রায়হান আবিদ, বাকৃবি প্রতিনিধি: দেশের স্থূল অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের ১৪ শতাংশই কৃষির অবদান। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা ও আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে আমাদের কৃষিকে আরও আধুনিকায়ন জরুরি। আধুনিক প্রযুক্তি ক্ষেত্র করে সেগুলো প্রান্তিক পর্যায়ে কৃষকের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে স্মার্ট কৃষক তৈরি করতে হবে। কৃষি খাত পিছিয়ে থাকলে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়া সম্ভব হবে না।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) ‘বাংলাদেশে কৃষকদের ডিজিটাল আর্থিক সেবা গ্রহণ ও কর্মপন্থা’ শীর্ষক সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে এসব কথা বলেন বাকৃবির কৃষি কর্মসংস্থান ও ব্যাংকিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আক্তারুজ্জামান খান।
মঙ্গলবার (২১ মার্চ) সকাল ১১ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সম্মেলন কক্ষে ওই সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়।
তিনি আরও বলেন, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) অর্থয়নে বাংলাদেশে কৃষকদের আধুনিক আর্থিক সেবা গ্রহণের সামগ্রিক অবস্থা নিয়ে একটি জরিপ পরিচালিত হয়। ময়মনসিংহ জেলার সদর, ফুলপুর, ত্রিশাল ও ভালুকা উপজেলা এবং রংপুর জেলার সদর, মিঠাপুকুর ও পীরগঞ্জ উপজেলার কৃষকদের (শস্য, সবজি, মাছ ও পোলট্রি চাষী) নিয়ে এই জরিপ করা হয়। জরিপ থেকে জানা যায়, জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সাড়ে ৯৮ শতাংশ কৃষক ডিজিটাল আর্থিক সেবান বিষয়ে অবগত। তবে ৮৭ দশমিক ২ শতাংশ কৃষক বিভিন্ন ডিজিটাল আর্থিক সেবা গ্রহণ করে থাকেন। এর মধ্যে একটি বড় অংশ মোবাইল ব্যাংকিং সুবিধা গ্রহণ করেন। তবে সেটি প্রাত্যহিক কাজেই বেশি ব্যবহৃত হয়, কৃষি বা বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে এর ব্যবহার অতি নগণ্য।
অধ্যাপক আক্তারুজ্জামান জানান, বাড়তি খরচ ও নিরাপত্তার বিষয়টি চিন্তা করে ব্যাংক একাউন্ট বা মোবাইল ব্যাংকিং এর চেয়ে নগদ অর্থ লেনদেনে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন কৃষকেরা। এছাড়া ডিজিটাল আর্থিক সেবা সম্পর্কে কৃষকদের যথাযথ জ্ঞান না থাকা, প্রযুক্তিগত দক্ষতার অভাব, ব্যবহারের জটিলতা প্রভৃতি কারণেও কৃষকদের অনাগ্রহ রয়েছে। এজন্য কৃষিভিত্তিক ডিজিটাল আর্থিক সেবা চালু, ইন্টারনেটের পরিসেবা বৃদ্ধি, প্রযুক্তি ব্যবহারের সচেতনা সৃষ্টির জন্য জ্ঞানসম্পন্ন দক্ষ লোক ও তাদের কর্মক্ষেত্র তৈরির ব্যাপারে জোর দেয়ার কথা বলেন তিনি।
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবির কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. খন্দকার মো. মোস্তাফিজুর রহমান। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ, পিআরআই এর প্রতিনিধিবৃন্দ, বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধি ও স্থানীয় কৃষকেরা। সেমিনারে কৃষকদের ডিজিটাল আর্থিক সেবা গ্রহণে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা ও সমাধানের উপায় নিয়েও মুক্ত আলোচনা করা হয়।
Array