• আজকের পত্রিকা
  • ই-পেপার
  • আর্কাইভ
  • কনভার্টার
  • অ্যাপস
  • ব্যাংকে কোটি টাকার হিসাবেও টান! 

     বার্তা কক্ষ 
    17th Jan 2023 11:44 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

    ‘ব্যাংকের টাকা লুটপাট করে খাচ্ছে কিছু গোষ্ঠী। ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে যাবে। ব্যাংকে আমানত রাখলে থাকবে না।’ এমন সব গুজব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাংক থেকে টাকা তোলার হিড়িক পড়ে। এ নিয়ে কথা বলেন সরকারপ্রধানও। এমন গুজবে কান না দিতে সকলের প্রতি আহ্বানও জানায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এছাড়াও জ্বালানির দাম বৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতির চাপে অর্থ জমাতে পারছে না মানুষ। উল্টো ব্যাংক থেকে টাকা তুলে ব্যয় মেটাতে হচ্ছে। এসব কারণে ব্যাংক খাতে কমেছে আমানত প্রবাহ।

    শুধু সাধারণ আমানত নয়, কোটি টাকার উপরের হিসাবেও এমন দৃশ্য দেখা গেছে।

    খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কয়েকটি কারণে কোটি টাকার হিসাব কমেছে। এর মধ্যে জ্বালানি পণ্যের ব্যয় বৃদ্ধি, আগের মতো আমানত রাখতে না পারা, জমানো অর্থ খরচসহ ব্যাংকের টাকা তুলে ফ্ল্যাট, প্লট ও জমিজমা কেনা উল্লেখযোগ্য।

    তিন মাসের ব্যবধানে বিত্তশালী ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টে অর্থ না বেড়ে, উল্টো এক হাজার ৯৩৭টি হিসাব কমে গেছে।

    সবশেষ হিসাব অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংকগুলোতে এক কোটি টাকার বেশি আমানত রয়েছে এমন ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সংখ্যা রয়েছে এক লাখ ৬ হাজার ৫২০ টি। তিনমাস আগেও এই হিসাবের সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৮ হাজার ৪৫৭ টি। সে হিসেবে তিন মাসের ব্যবধানে বিত্তশালী ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টে অর্থ না বেড়ে, উল্টো এক হাজার ৯৩৭টি হিসাব কমে গেছে।

    বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরভিত্তিক হালনাগাদ প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

    এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও অর্থনীতিবিদ সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, কোটি টাকার উপরে জমা আছে এমন হিসাব কমে যাওয়া মানে এসব অর্থ অন্য খাতে চলে যাচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে ফ্ল্যাট, প্লট ও জমিজমার দাম অনেক বেড়ে গেছে। বিত্তশালীরা ব্যাংক থেকে টাকা তুলে জমি বা ফ্ল্যাট কিনে রাখছেন। কারণ জমি বা ফ্ল্যাটের দাম সাধারণত কমে না, বাড়তেই থাকে। এছাড়া অনেকে ডলার কিনে রাখছেন।

    এছাড়া সুদহার কম এটাও একটা কারণ হতে পারে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

    প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকিং খাতে মোট আমানতকারীর সংখ্যা দাঁড়ায় ১৩ কোটি ৩৪ লাখ ৩৬ হাজার ৮৮টি। যাদের হিসাবে জমা ছিল ১৫ লাখ ৭৬ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা।

    ছোট আমানত কমেনি, কমেছে বড় বড় প্রতিষ্ঠানের। বিশেষ করে সরকারি খাতের আমানত কমে গেছে। কারণ, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাংকের জমা টাকা তুলে নিয়ে আমদানি খরচ মেটাচ্ছে।

    কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার
    ২০২২-২৩ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের (জানুয়ারি-জুন) মুদ্রানীতি ঘোষণাকালে এক প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার জানান, দেশের ব্যাংক খাতের আমানত কমেনি, উল্টো বেড়েছে। গত বছরে আমানত ৮ শতাংশ বেড়েছে, এর পুরোটাই বেসরকারি খাতের। তবে কমেছে আমানত প্রবৃদ্ধি। অর্থাৎ গত বছর আমানত যে হারে বেড়েছে এবার তার চেয়ে কম হারে বেড়েছে।

    কোটি টাকার হিসাব মানেই কোটিপতি ব্যক্তির হিসাব নয়। কারণ ব্যাংকে এক কোটি টাকার বেশি অর্থ রাখার তালিকায় ব্যক্তি ছাড়া অনেক প্রতিষ্ঠানও রয়েছে।
    কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা।

    তিনি আরও বলেন, ছোট আমানত কমেনি, কমেছে বড় বড় প্রতিষ্ঠানের। বিশেষ করে সরকারি খাতের আমানত কমে গেছে। কারণ, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাংকের জমা টাকা তুলে নিয়ে আমদানি খরচ মেটাচ্ছে।

