সরকার ও শাসন ব্যবস্থা পরিবর্তনের লক্ষ্যে ১৪ দফা কর্মসূচি বাস্তবায়ন ও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে গণতন্ত্র মঞ্চ। বিক্ষোভ সমাবেশে গণতন্ত্র মঞ্চের শরিক দল নুরুল হক নুরের নেতৃত্বাধীন গণ অধিকার পরিষদের কেউ অংশ নেননি।
সোমবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এই জোটের বিক্ষোভ সমাবেশে অনুষ্ঠিত হয়।
বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ না নেওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নুরুল হক নুর ঢাকা পোস্টকে বলেন, কিছু বিষয় নিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের সঙ্গে আমাদের টানাপোড়ন আছে। এ কারণে আমরা যোগ দেইনি। এই বিষয়ে রাশেদ খান বিস্তারিত বলতে পারবেন।
পরে গণ অধিকার পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক রাশেদ খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত ১১ ডিসেম্বর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনের অনুষ্ঠিত গণতন্ত্র মঞ্চের গণ-অবস্থান কর্মসূচিতে নুরুল হক নুরের সরাসরি যোগ দিয়ে বক্তব্য দেওয়ার কথা ছিল। সেটা মঞ্চের অন্য নেতাদেরও জানানো হয়েছিল। আমি সেই প্রোগ্রামে দলের প্রতিনিধি হিসিবে উপস্থিত হয়ে মঞ্চের অন্য নেতাদের জানিয়েছিলামও। কিন্তু সেদিন অনেকটা তড়িঘড়ি করে প্রোগ্রাম শেষ করে দেওয়া হয়। যার ফলে নুর বক্তব্য দিতে পারেননি।
রাশেদ খান বলেন, ১১ তারিখের বিষয়টি নিয়ে আমাদের দলের বৈঠক হয়, সেখানে এই বিষয়ে সবাই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান। যার কারণে আজকের প্রোগ্রামে আমরা অংশ নেইনি। বিষয়টি আমরা মঞ্চের নেতা আ. স. ম. আব্দুর রব, মাহমুদুর রহমান মান্না ও জোনায়েদ সাকিকে জানিয়েছি। তাদের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত হবে।
বিএনপির সঙ্গে গণ অধিকার পরিষদের সুসম্পর্ক রয়েছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপির নেতা ইকবাল হাসান মাহমুদুর সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ আছে, আমরা যুগপৎ আন্দোলনেও আছি। গণতন্ত্র মঞ্চের সঙ্গেও আছি।
এদিকে আজ বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে নতুন কর্মসূচি হিসেবে আগামী ২৫ জানুয়ারি ঢাকাসহ সারাদেশে জেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করারও ঘোষণা দেয় গণতন্ত্র মঞ্চ।
বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নিয়ে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, এই সরকারের অধীনে কোনো ভোট হবে না, নির্বাচন হবে না। এরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। ১৪ বছর ধরে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে আছে। কিন্তু ভোটের মুখোমুখি হওয়ার সাহস নেই। আমরা লক্ষ্য করছি, তাদের মঞ্চ অতি দ্রুত ভেঙে পড়ছে, তাদের ক্ষমতার মসনদও ভেঙে পড়বে।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, এই সরকার বিদায় নেবে, কিন্তু তাদের ঋণের বোঝা জনগণের ওপর চাপিয়ে দেবে। তাই আমাদেরকে এই সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ গণ-আন্দোলনের জোড়ায় তৈরি করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সরকারের ভুলনীতি, আত্মঘাতী ও গণবিরোধী সিদ্ধান্তের কারণে পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সরকারকে সংলাপের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর ডাকা কর্মসূচির দিনে আওয়ামী লীগ পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দিয়ে পায়ে পাড়া দিয়ে ঝগড়া করতে চাচ্ছে। ক্ষমতা হারানোর আতংকে ভীত হয়ে প্রতিদিন উস্কানি দিচ্ছে। এটা না করে দেশের বিরাজমান সংকট উত্তরণে সরকার কীভাবে পদত্যাগ করবে সিদ্ধান্ত নেন। সংলাপের সিদ্ধান্ত নিলে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো ভেবে দেখবে, কিন্তু ২০১৮ সালের মতো লোক দেখানো সংলাপে কেউ যাবে না।
এসময় আরও বক্তব্যে রাখেন—গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়ক আবুল হোসেন রুবেল, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য মীর মোফাজ্জল হোসেন মোস্তাক, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কাওসার, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ূম ও ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুসহ আরও অনেকে।
Array