‘এখানে যাবতীয় সমস্যার সমাধান করা হয়।’— রাজধানীর মোড়ে মোড়ে দেওয়ালে কিংবা বিদ্যুতের খুঁটিতে এমন অসংখ্য বিজ্ঞাপন চোখে পড়ে। প্রভাত চন্দ্র বিশ্বাস নামের এক ব্যক্তি সরল বিশ্বাসে সেই বিজ্ঞাপনে দেওয়া নম্বরে ফোন দেন। তার সমস্যার কথা শুনে সমাধানের আশ্বাস দিয়ে তার থেকে প্রায় ৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন দুই নারী তান্ত্রিক।
কিন্তু টাকা দিয়েও প্রভাত চন্দ্রের পারিবারিক সমস্যা সমাধান না হওয়ায় সাভার থানায় মামলা দায়ের করেন তিনি। এই মামলায় অভিযুক্ত দুই নারীকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, সাভারের বেদে পল্লির ছোট অমরপুর এলাকার মৃত আব্দুল সামাদের মেয়ে ও তোরাব আলীর স্ত্রী আসমানি বেগম শীতা রানী (৭০) ও তার মেয়ে শিউলি বেগম (৪০)। তারা দুজন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রতারণা করে আসছিলেন।
মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) বিকেলে তাদের আদালতে পাঠায় ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এর আগে ভোর রাতে সাভারের অমরপুরে অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
ডিবি পুলিশ জানায়, আসমানি বেগম শীতা রানী ও তার মেয়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে তান্ত্রিক সেজে প্রতারণা করতেন। তাদের প্রতারণার শিকার প্রভাত চন্দ্র বিশ্বাস। তিনি বিজ্ঞাপনে দেওয়া নাম্বারে ফোন করে পারিবারিক সমস্যা সমাধানের জন্য সাহায্য চান। বিনিময়ে তার থেকে আসামিরা টাকা দাবি করেন। সরল বিশ্বাসে ভুক্তভোগী বিভিন্ন তারিখে সর্বমোট ৩ লাখ ৯৭ হাজার ২৫০ টাকা প্রদান করেন। দীর্ঘ দিন অতিবাহিত হলেও হুমকি ধামকি দিয়ে উল্টো মহিষ কেনার কথা বলে আরও ৩ লাখ ৩৫ হাজার টাকা দাবি করেন। পরে ভুক্তভোগী গত ১১ জানুয়ারি সাভার মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলা প্রাথমিকভাবে থানা পুলিশ তদন্ত করলেও পরে ডিবি পুলিশের ওপর তদন্ত ভার দেন ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান। পরে ভোর রাতে ডিবি পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোবাশ্শিরা হাবিব খানের তত্ত্বাবধানে অভিযান পরিচালনা করা হয়। ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বিপ্লবের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করেন উপ-পরিদর্শক (এসআই) আনোয়ার হোসেন। এ সময় আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়।
ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বিপ্লব বলেন, আসামিরা প্রতারণার কথা স্বীকার করেছেন। তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
Array