    ব্যাংকের তারল্যসংকট সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে গভর্নর বলেন, কিছুদিন আগে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে একটা কথা প্রচার হয়েছে। ডলার সংকট হয়েছে, ব্যাংকেও টাকা নেই। তখন মানুষ লাইন দিয়ে ব্যাংক থেকে টাকা তুলেছে। তখন সব এমডিদের বলা হয়েছিল, যারা টাকা তুলতে আসবেন, তাদের দিয়ে দিতে। আমরা দেখতে চাই কত টাকা তোলা হয়। কেউ টাকা তুলতে গিয়ে ফেরত আসেননি। তারা টাকা উঠিয়ে নিয়ে বাসায় রেখেছেন। এখন আবার তা ব্যাংকে আসছে।

    ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তথ্য অনুযায়ী, এক কোটি এক টাকা থেকে পাঁচ কোটি টাকার আমানতকারীর সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৮৪ হাজার ৫০৩টি। যাদের হিসাবে জমা টাকার পরিমাণ এক লাখ ৭৪ হাজার ২৫৭ কোটি টাকা।
    কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, কোটি টাকার হিসাব মানেই কোটিপতি ব্যক্তির হিসাব নয়। কারণ ব্যাংকে এক কোটি টাকার বেশি অর্থ রাখার তালিকায় ব্যক্তি ছাড়া অনেক প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। আবার ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান কতগুলো ব্যাংক হিসাব খুলতে পারবে, তার কোনো নির্দিষ্ট সীমা নেই। এছাড়াও এক প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির একাধিক হিসাবও রয়েছে। এমনকি এর মধ্যে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার কোটি টাকার হিসাবও রয়েছে।

    ১০টি ক্যাটাগরিতে কোটি টাকার আমানতকারীদের হিসাব করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তথ্য অনুযায়ী, এক কোটি এক টাকা থেকে পাঁচ কোটি টাকার আমানতকারীর সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৮৪ হাজার ৫০৩টি। যাদের হিসাবে জমা টাকার পরিমাণ এক লাখ ৭৪ হাজার ২৫৭ কোটি টাকা। তিন মাস আগে জুনে হিসাব সংখ্যা ছিল ৮৫ হাজার ৮৪১টি। এসব হিসাবে জমা টাকার পরিমাণ এক লাখ ৭৬ হাজার ৯০৮ কোটি টাকা।

    সেপ্টেম্বরে পাঁচ কোটি থেকে ১০ কোটির মধ্যে রয়েছে ১১ হাজার ৫৪৪টি হিসাব। তাদের অ্যাকাউন্টে টাকার পরিমাণ ৮১ হাজার ৮৯৯ কোটি টাকা। জুনে ১১ হাজার ৮৬৫টি হিসাবে ছিল ৮৪ হাজার ৬৬ কোটি টাকা।

    এছাড়া ১০ কোটি এক টাকা থেকে ১৫ কোটির টাকার হিসাব রয়েছে তিন হাজার ৮০৬টি, ১৫ কোটি এক টাকা থেকে ২০ কোটির মধ্যে ১৭০০টি, ২০ কোটি এক টাকা থেকে ২৫ কোটির মধ্যে এক হাজার ১৪৭ টি, ২৫ কোটি এক টাকা থেকে ৩০ কোটির মধ্যে ৮৬০টি, ৩০ কোটি এক টাকা থেকে ৩৫ কোটি টাকার মধ্যে ৪৫৮টি এবং ৩৫ কোটি এক টাকা থেকে ৪০ কোটির মধ্যে রয়েছে ৩১৯ আমানতকারীর হিসাব।

    ৪০ কোটি এক টাকা থেকে ৫০ কোটি টাকার অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ৫২৩টি। এছাড়া ৫০ কোটি টাকার বেশি আমানত রাখা হিসাবের সংখ্যা কমে ১ হাজার ৬৬০টিতে নেমে এসেছে। এসব হিসাবে জমার পরিমাণ দুই লাখ ১৯ হাজার কোটি টাকা। গত জুনে এসব হিসাবের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৮০৫টি; যেখানে আমানত ছিল ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা।

    বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে দেশে কোটিপতি আমানতকারী ছিল ৫ জন, ১৯৭৫ সালে তা ৪৭ জনে উন্নীত হয়।

    ১৯৮০ সালে কোটিপতিদের হিসাবধারীর সংখ্যা ছিল ৯৮ টি। এরপর ১৯৯০ সালে ৯৪৩টি, ১৯৯৬ সালে ২ হাজার ৫৯৪ জন, ২০০১ সালে ৫ হাজার ১৬২টি, ২০০৬ সালে ৮ হাজার ৮৮৭টি এবং ২০০৮ সালে ছিল ১৯ হাজার ১৬৩ টি। ২০২০ সালের ডিসেম্বর শেষে তা দাঁড়ায় ৯৩ হাজার ৮৯০টিতে। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে কোটিপতি হিসাব বেড়ে দাড়ায় ১ লাখ ১৯৭৬ টিতে।

    Array
    We use all content from others website just for demo purpose. We suggest to remove all content after building your demo website. And Dont copy our content without our permission.
    আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
    এই বিভাগের আরও খবর
     
    Jugantor Logo
    ফজর ৫:০৫
    জোহর ১১:৪৬
    আসর ৪:০৮
    মাগরিব ৫:১১
    ইশা ৬:২৬
    সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১

    আর্কাইভ

    January 2023
    M T W T F S S
     1
    2345678
    9101112131415
    16171819202122
    23242526272829
    3031