ধ্বংসস্তূপের নিচে জন্ম নেওয়া আফরা (গোলাপী রঙের কম্বল) এবং নিজ মেয়ে আতাকে (নীল রঙের কম্বল) ধরে রেখেছেন ফুফা খলিল
সিরিয়ার আলেপ্পোতে গত ৬ ফেব্রুয়ারি একটি ভবনের ধ্বসস্তূপের নিচে জন্ম হয় ছোট্ট এক ফুটফুটে মেয়ে শিশুর। তার পরিবার যে বাড়িতে বসবাস করত ভূমিকম্প আঘাত হানার পর সেটি ধসে পড়ে।
ওই বাড়ির নিচে চাপা মরে মারা যায় শিশুটির বাবা-মা, ভাই বোন সবাই। কিন্তু অলৌকিকভাবে সেই ধসে পড়া ভবনের নিচেই তার জন্ম হয়।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, জন্মের আগেই পুরো পরিবার হারানো ওই শিশুটিকে এখন দত্তক নিয়েছেন তার ফুফু এবং ফুফা। তাদের কাছেই এখন বেড়ে ওঠবে সে।
শিশুটিকে ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে যেদিন উদ্ধার করা হয় সেটি একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিল। সেই ভিডিওতে দেখা যায়, একজন তাকে নিয়ে দৌড়ে অ্যাম্বুলেন্সের দিকে যাচ্ছেন। ওই সময় জানা যায়, উদ্ধারকারীরা যখন শিশুটিকে উদ্ধার করেন তখনও সে তার মায়ের নাড়ির সঙ্গে যুক্ত ছিল।
পরবর্তীতে জানা যায়, শিশুটির বাবার না আব্দুল্লাহ এবং মায়ের নাম আফরা ম্লেইহান। যারা ভূমিকম্পে তাদের বাকি সব সন্তানসহ নিহত হয়েছেন।
সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশুটিকে বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত উত্তর আফরিন বিভাগের জিহান হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। নিকটাত্মীয়রা আসার আগ পর্যন্ত সে সেখানেই ছিল সে।
হাসপাতাল থেকে গতকাল শনিবার শিশুটির ফুফা খলিল আল-সাওয়াদী এবং ফুফু হালা তাকে নিয়ে আসেন। শিশুটির মৃত মা ‘আফরার’ নাম অনুসারেই তারা তার নামকরণ করেছেন।
শিশুটির ফুফা বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ‘এই মেয়েটি আমাদের কাছে অনেক কিছু। কারণ এ শিশুটির পাশে তার পরিবারের কেউ নেই। সে আমার কাছে, তার ফুফুর কাছে এবং এই গ্রামের তার বাবা-মায়ের সব আত্মীয়দের কাছে একটি স্মৃতি হয়ে থাকবে।’
ফুফা খলিল আল-সাওয়াদী দেখা যায় এক হাতে ‘আফরাকে’ একটি গোলাপী রঙের কম্বলে এবং অপর হাতে তার নিজের ছোট্ট মেয়ে আতাকে একটি নীল রঙের কম্বলে মুড়িয়ে ধরে রেখেছেন। তার নিজ মেয়ে আতা ভূমিকম্পের তিনদিন পর জন্ম নেয়। তিনি জানিয়েছেন, দু’জনকেই একসঙ্গে লালন-পালন করবেন তিনি।
খলিল জানিয়েছেন, শিশুটিকে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার আগে কিছু আইনগত প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে তাদের। এছাড়া পরিচয় নিশ্চিত হতে ডিএনএ পরীক্ষাও করা হয়েছে।
সূত্র: রয়টার্স
Array