ইতালিয়ান দুই ক্লাবের মধ্যে যেকোনো এক দলই চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ চারে ওঠার সুযোগ ছিল। তবে নিজেদের লিগে যোজন দূরত্বে শীর্ষে থাকা নাপোলির পারফর্ম কথা বলছিল তাদের পক্ষেই। কিন্তু প্রথম লেগে তাদের সঙ্গে ১-০ গোলে জিতে নেয় এসি মিলান। তাই তারাও যে ছেড়ে কথা বলবে না, সেটি জানাই ছিল। দ্বিতীয় লেগে দুই ইতালিয়ান ক্লাবের লড়াইটা বেশ জমে ওঠে। তবে ১-১ ব্যবধান এগিয়ে থাকা এসি মিলানকেই সুযোগ করে দেয় শেষ চারে যাওয়ার। ফলে ১৬ বছর পর তারা শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চে সেমিফাইনালের দেখা পেল।
মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) দিয়েগো আরমান্দো মারাদোনা স্টেডিয়ামে নিজেদের মাঠে মিলানকে আতিথ্য দেয় নাপোলি। কিংবদন্তী ফুটবলার দিয়েগো ম্যারাডোনার সাবেক এই ক্লাব ম্যাচের পুরো সময় ধরেই রেসে ফেরার চেষ্টা চালায়। কিন্তু শুরুতে পিছিয়ে পড়ার পর নির্ধারিত সময়েরর একেবারে শেষ মুহূর্তে তারা গোলের দেখা পায়। কিন্তু সেটি তাদের জন্য যথেষ্ট ছিল না। ২-১ অগ্রগামিতায় চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে বিদায় নিতে হয়েছে নাপোলিকে।
ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণ শাণাতে থাকে স্বাগতিক দলটি। যেকোনো মূল্যে গোল পেতে তারা প্রবল চাপ তৈরি করে মিলানের ওপর। প্রথম ২০ মিনিটেই গোলের উদ্দেশ্যে ছয়টি শট নেয় তারা, যদিও তার একটিও কাজে লাগেনি। উল্টো ২১তম মিনিটে মারিও রুই ডি-বক্সের ভেতর রাফায়েল লেয়াওকে ফেলে দেওয়ায় পেনাল্টি পেয়ে যায় নাপোলি। কিন্তু ফরাসি তারকা অলিভিয়ে জিরুদের স্পট কিক দারুণ নৈপুণ্যে ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক অ্যালেক্স মেরেট।
পেনাল্টিতে গোল করতে ব্যর্থ হলেও দলের সেমিফাইনাল নিশ্চিতের গোলটি করেন জিরুদ।
২০১২ সালের পর জিরুদ এই প্রথম স্পট কিকে গোল করতে ব্যর্থ হলেন। সবশেষ ওই বছরের সেপ্টেম্বরে লিগ কাপে আর্সেনালের হয়ে কভেন্ট্রির বিপক্ষে ৬-১ ব্যবধানের জয়ে পেনাল্টি মিস করেছিলেন তিনি। একইভাবে ম্যাচের ২৭তম মিনিটে আবারও জিরুদকে হতাশ করেন মেরেট। ডি-বক্সে জটলার মধ্যে একজনকে কাটিয়ে ফরাসি ফরোয়ার্ডের নেওয়া শট ইতালিয়ান গোলরক্ষক কোনোমতে পা দিয়ে ফেরান। ৪৩তম মিনিটে লেয়াওয়ের বাড়ানো বল ছয় গজ দূরত্ব থেকে শট নেন জিরুদ। তবে এবার আর তাকে হতাশ হতে হয়নি। তার গোলে এগিয়ে যায় মিলান।
বিরতির পর নাপোলির আক্রমণের ধার কমে আসে। মুহুর্মুহু আক্রমণ শাণালেও প্রতিপক্ষের জমাট রক্ষণে তেমন সুবিধা করতে পারছিল না তারা। ৮০তম মিনিটে মিলানের ডি-বক্সে তাদের ডিফেন্ডার ফিকায়ো তোমোরির হাতে বল লাগলে সুবর্ণ সুযোগ পেয়ে যায় নাপোলি। কিন্তু জর্জিয়ান ফরোয়ার্ড কাভারাস্কেইয়ার পেনাল্টি শট গোলরক্ষক মাইক মিয়াঁ ঝাঁপিয়ে রুখে দেন।
যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে হেডে নাটকীয়তা জাগানো গোলটি করেন নাইজেরিয়ার স্ট্রাইকার ওসিমেন। শেষ পর্যন্ত যদিও তা কেবল সান্ত্বনাসূচক গোলই হয়ে থাকে। পাঁচ বছর পর ইতালির প্রথম দল হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমি-ফাইনালে উঠল প্রতিযোগিতাটিতে সাতবারের চ্যাম্পিয়নরা। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে তারা বেনফিকা ও ইন্টার মিলানের মধ্যে বিজয়ীর বিপক্ষে খেলবে।
Array