কামরুজ্জামান শিমুল, বাগেরহাট প্রতিনিধি: ইজিবাইক চুরির অপবাদ দিয়ে অটো রিকশা চালককে ২২ ঘন্টা আটকে রেখে নির্যাতনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার বাইনতলা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ ফকিরের ভাগ্নে শেখ হাসান আলী ও আবু সালেহসহ কয়েকজন মিলে এই নির্যাতন চালিয়েছে বলে জানিয়েছে নির্যাতনের শিকার বাগেরহাট সদর উপজেলার মুনিগঞ্জ এলাকার শেখ গফুরের ছেলে শেখ আব্দুল্লাহ। আব্দুল্লাহ এখন বাগেরহাট ২৫০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
আব্দুল্লাহ আরো জানায়, রামপালের ব্রি চাকশ্রী এলাকার শেখ হাসান আলীর নিকট ১ লাখ ২৭ হাজার টাকা পাই, টাকা দিতে না পারায় হাসান আলীর অটোরিকশাটি আমার নিকট বিক্রি করে দেয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে ইজিবাইক যোগে রামপাল থেকে বাগেরহাট আসার পথে চাকশ্রী নামক স্থান থেকে বাইনতলা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ ফকিরের ভাগ্নে শেখ হাসান আলী ও আবু সালেহসহ কয়েকজন মিলে জোরপূর্বক আমাকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর ব্রি চাকশ্রী এলাকায় শেখ হাসান আলীর বাড়িতে নিয়ে আমাকে নির্যাতন করে। ওই দিন সন্ধ্যায় আমার বন্ধু প্রাইভেট কার চালক আল আমিনকে চাকশ্রী বাজার আসার জন্য আমাকে দিয়ে ফোন করায়। পরে আল আমিন সেখানে গেলে তাকেও বেধে রাখে হাসান ও আবু সালেহরা।
বেধড়ক মারপিটের সঙ্গে শরীরে সিগারের ছ্যাঁকা ও আঙ্গুলের মধ্যে খেজুরের কাটা ঢুকিয়েছে তারা। চোখ উঠিয়ে ফেলার কথা বলেছে। শুক্রবার দুপুরে বাইনতলা ইউপি চেয়ারম্যান ফকির আব্দুল্লাহর কাছে আমাকে ও আমার বন্ধু আল আমিনকে নিয়ে যায়। চেয়ারম্যানের সামনেও আমাকে নির্যাতন করা হয়। চেয়ারম্যান কোন কথা না শুনে আমাদের চোখ তুলে ফেলতে বলেন। পরে ফাঁকা স্ট্যাম্পে আমার এবং আমার মায়ের স্বাক্ষর রেখে এবং ৩ লাখ টাকা দেয়ার স্বীকারোক্তি রেখে ছেড়ে দেয়। আমার উপর হামলাকারীদের কঠিন বিচার চাই।
প্রত্যক্ষদর্শী আল আমিন বলেন, আব্দুল্লাহর ফোন পেয়ে চাকশ্রী বাজারে গেলে হাসান ও আবু সালেহ আমাকে বেধে রাখে। সারারাত আব্দুল্লাহকে নির্যাতন করে। শুক্রবার দুপুরে আমাদের ছেড়ে দেয়।
ঘটনার বিষয়ে বাইনতলা ইউপি চেয়ারম্যান ফকির আব্দুল্লাহ জানান, তার সামনে কোন নির্যাতন হয়নি। আবু সালেহ তার ভাগ্নে নয়। হাসান ও আবু সালেহ’র মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তাদের সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে বাগেরহাটের পুলিশ সুপার কেএম আরিফুল হক বলেন, ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি আমরা দেখেছি। এবিষয়ে তদন্ত চলছে। অপরাধীদের শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Array