ক্ষমতাসীন সরকারের শরিক বাংলদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলেন। কিন্তু এখন বৈষম্যের পাহাড় গড়ে উঠেছে বাংলাদেশে। তারই প্রতিচ্ছবি দেখতে পাই এই সংসদে। বর্তমান সংসদ সরকারকে কতটুকু দায়বদ্ধ করতে পেরেছে সেই মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।
শনিবার (৮ এপ্রিল) জাতীয় সংসদের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে আয়োজিত বিশেষ অধিবেশনে সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুর সভাপতিত্বে অধিবেশনে রাশেদ খান মেনন বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘আমরা এমন একটি সংসদ তৈরি করব যা অন্যের জন্য শিক্ষার বিষয় হতে পারে।’ কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা দেখছি, ক্রমাগতভাবে আমাদের পার্লামেন্টের যে মান তা ক্ষুণ্ন হচ্ছে।
পঞ্চম জাতীয় সংসদ নিয়ে একটি গবেষণার উদ্বৃতি দিয়ে রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘ওই গবেষণায় দেখা যায়, সংসদে এক ঘণ্টার বক্তৃতায় মানুষের কথা হয় ৩ মিনিট। বাকি সময় নিজের, দলের, দলের নেতার বিষয়ে কথা হয়। রাষ্ট্রপতিও তার বক্তব্যে বলেছেন, ‘সামনে হয়তো আইনের পরিবীক্ষণ, মূল্যায়ন ও বিশ্লেষণের জন্য বাইরে থেকে বিশেষজ্ঞদের আমন্ত্রণ জানানোর প্রয়োজনীয়তা দেখা দিতে পারে।’
সাবেক মন্ত্রী মেনন বলেন, আমাদের সংসদের চরিত্র ক্রমাগত পাল্টে যাচ্ছে। রাজনীতির বাণিজ্যায়ন, নির্বাচনের বাণিজ্যায়নের ফলে সংসদের নতুন চেহারা দাঁড়িয়েছে। এখন সংসদে ব্যবসায়ীর সংখ্যা অনেক বেশি। রাজনীতি করলে ব্যবসা করা যাবে না এমন নয়। কিন্তু ব্যবসায়ীর সংখ্যা বেশি হয়ে গেলে স্বার্থের বিষয় চলে আসে। এ সময় সংবিধান পর্যালোচনা ও সংসদ বিষয়ে সংস্কার করা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সংবিধানে যে ধর্ম নিরপেক্ষতার সংজ্ঞা রয়েছে, তা লঙ্ঘন করে সেখানে সাংঘর্ষিক বিষয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বহাল রয়েছে বলে মন্তব্য করেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের স্বীকৃতি দিয়েছেন, কিন্তু তাদের মধ্যে অসন্তোষ দূর হয়নি। তাদের আদিবাসী হিসেবে নয়, নৃ-গোষ্ঠী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। পঞ্চদশ সংশোধনীতে সংবিধানের চার মূল নীতিমালা ফিরিয়ে আনলেও অনেক জঞ্জালগুলো থেকে গেছে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে সংবিধানের জঞ্জালগুলো দূর করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
Array