মুআত্তা মালেক, মুসনাদে আহমাদ, মুসতাদরাকে  হাকেমসহ হাদীসের আরো কিছু কিতাবে বর্ণিত হয়েছে,

একবার এক নারী সাহাবী রাসূলের কাছে এলেন নিজের কোনো প্রয়োজনে। যাওয়ার সময় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার কি স্বামী আছে? তিনি বললেন, জী, আছে। নবীজী বললেন, তার সাথে তোমার আচরণ কেমন? সে বলল, আমি যথাসাধ্য তার সাথে ভালো আচরণ করার চেষ্টা করি। তখন নবীজী বললেন, হাঁ, তার সাথে তোমার আচরণের বিষয়ে সজাগ থাকো, কারণ সে তোমার জান্নাত বা তোমার জাহান্নাম। (মুআত্তা মালেক, হাদীস ৯৫২; মুসনাদে আহমাদ, ৪/৩৪১ হাদীস ১৯০০৩; মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস ২৭৬৯; সুনানে কুবরা, বায়হাকী, হাদীস ১৪৭০৬)

স্বামী-স্ত্রীর একের উপর অন্যের হক রয়েছে। এ বিষয়ে আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে মৌলিক নির্দেশনা দিয়েছেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন,

وَلَهُنَّ مِثْلُ الَّذِي عَلَيْهِنَّ بِالْمَعْرُوفِ

আর স্বামীদের যেমন তাদের (স্ত্রীদের) উপর ন্যায়সঙ্গত হক রয়েছে, তেমনি তাদেরও হক রয়েছে স্বামীদের উপর। (সূরা বাকারা, আয়াত, ২২৯)

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিস্তারিতভাবে স্বামী-স্ত্রীর হক তুলে ধরেছেন এবং স্বামীদেরকে স্ত্রীর হক আদায়ের ব্যাপারে সতর্ক করেছেন। বিদায় হজের ভাষণে নবীজী বলেছেন,

اتَّقُوا اللَّهَ فِي النِّسَاءِ

তোমরা নারীদের বিষয়ে আল্লাহকে ভয় কর। (সহীহ মুসলিম, হাদীস ১২১৮)

সঙ্গে সঙ্গে নারীদেরকে স্বামীর আনুগত্য করার প্রতি উদ্বুদ্ধ  করেছেন এবং এর ফযীলতও বর্ণনা করেছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, নারী যখন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ঠিকমত আদায় করবে, রমজানের রোজা রাখবে, আপন লজ্জাস্থানের হেফাজত করবে, স্বামীর আনুগত্য করবে, তখন সে  জান্নাতের যেই দরজা দিয়ে ইচ্ছা প্রবেশ করতে পারবে। (সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ৪১৬৩)

সুতরাং গুনাহের কাজ নয় এমন বিষয়ে স্বামীর আনুগত্য জরুরি। কিন্তু  ‘স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রীর বেহেশত’ এটি হাদীস নয়।

সূত্র : উচ্চতর ফতোয়া ও হাদিস গবেষণা বিভাগ মারকাযুদ্দাওয়াহ আল ইসলামিয়া ঢাকা