রাহাত হোসেন, হাবিপ্রবি প্রতিনিধি: পবিত্র ঈদ উল ফিতর উপলক্ষে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মুখে হাসি ফুটিয়ে তাদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে শতাধিক গরিব ও দুস্থ শিক্ষার্থীদের মাঝে ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ করেছে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) অন্যতম স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হাবিপ্রবি মজার ইস্কুল।
বুধবার (১২ এপ্রিল ) বিকাল সাড়ে ৩ টায় দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্ববিদ্যালয় স্কুলে এই ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে উক্ত ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. কামারুজ্জামান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন হাবিপ্রবি মজার ইস্কুলের প্রধান উপদেষ্টা কৃষি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. বিধান চন্দ্র হালদার, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো সাইফুর রহমান, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মামুনুর রশিদ, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক ড. ইমরান পারভেজ, সহকারী প্রক্টর ড. মো. ইয়াসিন প্রধান, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের সহকারী পরিচালক মো. মিজানুর রহমান সহ হাবিপ্রবি মজার স্কুলের নবনির্বাচিত সভাপতি মেহেদী হাসান, সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন সহ মজার স্কুল কমিটির অন্যান্য নেতৃবৃন্দ । অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন হাবিপ্রবি মজার ইস্কুলের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হাসান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. কামারুজ্জামান বলেন “একজন শিশুকে সুনাগরিক হিসাবে গড়ে তোলার প্রক্রিয়া হাবিপ্রবি মজার ই স্কুলের ভূমিকা সত্যিই অসাধারণ । বঙ্গবন্ধু সব সময় একটা কথা বলেছেন যে ভালো মানুষ হতে হবে । কারন আজকের শিশুই আগামীতে দেশ ও জাতিকে নেতৃত্ব দিবে । মজার ই স্কুলের মানবিক মানুষ হওয়ায় শিক্ষা শিশুদের ভবিষ্যতে মানবিক মানুষ হতে সাহায্য করবে”।
অনুষ্ঠানটি পরিচালনায় সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ।
প্রসঙ্গত, সুবিধাবঞ্চিত পথ শিশুদের চোখভরা স্বপ্নকে রাঙ্গিয়ে দিতে ও শিক্ষার আলোয় আলোকিত করতে ২০১৫ সালের ৯ নভেম্বর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একঝাঁক উদ্যমী তরুণ শিক্ষার্থীর উদ্যোগে যাত্রা শুরু করে হাবিপ্রবি মজার স্কুল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের বিভিন্নভাবে বুঝিয়ে মজার স্কুলে নিয়ে আসা হয়। হাবিপ্রবি স্কুলে অস্থায়ীভাবে তাদের ক্লাস নেওয়া হয়। স্কুল ছুটির পর মজার স্কুলের ক্লাস শুরু হয়। বঞ্চনার শিকার কোনো শিশু একবার মজার স্কুলে এলে আর ফিরতে চায় না। মজার স্কুলের মমতাময়ী শিক্ষকদের মমতা আর মায়াময় পরিবেশে পড়াশুনার সুযোগ পেয়ে মমতার টানেই প্রতিদিনই ছুটে আসে ওইসব শিশু। মজার স্কুলে আসা সবশিশু বিনামূল্যে বই, খাতা, কলম, রাবার, স্কেল, পেন্সিলসহ যাবতীয় শিক্ষা উপকরণ ও টিফিন সরবরাহ করা হয়। শুধু প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাই নয়, মজার স্কুল শিক্ষার্থীদের মানসিক পরিশুদ্ধতার জন্য সুস্থ সাংস্কৃতিক চর্চা এবং খেলাধুলার সুযোগও করে দেয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদ ও বর্ষের শিক্ষার্থীদের স্বেচ্ছাশ্রমে পরিচালিত হচ্ছে স্কুলটি। এ তরুণ শিক্ষার্থীরা তাদের পকেট খরচ থেকে কিছু অর্থ বাঁচিয়ে সুবিধাবঞ্চিত এই শিশুদের বই,খাতা,কলম ও টিফিনের জন্য ব্যয় করছে। স্কুলটির শিক্ষক রয়েছে ৪০ জন। শিশুশ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান দেয়া হয় ।
Array