জাবি সংবাদদাতা: মারধরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) মীর মশাররফ হোসেন হল ও বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের ছাত্রলীগের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এ সময় উভয় হলের ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিতে দেখা যায়।
বুধবার (২২ মার্চ)রাত আটটার দিকে রড, রামদা, লাঠি, ছুরিসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বের হন বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হল ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এসময় তারা বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে বটতলায় প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা তাদের বাঁধা দেন।
সেখানে ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের মধ্যে ঘণ্টাব্যাপী বাগবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত দুই সাংবাদিকের দিকে তেড়ে যান ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লেনিন মাহবুব, সহ-সভাপতি হাসান মাহমুদ ফরিদ ও সজিবের ইন্ধনে সাংবাদিকদের দিকে তেড়ে যান অন্য নেতাকর্মীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সাভারের একটি রেস্টুরেন্টে বসাকে কেন্দ্র করে বাকবিতন্ডার জেরে রোববার (১৯ মার্চ) রাত দশটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন এলাকায় ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (আইবিএ-জেইউ) ৪৭তম ব্যাচের ও রবীন্দ্রনাথ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মাহফুজুর রহমানকে মারধর করা হয়।
এ ঘটনায় বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী আহমেদ গালিব, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের তানভীর ইসলাম, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সাব্বির হাসান সাগর ও খালিদ হাসানসহ অজ্ঞাত ৪০ জনের বিরুদ্ধে প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন মাহফুজুর। এ ঘটনায় অভিযুক্তরা এবং ভুক্তভোগী ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
ঘটনার জেরে বুধবার (২২ মার্চ) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ও মীর মশাররফ হোসেন হলের আবাসিক ছাত্র আহমেদ গালিবকে মারধর করে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের একদল শিক্ষার্থী। এই ঘটনার জেরে তারা দেশীয় অস্ত্র হাতে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের দিকে যাচ্ছিলেন। তাদের সঙ্গে হলটির নবীন শিক্ষার্থীদের জোরপূর্বক নিয়ে যাওয়া হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে।
বটতলায় প্রায় এক ঘণ্টা ধরে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অবস্থান করছিলেন মীর মশাররফ হোসেন হল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। অন্যদিকে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হল সংলগ্ন সড়কে অবস্থান নেন হল ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা।
তবে মীর মশাররফ হোসেন হলের উত্তেজিত নেতাকর্মীরা ফিরে যাওয়ার পর সেখানে উপস্থিত হন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল ও সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটন ।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল বলেন, আমি ক্যাম্পাসের বাইরে ছিলাম। তাই ঘটনাস্থলে আসতে দেরি হয়েছে। ছাত্রলীগের কেউ দেশীয় অস্ত্রের মহড়া দিয়ে থাকলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ক্যাম্পাসে দেশীয় অস্ত্র থাকলে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় তো একরকম শঙ্কা তৈরি হয়। আমরা এসবের বিরুদ্ধে রয়েছি। এক্ষেত্রে হল থেকে এসব নির্মূলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আমরা সর্বাত্মক সহায়তা করবো।
অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেওয়ার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম বলেন ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, বর্তমানে অস্ত্রের রাজনীতি দেশের কোথাও নাই। রড লাঠি নিয়ে আসে কেউ হয়তো এগুলো জানালার রড কেটে নিয়ে আসে। এ ধরনের রড, লাঠিসোটা নিয়ে আসা খুবই অপ্রত্যাশিত। আমরা এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।
Array