তীব্র দাবদাহের পর গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় যশোরে মৌসুমের প্রথম কালবৈশাখী হয়েছে। এ ঝড়ের সঙ্গে হওয়া বৃষ্টিতে সবার মধ্যে স্বস্তি ফিরলেও ধান কেটে ঘরে তোলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন গ্রামের কৃষকেরা। ঝড় আর বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে ধানের ক্ষতির আশঙ্কা করছে কৃষি অধিদপ্তর।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোরের উপপরিচালক মনজুরুল আলম বলেন, যশোর জেলায় ৩৫ শতাংশ বোরো ধান কেটে-ঝেড়ে ঘরে তুলেছেন কৃষকেরা। অবশিষ্ট ধান খেতে পেকে আছে। কৃষকের ঘরে উঠতে আরও ১০ থেকে ১২ দিন সময় লাগবে।
তিনি জানান, চৌগাছা ও ঝিকরগাছা উপজেলায় কালবৈশাখীর প্রভাব বেশি পড়েছে। এই দুই উপজেলায় ঝড়ে খেতের অনেক ধান শুয়ে পড়েছে। এতে কিছু ক্ষতি হবে। ঝড়বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে আরও ক্ষতির শঙ্কা আছে। তবে ঝড়ে আম-লিচুর ততটা ক্ষতি হয়নি বলে তিনি জানান।
যশোর সদর উপজেলার উত্তর ললিতাদহ গ্রামের কৃষক ওবাইদুল ইসলাম বলেন, ‘ছয় বিঘা জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছি। এর মধ্যে ১৫ কাঠা জমির ধান কেটে শুকানোর জন্য খেতে ফেলে রাখা হয়েছে। অবশিষ্ট ধান কেটে-ঝেড়ে ঘরে তুলতে ১০ দিনের মতো সময় লাগবে। ঝড়-বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে ব্যাপক ক্ষতি হয়ে যাবে।’
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে যশোরের আকাশ মেঘলা হতে দেখা যায়। বেলা তিনটার পর থেকে আকাশে ঘন মেঘের সঙ্গে থেমে থেমে শুরু হয় দমকা হাওয়া। সাড়ে পাঁচটার পর শুরু হয় বৃষ্টি। বিকেলে ঝড়বৃষ্টি আর বজ্রপাতের মধ্য দিয়ে কালবৈশাখী বয়ে যায়।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, যশোরে চলতি মৌসুমে ১ লাখ ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে জেলার শার্শা, মনিরামপুর, কেশবপুর উপজেলায় কৃষকেরা বেশির ভাগ ধান কেটে ঘরে তুলেছেন। বাকি উপজেলাগুলোতে সবেমাত্র ধান কাটা শুরু হয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশ এলাকায় কৃষকেরা ধান কেটে খেতে ফেলে রেখেছেন বিছালি শুকানোর জন্য। ঝড়-বৃষ্টিতে এগুলোর ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ঝড়ের সময় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার। রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি অব্যাহত থাকলেও দমকা হাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। যশোরে রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত ১৫ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।
Array