়ন জমা দেন। ছেলের মনোনয়ন বাতিল করলেও মা জায়েদা খাতুনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেছে নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা।
জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন বলেন, চোখের সামনে আজ ১৮ মাস ধরে ছেলের যন্ত্রণা দেখতে হচ্ছে। একজন মা হিসেবে যে তা কত কষ্টের তা বলে বোঝানো যাবে না। স্বামীকে হারিয়েছি, চোখের সামনে নিজের মেয়ের স্বামী মারা গেছে, ভাইয়ের কিডনী নষ্ট হয়েছে। স্বজনের বিপদে অসুস্থতায় কোথাও যেতে পারেনি। আজ দীর্ঘ ১৫বছর ধরে ছেলের সঙ্গে নগরবাসীর সেবা করছি। দিন রাত বাসায় লোকজনের ভিড় লেগেই থাকে, নেতাকর্মীদের আপ্যায়ন করতে নিজের হাতে প্রতিদিন শত শত লোকের রান্না করেছি লাকড়ি দিয়ে। সবই করেছি ছেলের জন্য। আমার বাড়িতে এসে কেউ যেন খালি মুখে বিদায় না নেয় সেটির বন্দোবস্ত করতে ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত শ্রম দিয়েছি। আমি মনে করেছি নগরের ৫৭টি ওয়ার্ডের সবাই আমার বাড়ির মানুষ। অথচ রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকের নোংরা খেলার বলি হয়ে আমার ছেলে আজ পেরেশান। ছেলের মুখের দিকে তাকালে কান্না চলে আসে। আমি এখন দুঃখিনী এক মা, রাতে আল্লাহর দরবারে কান্নাকাটি করি যেন আমার ছেলে এ অবস্থা থেকে মুক্তি পায়। আমি বিশ্বাস করি আল্লাহ এর একটা সঠিক ফয়সালা দেবেন।
তিনি আরও বলেন, আমার ছেলে ইচ্ছে করলে বাড়ি-গাড়ি করতে পারত, আমরা আরাম আয়েশে দিন কাটাতে পারতাম। সম্পদ করতে পারত, সে তো তা করেনি। সে সব নগরবাসীর জন্য করেছেন। এ বিচারের ভার এখন নগরের মানুষের কাছে।
Array