শিশুদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ২০১৭ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি বরিশাল নগরীর আমানতগঞ্জ এলাকায় শহীদ সুকান্ত বাবু শিশু হাসপাতাল নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয়। প্রকল্প অনুসারে ২০১৯ সালের মধ্যে হাসপাতালটি চালু করার কথা। কিন্তু ঠিকাদারের সদিচ্ছার অভাবে হাসপাতালের নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি পাঁচ বছরেও। হাসপাতালটি নির্মাণে এমন দীর্ঘসূত্রতা দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) বরিশালে পৌঁছে তিনি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শহীদ সুকান্ত বাবুর নামে প্রতিষ্ঠিত হাসপাতাল পরিদর্শনে এসে কাজ শেষ হয়নি দেখে অবাক হন। নির্মাণ কাজ পাঁচ বছরেও শেষ না হওয়ার কারণ জানতে চেয়েছেন তিনি।
নির্মাণ কাজে যুক্ত প্রকৌশলীরা দাবি করেন, ২০১৭ সালে নির্মাণ কাজের উদ্বোধন হলেও করোনার কারণে সঠিক সময়ে কাজ শেষ করা যায়নি।
অন্যদিকে ঠিকাদার এবং বরিশাল সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান রিন্টু জানান, হাসপাতালে জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ায় জটিলতা ছিল। এছাড়া হাসপাতাল এলাকায় একটি ডোবা ছিল। সেটি ভরাট করেই কাজ শুরু করতে হয়েছে। এতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে।
তবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বর্ধিত নির্ধারিত সময় চলতি বছরের জুন মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার নির্দেশ দেন।
এদিন সরকারি সফরের অংশ হিসেবে মন্ত্রী বান্দরোড এলাকায় নির্মাণাধীন সমন্বিত ক্যান্সার, কিডনি ও হৃদরোগ ইউনিট পরিদর্শন করেন। সেখানেও কাজের গতি দেখে তিনি হতাশা ব্যক্ত করেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বরিশালে নির্মাণ কাজের গতি আশানুরূপ নয়। আরও দ্রুত গতিতে নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন হবে বলে আমি আশা করি।
পরে দুপুরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ঘুরে যা বুঝলাম তাতে এখানে এক হাজার বেড বাড়িয়েও কোনো কাজ হবে না। রোগীর চাপ অনেক। এই হাসপাতালের নতুন অবকাঠামো নির্মাণেরও দরকার রয়েছে। এছাড়া শহীদ সুকান্ত বাবু শিশু হাসপাতালটি খুব অল্প সময়ের মধ্যে চালু করা হবে। যেখান থেকে দেড় শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিতে পারবে। যেখানে আইসিইউ, সিসিইউ, অপারেশন থিয়েটার থাকবে এবং স্ক্যানো ইউনিট স্থাপন করা হবে। ক্যান্সার, কিডনি ও হৃদরোগের চিকিৎসায় নির্মাণাধীন হাসপাতাল ৮ বিভাগে ৮টি হচ্ছে। এতে ৮ বিভাগে প্রায় ৪ হাজার বেডের সৃষ্টি হবে। ফলে মানুষ সহজেই উন্নত চিকিৎসা পাবে।
পরে মন্ত্রী চিকিৎসকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মো. হুমায়ুন শাহীন খান, শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলাম, মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. মনিরুজ্জামান শাহীন, জেলার সিভিল সার্জন ডা মারিয়া হাসান প্রমুখ।
Array