কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় প্রতিপক্ষের বেশ কয়েকটি বসতঘরে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেওয়া হয়। এতে ১০ জন দগ্ধসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত উপজেলার চিলমারী ইউনিয়নের চিলমারী বাজারপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন, চিলমারী গামের দবির মন্ডলের ছেলে দিনু মন্ডল (৬৫), তার ছেলে ফারুক মন্ডল (২২), আব্দুর রহমান কাজীর ছেলে সাইদুল কাজী (৩০), তোফাজ্জল হোসেননের ছেলে আকতার মন্ডল (৪০), আকবার হোসেনের ছেলে হালিমা (৩৫), মৃত নবী মন্ডলের ছেলে রুপচাদ মন্ডল (৫৫), আকতার মন্ডলের ছেলে শাহীন মন্ডল (২২) এবং বিশু মন্ডলের ছেলে ফজলু ডাক্তারকে (৫৫)। আহতরা কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল ও দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আহতদের কয়েকজন জানান, পূর্ব শত্রুতা, আধিপত্য বিস্তার ও জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে স্থানীয় খা ও শিকদার গ্রুপ প্রতিপক্ষ মন্ডল গ্রুপের ওপর দফায় দফায় হামরা চালায়। বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে এই সংঘর্ষ। স্থানীয় মুজাম্মেল, ইকবাল, রানা, ইকলাস ও জহুরুল মন্ডলের বাড়িতে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেওয়া হয়। এ সময় বেশ কয়েকজন দগ্ধ হন এবং আরও অনেককে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করা হয়।
খবর পেয়ে দৌলতপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে স্থানীয় লোকজন আহতদের উদ্ধার করে দৌলতপুর ও কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সবার অবস্থা গুরুতর বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
এ বিষয়ে চিলমারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান বলেন, খা ও শিকদার গ্রুপের সঙ্গে মন্ডল গ্রুপের বিরোধ চলছিলো। হঠাৎ করে বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত খা ও শিকদার গ্রুপের লোকজন দফায় দফায় মন্ডল গ্রুপের লোকজনের বাড়িতে হামলা করে। এ সময় পিস্তল, ককটেল, পেট্রোল বোমা ও রামদাসহ বিভিন্ন অস্ত্র নিয়ে প্রতিপক্ষের লোকজনদের কুপিয়ে আহত করা হয়। এছাড়া কয়েককটি ঘরে আগুন দেওয়া হয়। এতে প্রায় ৩০ জন আহত হয়েছেন। সবার অবস্থা আশঙ্কাজনক। খা ও শিকদার গ্রুপের লোকজন সন্ত্রাসী তান্ডব চালিয়েছে। তারা নির্মমভাবে পেট্রোল বোমা মেরে মানুষ পুড়িয়েছে।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য খা ও শিকদার গ্রুপের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তা সম্ভব হয়নি।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার তাপস কুমার সরকার বলেন, আমরা তাদের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছি। আহতদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানানো যাবে।
এ বিষয়ে দৌলতপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান বলেন, পূর্ব শত্রুতার জেরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। সংঘর্ষের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
Array