ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: ঠাকুরগাঁওয়ে এক গরিব পরিবারের সঙ্গে জমি নিয়ে বিরোধ বিএনপি নেতা আব্দুল সাত্তারের। তার দাবিকৃত জমির উপরে থাকা বাড়ির অংশ উচ্ছেদ করতে সেখানে তিনি আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে এই আগুন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ছাত্তারের চাচাতো ভাই ও ঠাকুরগাঁও জেলা যুবলীগের সহসভাপতি শহীদ বাবু।
বুধবার (৫ এপ্রিল) বিকেলে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জগন্নাথপুর হাজিপাড়ায় এই ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী খাদেমুল ইসলাম ও অগ্নিসংযোগের সঙ্গে জড়িতরা দীর্ঘদিন যাবত উক্ত এলাকায় পাশাপাশি বসবাস করছেন। এই বিষয়ে ঘটনার দিন সন্ধ্যায় ঠাকুরগাঁও সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন খাদেমুল ইসলাম।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, হাজিপাড়ায় ক্রয়কৃত ১২ শতক জমিতে বসবাস খাদেমুলের। তবে বাবার বিক্রয় করা সেই জমির টাকা ফিরিয়ে দিতে চান সাত্তার। কিন্তু সেই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বিবাদের সূত্রপাত হয় দুই পক্ষের মাঝে। এই বিষয়ে ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেনের আদেশে তদন্তে নামেন সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন। একপর্যায়ে মীমাংসার জন্য দুই পক্ষকে নিয়ে বসার ব্যবস্থা হয়। তবে নিজেকে যুবলীগের নেতা দাবি করে পুলিশের সামনেই ভুক্তভোগী খাদেমুলকে মারধর করেন শহীদ বাবু। সেই বৈঠকে বিষয়টি মীমাংসা না হওয়ায় পরের দিন বিকেলে উচ্ছেদ অভিযানের নামে আগুন জ্বালিয়ে দেয়া হয় খাদেমুলের বাসায়।
প্রত্যক্ষদর্শী কুদ্দুস আলী বলেন, সবাই জানে সাত্তারের বাবার কাছ থেকে জমিটি ক্রয় করে বসবাস করছে খাদেমুল। তবে আজ হঠাৎ দেখলাম সাত্তার এসে ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দিচ্ছে। এরকম বর্বরতা আমার জীবনে আর চোখে পড়েনি।
এই বিষয়ে ভুক্তভোগী খাদেমুল বলেন, মাঝেমধ্যেই বাবু ও সাত্তার এসে আমাদের হুমকি দেয়, মারধর করে। কোথাও আমি এর সঠিক সুরাহা পাচ্ছি না। আজ আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। অনেক মেরেছে। সবাই জানে কষ্টের টাকায় অনেক আগেই এই জমি আমি ক্রয় করেছি। এখন তারা টাকা ফেরত দিয়ে জমি নিতে চাচ্ছে। আমি কেন নিজের কেনা জমি ফেরত দেব।
ঘটনার বিষয়ে জানতে সাত্তারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শহীদ বাবু বলেন, খাদেমুল অনেক সাংঘাতিক লোক। জবরদখল করে সেখানে থাকছে। আগুন লাগার সময় আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলাম না। তাই এই বিষয়ে কিছু বলতে পারব না।
ঠাকুরগাঁও জেলা যুবলীগের সভাপতি আব্দুল মজিদ আপেল বলেন, কোনো ব্যক্তির কর্মকাণ্ডের দায়ভার দল নেবে না। এই ঘটনায় আমার দলীয় কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে যথাযোগ্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঠাকুরগাঁও সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন বলেন, বিষয়টি আমরা জেনেছি। সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে যথাযোগ্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন বলেন, খাদেমুল গরিব মানুষ। সে সাহায্যের আবেদন করেছিল। তাই তাকে সাহায্য করতে পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়। দোষী যেই হোক, তার বিরুদ্ধে পুলিশ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
Array