মো রায়হান আবিদ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক: বাংলাদেশ দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় ইউনিয়ন লিমিটেডের (মিল্কভিটা) চেয়ারম্যান শেখ নাদির হোসেন লিপু বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, মেধাসম্পন্ন জাতি গড়তে দুধের বিকল্প নেই। তাই তিনি ১৯৭৩ সালে মিল্কভিটা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। দেশের ডেয়রি এখনও অনেক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার জন্য ডেয়রি সেক্টরের সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে। সততা, সাহসিকতা থাকলে সব বাধা, চ্যালেঞ্জ জয় করা সম্ভব।
অ্যানিম্যাল হাজবেন্ড্রি দিবস-২০২৩ উপলক্ষে আয়োজিত ‘বাংলাদেশে দুগ্ধশিল্পে প্রতিবন্ধকতা ও সুযোগ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন ।
মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে বাকৃবির পশুপালন অনুষদের আয়োজনে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনে ওই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
তিনি আরও বলেন, কিছুদিন আগে বিদেশি এক কোম্পানি দেশে উৎপাদিত দুধে অ্যান্টিবায়োটিকের উপস্থিতি নিয়ে মিথ্যে গুজব ছড়িয়েছিল। সব মিথ্যাকে পরাজিত করে মিল্কভিটা এগিয়ে যাচ্ছে। এখনও দেশি, বিদেশি চক্রান্ত অব্যাহত আছে। সব বাধা মোকাবেলা করেই দেশের দুগ্ধশিল্পকে এগিয়ে নিতে মিল্কভিটা ও সরকার কাজ করছে।
পশুপালন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. ছাজেদা আখতারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছিলেন বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড লুৎফুল হাসান। এছাড়া সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ অ্যানিম্যাল হাজবেন্ড্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নূরুল ইসলাম, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন ও বাকৃবির ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. খান মো. সাইফুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন অ্যানিম্যাল হাজবেন্ড্রি দিবস-২০২৩ উদযাপন কমিটির আহবায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাকৃবির ডেইরি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আশিকুল ইসলাম।
সেমিনারের শুরুতে মূল প্রবন্ধ পাঠে অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আশিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের দেশি ব্রান্ডের গুঁড়ো দুধে পুষ্টিমান যথাযথ মান নিশ্চয়তা দিয়ে থাকে। বিদেশ থেকে আনা গুঁড়ো দুধের মধ্যে আসলে কি পরিমান ফ্যাট ও প্রোটিন রয়েছে সে মানের নিশ্চয়তা নেই। এনিম্যাল হাজবেন্ড্রি গ্রাজুয়েটরা সঠিক জায়গায় কাজের সুযোগ পেলেই ডেইরি, পোল্ট্রি, খাদ্য ইন্ডাস্ট্রিগুলো এগিয়ে যাবে। খাদ্যের মান ও গুনাগুন নিশ্চিত করতে পারে না কম্বাইন্ড ভেট ও পশুপালন ডিগ্রীধরীরা।
হাজবেন্ড্রি গ্রাজুয়েটরা প্রাণিজ প্রোটিন উৎপাদনে গবাদি পশুকে খাওয়ানো, প্রজনন, যত্ন ও প্রতিরোধ করতে কাজ করে। যেখানে কম্বাইন ডিগ্ৰীর গ্রাজুয়েটরা মূলত চিকিৎসা নিয়ে কাজ করে।
তিনি আরো বলেন, দুধের গুণগত মানের জন্য যে জাত উন্নয়ন পলিসি রয়েছে সেখানে দেশি জাতের সাথে সংকারায়নের জন্য হোলস্টেন ফ্রিশিয়ান জাত ব্যবহার করা হয়। তবে জারসি জাতকে নিয়ে কাজ করলে আরো ভালো সংকারায়ণকৃত গবাদি প্রাণি পাওয়া সম্ভব।
এসময় বাকৃবি উপাচার্য বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন একজন দূরদর্শী নেতা। তিনি মানুষের কাছে ডিম, দুধ, মাংস পৌঁছে দেবার জন্য যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। এরই অংশ হিসেবে তিনি মিল্কভিটা প্রতিষ্ঠা করেন যা দেশের দুধের চাহিদা পূরণে অনেক বড় অবদান রাখছে। আমরা সব জায়গায় নিরাপদ খাদ্য পৌঁছে দিতে চাই। দুধ ও মাংস উৎপাদন বৃদ্ধি করে তা বিদেশে রপ্তানি করতে গবেষকদের ভ‚মিকা রাখতে হবে।
এর আগে, সকাল ১০ টার দিকে অ্যানিম্যাল হাজবেন্ড্রি দিবস উপলক্ষে অ্যানিম্যাল হাজবেন্ড্রি অনুষদ থেকে এক বর্ণাঢ্য আনন্দ র্যালি বের করা হয়। অনুষদের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও আমন্ত্রিত অতিথিদের অংশগ্রহণে র্যালিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনে গিয়ে শেষ হয়। দিবসটি উপলক্ষে পশুপালন ছাত্রসমিতি সন্ধ্যা ৬টা থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
Array