বছরের চার/পাঁচ মাসে শুধু ফুলের চারা বিক্রি করে লাখ টাকার অধিক আয় করেন দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর মমিনুল ইসলাম। আর বাঁকি সময়ে অন্যান্য চারা উৎপাদনেও অনেক টাকা আয় হয় তার।
মমিনুল ইসলাম ফুলবাড়ী উপজেলার পৌরএলাকার চকচকা গ্রামের হাইফাই মোড়স্থ্য কে.এম নার্সারির স্বত্ত্বাধিকারী।
শীতকালে ফুলের ওপর নির্ভর করলেও পাশাপাশি অন্যান্য ফলদ, বনজ ও ওষুধি গাছের চারা বিক্রি করেন সারাবছর জুড়ে। আর এই নার্সারি থেকে আয়কৃত অর্থেই নির্ভর করে তার সংসার।
ভ্যানে করে হরেক বাহারী ফুলের চারা নিয়ে উপজেলা পরিষদ রোডে ঘুরে দেখা যায় মমিনুল ইসলামকে। তিনি নিজেই নিজের চারাগুলো ভ্যানে নিয়ে খুচরা মূল্যে বিক্রি করছেন।
দেখা যায়, ভ্যানের ওপর পসরা সাজিয়েছেন বাহারী ফুলের চারা গাছ দিয়ে। লাল, নীল, সবুজ, হলুদ, গোলাপী, বেগুণী কি রং নেই সেই পসরায়। ক্রেতারা ভিড় জমাচ্ছেন সেই ভ্যানকে লক্ষ্য করে। তবে সবচেয়ে বেশি ভিড় করতে দেখা যায় নারীদেরকে।
জানা যায়, প্রতিবছর অক্টোবর মাসের প্রথমদিকে দেশি গোলাপ, বিদেশি গোলাপ, চাইনিজ গাঁদা, হাইব্রিড গাঁদা, দেশি গাঁদা, বর্ষালী গাঁদা, ডালিয়া, সূর্যমুখী, হাসনাহেনা, গন্ধরাজ, জবা, গেটফুল, চন্দ্রমল্লিকাসহ নানা জাতের ফুলগাছের চারা উৎপাদন করেন মমিনুল ইসলাম। ডিসেম্বর মাসের প্রথম থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত এসব ফুলের চারা বিক্রি হয়।
কে.এম নার্সারির স্বত্ত্বাধিকারী মমিনুল ইসলাম বলেন, আগে কৃষি কাজ করতাম। পরে নানাপ্রকার প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজ গ্রামে একটি নার্সারি গড়ে তুলি। পরে সেখানে দেশি-বিদেশিসহ নানা প্রকার ফলজ-বনজ, ওষুধি ও ফুলের চারা উৎপাদন করি। ধিরে ধিরে নার্সারির প্রসার ঘটে।
তিনি বলেন, বর্তমানে এই নার্সারি দিয়েই প্রতিবছর লাখ লাখ টাকা আয় করছি। নার্সারি থেকে বিভিন্ন খুচরা বিক্রেতারা গাছের চারা নিয়ে যান পাইকারি দামে। বর্তমানে নার্সারির বড় অংশ জুড়ে ফুলের চারায় ভরপুর। নিজেও ভ্যানে নিয়ে শহরের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে গিয়ে খুচরা মূল্যে গাছের চারাগুলো বিক্রি করছি।
ফুলের গাছের দাম নিয়ে মমিনুল ইসলাম বলেন, ফুলের গাছের চারাগুলো প্রকার ভেদে পাইকার মূল্য ৭ টাকা থেকে ১৮০ টাকা এবং খুচরা মূল্য ১০ টাকা থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। তবে খুচরা বিক্রিতে লাভ বেশি হচ্ছে। এবছর কম করে হলেও দুই থেকে আড়াই লাখ টাকার ফুলের চারা গাছ বিক্রি হবে।
এছাড়াও নার্সারিতে সারাবছরজুড়ে ফুলের পাশাপাশি মেহগনি, ইউক্যালিপটাস, আম, কাঁঠাল, লিচুসহ বিভিন্ন চারা উৎপাদন করা হয় এবং পাইকার ও খুচরা মূল্যে বিক্রি করেন বলে জানান তিনি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রুম্মান আক্তার বলেন, কৃষি অফিস থেকে সব নার্সারি মালিকদের বিভিন্ন সময় উৎসাহ ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হয়। উপজেলার কৃষি বৃক্ষমেলায় তারা নিজ নিজ স্টল নিয়ে আসেন।
Array