চট্টগ্রামে বসতবাড়িতে তালা ভেঙে ঢুকে নগদ টাকা-স্বর্ণালংকার লুট করা হয়। এ সময় কোনো কারণ ছাড়াই কুপিয়ে রক্তাক্ত করা হয় বাড়ির সবাইকে। তাদের মারধরের হাত থেকে রেহাই পায়নি বাড়িতে থাকা চার বছরে শিশুও। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে মাঠে নামে পুলিশ। কয়েকদিনের চেষ্টায় একে একে আট আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) সুদীপ্ত সরকার গনমাধ্যমকে বলেন, চট্টগ্রামে অতীতেও ডাকাতি হয়েছে। কিন্তু শিশুর ওপর হামলার কোনো ঘটনা পাওয়া যায়নি। ওই শিশুর বীভৎস অবস্থা দেখে আমি স্থির থাকতে পারিনি। ওসি সন্দ্বীপকে নির্দেশ দিয়েছি, যতক্ষণ ডাকাতদের গ্রেপ্তার করা হবে না, ততক্ষণ যাতে থানার কোনো কর্মকর্তা না ঘুমায়। ওসি এ ঘটনায় অভিযুক্ত আট ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছেন।
এর মধ্যে চারজনকে ঘটনার পরদিন অর্থাৎ ৫ মার্চ গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন- শরাফত আলী ওরফে শামীম, মোশাররফ হোসেন ওরফে জনি, মো. মোস্তফা ও ছগির। এরপর রোববার (১২ মার্চ) দিবাগত রাতে আরো চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন- মো. মনির হোসেন (৩৩), নুর ইসলাম ওরফে ইসলাম ওরফে সানজিদ (৩২), মো. সেলিম (৩৬) ও মো. করিম (৩৬)। শেষে গ্রেপ্তার হওয়া চারজনের কাছ থেকে লুণ্ঠিত হওয়া বিভিন্ন মালামাল জব্দ করা হয়।
সন্দ্বীপ থানার ওসি মোহাম্মদ সহিদুল ইসলাম গনমাধ্যমকে বলেন, দুটি ডাকাতির ঘটনায় মোট ১২ লাখ ৫৫ হাজার টাকার মালামাল ডাকাতদল নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মোস্তাফিজুর রহমান আজিমের স্ত্রীর ভাই মো. সাজেদুল করিম তুহিন বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় মোট আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা ডাকাতির বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
পুলিশ সূত্র জানায়, ৪ মার্চ দিবাগত রাতে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার হারামিয়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সালাউদ্দিন রনির বাড়িতে ডাকাতি করা হয়। এ সময় ডাকাতদল বিভিন্ন মালামাল লুণ্ঠনের পাশাপাশি সালাউদ্দিন ও তার স্ত্রীকে মারধর করে। একই সময়ে ডাকাতদল পার্শ্ববর্তী মগধরা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার মোস্তাফিজুর রহমান আজিমের বাড়িতে ডাকাতি করে। ওই বাড়িতেও মালামাল লুণ্ঠনের পাশাপাশি মোস্তাফিজ, তার স্ত্রী স্কুলশিক্ষিকা মায়মুনা খানম নিপা ও তাদের শিশু সন্তান তাসমিয়া (৪) ও নুহানদের (১৩) নৃশংসভাবে মারধর করা হয়।
মামলার বাদী মো. সাজেদুল করিম তুহিন গনমাধ্যমকে বলেন, আমার বোনের বাড়ি একতলা পাকা। ডাকাতদল বাড়ির কলাপসিবল গেটে থাকা তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। এরপর বাড়ির সবাইকে কোপানো শুরু করে। আমার বোনের চার বছরের মেয়েও ডাকাতের হাত থেকে রক্ষা পায়নি। হামলার পর তারা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের হয়ে আমি মামলাটি করেছি। আমি পুলিশকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। অজ্ঞাত ডাকাতদলকে তারা শনাক্ত করে আইনের আওতায় এনেছে।
Array