নরসিংদী সরকারি কলেজের ছাত্রদল নেতা মাইদুল নিহাত সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘আজ (শনিবার) সকালে রায়পুরা উপজেলা বিএনপির সভাপতি এ্যাড. একেএম নেছার উদ্দিনের জানাযায় যাওয়ার জন্য আমরা ৮-১০জন রায়পুরার উদ্দেশ্য রওনা হয়েছিলাম। পথিমধ্যে আমাদের গাড়ির গ্যাসের প্রয়োজন হয়। পরে জেলার শিবপুর উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে একটি পাম্পে গাড়িতে গ্যাস নেওয়ার জন্য দাঁড়ালে ৪০-৫০ জন আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। আমরা তাদের প্রতিহত করতে গেলে কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক খায়রুল কবির খোকন আমাদের উদ্দেশ্য করে গুলি ছোড়েন। আমরা ছাত্রদলের রাজনীতি করি এমনিতেই কত নির্যাতনের স্বীকার হই, তিনি আমাদের জেলা বিএনপির অভিভাবক, তিনি আমাদের আগলে রাখার কথা, তিনিই আমাদের ওপর গুলি বর্ষণ করেছেন। এর থেকে দুঃখের বিষয় আর কী হতে পারে?’

তিনি আরও বলেছেন, ‘আজকের এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং আগামীর রাষ্ট্র নায়ক আমাদের আশা ও ভরসার প্রতীক এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে এ বিচার রাখলাম। আপনি অচিরেই এ ঘটনার সঠিক তদন্ত করে বিএনপি থেকে এসব দালালকেন্দ্রীক বিএনপি নেতাদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনবেন। এছাড়াও নরসিংদী জেলা ছাত্রদলের যোগ্য ও দক্ষ মেধাবী ছাত্রদল নেতাদের মূল্যায়ন করবেন। নরসিংদী জেলা বিএনপি শক্তিশালী করার জন্য আমরা আছি, সবসময় ছিলাম এবং থাকব।’

ছাত্রদলের আরেক নেতা বলেছেন, ‘আমরা ছাত্রদল করি। খায়রুল কবীর খোকন আমাদের অভিভাবক তিনি আমাদের ডাকবেন, আমাদের কথা শুনবেন সংগঠন চালানোর ক্ষেত্রে উৎসাহ দেবেন; তা না করে তিনি আমাদের মেরে ফেলার লক্ষ্যে কী করে গুলি করেছেন..? তার কাছ থেকে ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দরা কি এই রাজনীতি শিখবে..? তিনি নাকি জাতীয় বীর..? তিনি কী করে তারই কর্মীর ওপর গুলি করেন.? আগামী রাষ্ট্র নায়ক তারেক রহমানের কাছে আমি এ প্রশ্নগুলো রেখে গেলাম।’

হামলা ও গুলিতে মির্জা বিজয়, সরকারি কলেজ ছাত্রনেতা মাইদুল মিহাল, সাকিব সহ আরো অনেকেই আহত হয়েছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছেন পদবঞ্চিত নেতারা।

সংবাদ সম্মেলনে তারা আরও দাবি করেছেন, বর্তমানে জেলা ছাত্রদলের যাকে সভাপতি করা হয়েছে তিনি আওয়ামী লীগের লোক। তারা এ কমিটি ভেঙে দেওয়ার দাবি করেছেন।

কারা উপস্থিত থেকে হামলা করেছে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ছাত্রদলের নেতারা দাবি করেন, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রিফাত,শশী, সোহেল আহমেদ শুভ, নরসিংদী শহর বিএনপির সভাপতি গোলাম কবীর কামাল, কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক খায়রুল কবীর খোকন সহ আরো অনেকেই ছিলেন। এ বিষয়ে শিবপুর মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করার কথাও জানান তারা।

এ ব্যাপারে জানতে কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও নরসিংদী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক খায়রুল কবির খোকনের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

শিবপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফিরোজ তালুকদার হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, ‘ফাহিম ভূঁইয়া রাজ অভি নামে একজন বাদী হয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন এবং মিনহাজ মোল্লা নামে একজনকে এ ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে আটক করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ২৬ জানুয়ারি সিদ্দিকুর রহমান নাহিদকে সভাপতি ও মেহেদী হাসান রিফাতকে সাধারণ সম্পাদক করে নরসিংদী জেলা ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করা হয়। এরপরই পদবঞ্চিত নেতারা খায়রুল কবীর খোকনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেন।