জাবি প্রতিনিধি: সাভারে কর্মরত প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামানকে তার বাসা থেকে সিআইডির পরিচয়ে তুলে নেওয়ার ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (জাবিসাস)। একইসঙ্গে শামসুজ্জামানের অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানিয়েছে তারা।
বুধবার (২৯ মার্চ) জাবিসাসের সভাপতি মো. বেলাল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আলকামা আজাদ এক যৌথ বিবৃতিতে শামসুজ্জামানের অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে জাবিসাস নেতৃবৃন্দ বলেন, দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা সরকার এবং রাষ্ট্রকে গুলিয়ে ফেলেছেন। সরকার যেখানে কতিপয় ব্যক্তি এবং রাষ্ট্র কতগুলো সুসংহত প্রতিষ্ঠানের সমষ্টি সেখানে কতিপয় ব্যক্তি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করে নিজেদের খায়েশ মেটানোর চেষ্টা করছে। এই অপচেষ্টা রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংসের কিনারে নিয়ে গিয়েছে। সেই সাথে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ক্রমান্বয়ে কর্তৃত্ববাদী চরিত্রে রূপান্তর করেছে। এতে জনগণের ব্যক্তি স্বাধীনতা ও বাক স্বাধীনতার মতো সাংবিধানিক অধিকারকে খর্ব করছে। যার ফলশ্রুতিতে সাংবাদিকতার মতো পেশাও আজ হুমকির মুখে।
মঙ্গলবার ভোর চারটায় সিআইডি পরিচয়ে সাদা পোশাকের কয়েকজন ব্যক্তি এসে সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন আমাবাগানের বাসা থেকে তুলে নেয়। জাবিসাস নেতৃবৃন্দ সংবিধানের দুইটি অনুচ্ছেদের উদ্ধৃতি দিয়ে অতিসত্তর শামসুজ্জামানকে নিরাপদে ও অক্ষত অবস্থায় নিঃশর্ত মুক্তি প্রদানের দাবি জানান। জাবিসাসের সাবেক সদস্য শামসুজ্জামানকে মুক্তি না দেওয়া হলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তারা।
সংবিধানের তৃতীয় ভাগের মৌলিক অধিকার অধ্যায়ের ৩৩ (১) নং অনুচ্ছেদে গ্রেপ্তারকৃত কোনো ব্যক্তিকে যথাসম্ভব গ্রেপ্তারের কারণ জ্ঞাপন না করে প্রহরায় আটক রাখা যাবে না বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ৩৩ (২) অনুচ্ছেদে গ্রেপ্তারকৃত ও প্রহরায় আটক ব্যক্তিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতের সামনে উপস্থাপন করে আইনগত অধিকার নিশ্চিতের কথা বলা হয়েছে।
সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বলেন, কয়েকদিন পরপরই সাংবাদিকদের উপর পুলিশি নির্যাতনের খবর পাওয়া যায়।শামসুজ্জামানকে তুলে নেওয়ার ঘটনা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এই ঘটনাটি মানুষের লেখার ও কথা বলার স্বাধীনতা কেড়ে নিয়ে জনগণের মধ্যে ভীতির সঞ্চার করার পাঁয়তারা ছাড়া কিছুই নয়।
শামসুজ্জামানকে অবিলম্বে মুক্তি না দেওয়া না হলে সাংবাদিকদের নিয়ে কঠোর আন্দোলন করা হুশিয়ারী দিয়েছে জাবিসাস নেতৃবৃন্দ।
Array