লইংল্যান্ডের ব্যাটাররা যখন দ্বিতীয় ইনিংসে টার্গেট দিতে নামলেন, তখন তারা টেস্ট মেজাজে ছিলেন না। লক্ষ্য ছিল বেশি সময় ব্যয় না করেই ইংলিশরা বড় রান সংগ্রহ করবে। হয়েছেও তাই। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষের প্রথম টেস্টের আরও দুই দিন বাকি থাকলেও, মেরে খেলতে গিয়েই অলআউট হয়ে যায় ইংলিশরা। কিন্তু তার আগেই কিউইদের সামনে তারা ৩৯৪ রানের বড় লক্ষ্য দাঁড় করায়। যেন কিউইদের জন্য বলেকয়েই ফাঁদ পাতা হলো!
সেই ফাঁদে সফলও হয়েছে আক্রমণাত্মক কোচ ম্যাককালামের ইংলিশ বাহিনী। চতুর্থ দিনের মাঝবিরতির আগেই তারা কিউইদের ব্যাটিং লাইন-আপ ধসিয়ে দিয়েছে। ফলে ২৬৭ রানের বড় ব্যবধানে জয় পেয়েছে ইংল্যান্ড। এর মাধ্যমে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ইংলিশরা ১৫ বছরের জয়খরা ঘুচিয়েছে।
মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে নিউজিল্যান্ড সিরিজের প্রথম টেস্টে নেমেছিল সফরকারী ইংল্যান্ড দল। ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় বেন স্টোকসের দল। প্রথম ইনিংসে দু’দলই লড়াই জমিয়ে তুলেছিল। প্রায় সমান লড়াইয়ের পর ১৯ রানে লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে ইংলিশরা। এরপরই মূলত ইংলিশরা মারমুখী রূপ ধারণ করে। টেস্ট মেজাজ ছাপিয়ে ম্যাচ অনেকটা ওয়ানডে ফরম্যাটের আদলে চলতে থাকে। তার প্রভাব পড়ে স্কোরবোর্ডেও। ৭৪ ওভার ব্যাট করে অলআউট হওয়ার আগেই ৩৯৪ রানের বড় টার্গেট দেয় ইংল্যান্ড।
টার্গেটের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই হোঁচট খায় নিউজিল্যান্ড। স্টুয়ার্ট ব্রডের চার উইকেট শিকারের মাধ্যমে তৃতীয় দিন শেষেই তারা ৬৩ রানেই ৫ ব্যাটারকে হারিয়ে বসে। তখনও ৫ উইকেটে নিউজিল্যান্ডের প্রয়োজন ছিল ৩৩১ রান। হাতে দুদিন বাকি থাকা সত্ত্বেও ম্যাচটি স্বাভাবিকভাবেই কোনদিকে আগাচ্ছে সেটি অনুমান করতে ক্রিকেট ভক্তদের কষ্ট হওয়ার কথা নয়!
চতুর্থ দিনের ব্যাটিংয়ে দলীয় সংগ্রহে মাত্র ৫ রান যোগ করতেই আউট হয়ে ফেরেন স্পিন অলরাউন্ডার মিচেল ব্রেসওয়েল। এরপর মাত্র ৫৮ রান নিতেই ১২৬ রানে অলআউট হয় কিউইরা। এতে ২৬৭ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছে স্বাগতিকরা। ইংলিশদের হয়ে ব্রড ও জেমস অ্যান্ডারসন সর্বোচ্চ চারটি করে উইকেট নিয়েছেন।
এর আগে সর্বশেষ ২০০৮ সালে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট জিতেছিল ইংল্যান্ড। দীর্ঘ সময়ের জয়খরা কাটানোর ব্যবধানটাও হয়েছে রেকর্ডগড়া। কারণ, এর আগে ৩২৪ রানের বেশি রান তাড়া করে জিততে পারেনি ইংলিশরা। এমনকি নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ৩৪৫ রানের বেশি তাড়া করে জিততে পারেনি কোনো দলই। এই জয়ে কোচ ব্র্যান্ডন ম্যাককালাম ও অধিনায়ক বেন স্টোকসের অধীনে খেলা ১১ টেস্টের ১০টিতেই জিতল ইংল্যান্ড।
বড় ব্যবধানে হেরে হতাশ কিউই অধিনায়ক টিম সাউদি। তবে ম্যাচে ইংলিশদের কৌশলের কৃতিত্বও দিয়েছেন, ‘এটি হতাশাজনক। তবে ইংল্যান্ডকেই কৃতিত্ব দিতে হবে। কৌশলগত দিক থেকে তারা খুব ভালো খেলেছে।’
Array